কখনো সৃজনশীল শিক্ষার্থীদের হাতে তৈরি ক্রাফট আবার কখনো সুন্দর সুন্দর আর্ট, কখনোবা উত্তরাঞ্চলের শিক্ষার্থীদের নিজস্ব বাগানের মৌসুমি ফল আবার কখনো দক্ষিণাঞ্চলের শিক্ষার্থীদের পারিবারিকভাবে নদী থেকে আহরিত মৎস্য সম্পদ। এসব কিছুর এক বিরাট প্রচারণা চোখে পড়বে একটি ফেসবুক প্লাটফর্মে। আর এই প্লাটফর্মটিই হলো 'ছয়মিশালী'।
ছয়মিশালী'র ফেসবুক পেইজ ঘুরে দেখা যায় এ যেন শিক্ষার্থী উদ্যোক্তাদের এক বিশাল বাজার। শিক্ষার্থীদের সংযুক্ত থাকা বিভিন্ন ধরনের পণ্যের বিশাল সমাহার। নিয়মিত চলছে প্রচারণা, দেয়া হচ্ছে পণ্যের আপডেট এবং চলছে ডেলিভারি।
কথা হয় সংগঠনটির সহপ্রতিষ্ঠাতা এবং পরিকল্পনা বিভাগের প্রধান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইন্সটিটিউটের বিশেষ শিক্ষা বিভাগের শিক্ষার্থী জয়নুল এ ফাহিমের সাথে। তিনি বলেন, 'বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হিসেবে সবাই উদ্যোক্তা হওয়ার স্বপ্ন দেখে। আমরা ব্যাপারটিকে অন্যভাবে দেখার চেষ্টা করেছি। কারো উদ্যোক্তা হওয়ার রাস্তায় প্রথম বাধা হয়ে দাঁড়ায় একটি নির্ভরযোগ্য প্লাটফর্মের অভাব। আমরা চেয়েছি এমন একটি প্লাটফর্ম তৈরি করতে, যার উপর নির্ভর করে দাঁড়াতে পারবে হাজার হাজার শিক্ষার্থী উদ্যোক্তা। এই আস্থার প্লাটফর্মটিই হলো ছয়মিশালী'।
মূলত দেশের বিভিন্ন প্রান্তের শিক্ষার্থীদের একই ছাতার নিচে নিয়ে এসে সকলের পণ্য সকলের কাছে পৌঁছে দিতেই কাজ করছে ছয়মিশালী। শিক্ষার্থীদের তৈরিকৃত বিভিন্ন আর্ট এবং ক্রাফট থেকে শুরু করে, উত্তরাঞ্চলীয় শিক্ষার্থীদের পারিবারিকভাবে উৎপাদিত মৌসুমি ফল, সবজি এবং দক্ষিণাঞ্চলীয় শিক্ষার্থীদের পারিবারিকভাবে আহরিত মৎস্য সম্পদ সবকিছুরই ব্রান্ডিং এবং প্রোমোশন করে ছয়মিশালী। শিক্ষার্থীদের এসব পণ্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের ভিত্তিতে দেশের সকল মানুষের নিকট পৌঁছে দিতেই এই প্রচেষ্টা।
ছয়মিশালী'র অপর সহ-প্রতিষ্ঠাতা একই বিভাগের রিফাত দিগন্ত বলেন, 'সাধারণত ফেসবুকে প্রোমোশন এবং বুস্টিং-এ একটি বড় অংকের খরচ গুনতে হয়। কিন্তু ছয়মিশালী এই অর্থ ছাড়াই হাজার হাজার মানুষের কাছে পৌঁছে দেয় শিক্ষার্থী উদ্যোক্তাদের পণ্য। এ ক্ষেত্রে ছয়মিশালী খরচবিহীন একটি ভিন্ন পদ্ধতি অবলম্বন করে'।
দেশের মোট ৬২টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের মধ্যে ছয়মিশালী গড়ে তুলেছে এক বিশাল নেটওয়ার্ক। এই নেটওয়ার্কে যুক্ত থাকা শিক্ষার্থীরা সকল পণ্য বিনা পারিশ্রমিকে নিজের টাইমলাইনে শেয়ার করে থাকে। যার মাধ্যমে বুস্টিং ছাড়াই একটি বিরাট প্রচারণা চলে। আবার এসকল প্রোমোশনে অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীদের যেকোনো পণ্য ১০% মূল্যছাড়ে ক্রয় করার সুযোগ দিচ্ছে ছয়মিশালী।
বর্তমানে ফেসবুক পেইজ এবং গ্রুপের মাধ্যমে এই কার্যক্রম চললেও খুব শিগগির ছয়মিশালী'র মোবাইল অ্যাপস নিয়ে আসছে বলে জানান উদ্যোক্তারা। তারা বলেন, সকল শিক্ষার্থীই যেনো তার নিজের মনের উদ্যোক্তা হওয়ার স্বপ্নকে নির্ভয়ে বিকশিত করতে পারে সেই লক্ষ্যে কাজ করছে ছয়মিশালী। ছয়মিশালীর তিন উদ্যোক্তার আরেকজন হলেন একই বিভাগের তাইয়েব ইসলাম।