ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জে ব্রহ্মপুত্র নদের ভাঙন শুরু হয়েছে। ভাঙনের হুমকিতে পড়েছে নদ তীরবর্তী প্রতিরক্ষা বাঁধ, রাস্তা, ফসলি জমি ও বসতভিটা। ভাঙন রোধে দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে বিস্তীর্ণ এলাকা নদে বিলীন হতে পারে এমন আশঙ্কা এলাকাবাসীর।
স্থানীয়রা জানান, প্রতি বছর বর্ষা মৌসুম এলেই ব্রহ্মপুত্রে ভাঙন বেড়ে যায়। এতে আতঙ্কিত হয়ে পড়ে নদ তীরবর্তী এলাকার বাসিন্দারা। এ মৌসুমেও নদে ভাঙন আতঙ্কিত করে তুলেছে এলাকাবাসীকে।
ঈশ্বরগঞ্জের উচাখিলা ইউনিয়নের ভেতর দিয়ে বয়ে গেছে ব্রহ্মপুত্র নদ। প্রতিবছর নদের ভাঙনে বিলীন হয়ে যায় অনেকের ঘরবাড়ি ও ফসলি জমি। ভাঙন ঠেকাতে নদ খনন করে গতি ফেরানোর কাজ চললেও মরিচারচর গ্রামের উত্তরপাড়া, নতুনচর, বটতলা, মরিচারচর মুন্সীবাড়ি, দপ্তর, গাংগিনাপাড়, নামাপাড়া এলাকায় মানুষের ফসলি জমি ব্রহ্মপুত্র গ্রাস করে নিচ্ছে। কিছু দিন ধরে মরিচারচর উত্তরপাড়া এলাকায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের বাঁধের উজানে ভাঙন শুরু হয়েছে। এতে মরিচারচর উত্তরপাড়া ও নতুনচর এলাকায় অন্তত অর্ধশত পরিবার ঝুঁকিতে রয়েছে।
নদ তীরবর্তী বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ব্রহ্মপুত্র নদে ভাঙন ঠেকাতে ২০১৬ পানি উন্নয়ন বোর্ডের উদ্যোগে নদ তীরবর্তী মরিচারচর উত্তরপাড়া এলাকায় প্রতিরক্ষা বাঁধ ২০১৬ সালে নির্মাণ করা হয়। কিন্তু বাঁধ নির্মাণের পরের বছরই ভাঙন দেখা দেয়। বিলীন হয়ে যায় বাঁধের বিভিন্ন অংশ। পরে কিছু মেরামত করে বাঁধটি টেকানোর উদ্যোগ নেওয়া হলেও বাঁধের বিভিন্ন অংশে আবারও ভাঙন দেখা দিয়েছে। এতে ঝুঁকিতে রয়েছে প্রতিরক্ষা বাঁধটি। এছাড়া নদের ভাঙনের কবলে পড়েছে উচাখিলা-মরিচারচর সড়কটিও।
মরিচারচর নতুনচর গ্রামের বাসিন্দা শামিউল মিয়া বলেন, ‘নদে পানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ভাঙন দেখা দেয়। আমাদের এলাকায় ১৫টি পরিবার ভাঙনের কবলে পড়তে যাচ্ছে।’
স্থানীয় বাসিন্দা শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘নদের ভাঙনে প্রতিরক্ষা বাঁধ ভাঙছে। বাঁধের উজানে প্রায় দুই কিলোমিটার এলাকাজুড়ে নদ ভেঙে প্রায় ৫০ মিটার ভেতরে প্রবেশ করেছে ব্রহ্মপুত্র। আমাদের দাবি ভাঙন রোধ করার পাশাপাশি নদ তীরবর্তী মানুষের ঘরবাড়ি ও ফসলি জমি রক্ষায় যেন দ্রুত উদ্যোগ নেওয়া হয়।’
উচাখিলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘পানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে নদে ভাঙন দেখা দিয়েছে। এলাকায় গিয়ে ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা প্রস্তুত করা হবে।’
ময়মনসিংহ পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-সহকারী প্রকৌশলী ইউনুস আলী বলেন, ‘এরইমধ্যে ১০০ মিটার বাঁধ ও উজানের ২০০ মিটার এলাকায় ভাঙনের প্রতিবেদন পাঠিয়েছি। ফের এলাকাটি পরিদর্শন করে ক্ষতির মাত্রা নির্ধারণ করে কর্তৃপক্ষের কাছে প্রতিবেদন পাঠানো হবে।’