আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, অত্যন্ত উদ্বেগের সঙ্গে আমরা লক্ষ্য করছি করোনা সংক্রমণ এবং বিস্তার এখন উচ্চমাত্রায় পৌঁছে গেছে। প্রতিদিনই সংক্রমণ ও মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাও দক্ষিণ এশিয়া ও আমেরিকায় নতুন করে সংক্রমণে উদ্বেগ প্রকাশ করে সর্তক করেছেন।
বুধবার (১৭ জুন) তার সরকারি বাসভবন থেকে পাঠানো এক ভিডিও ব্রিফিংয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, বিএনপি সংকটের শুরু থেকে ভুল ধরিয়ে দেওয়ার নামে সরকারের অন্ধ সমালোচনা আর নেতিবাচক বক্তব্যের চর্বিত চর্বন করে যাচ্ছে। তারা দেশ, জাতি তথা অসহায় মানুষের পাশে না দাঁড়িয়ে মিথ্যাচার, গুজব ছড়ানোকেই পবিত্র দায়িত্ব হিসেবে মেনে নিয়েছে। এই মিথ্যাচার ফ্রন্টলাইনে কর্মরতদের মনোবল নষ্ট করার অপপ্রয়াস।
বিএনপি নেতাদের উদ্দেশে কাদের আরও বলেন, করোনার মতো বৈশ্বিক এ মহামারি মোকাবিলায় শেখ হাসিনা সরকারের উদ্যোগগুলো বিএনপির চোখে পড়ে না। তাদের বলবো ধুলোজমা মরচে ধরা চশমা সরিয়ে এ সংকটে মানুষের পাশে দাঁড়াতে এবং সরকারের কার্যক্রমে সহযোগিতা করুন।
কাদের বলেন, চীনে নতুন করে সংক্রমণ দেখা দেয়েছি। এ বাস্তবতায় নিজের বিবেক নিজের পাহারাদার না হলে এ উদাসীনতা থেকে আমাদের কে মুক্ত করবে?
তিনি বলেন, এখনো ভিড়ের জটলা বাজারে, কর্মস্থলে, অনেকে মাস্ক পরেন না সংক্রমণ গোপন করে চলাফেরা করছেন। এ শৈথিল্যের ভাব, অবহেলা সর্বগ্রাসী করোনার কাছে নিজেকে এবং আমাদের আশপাশের সবাইকে নিয়ে আত্মসমর্পণের শামিল।
ওবায়দুল কাদের বলেন, সরকার সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। একদিকে জীবন অন্য দিকে কর্ম। একদিকে জননিরাপত্তা অপর দিকে অর্থনীতির ভারসাম্য, একদিকে বেঁচে থাকার জন্য পরিকল্পনা, অপর দিকে দেশ বিদেশের সঙ্গে সংযোগ রক্ষা ।
সেতুমন্ত্রী বলেন, করোনা সংক্রমণ রোধে প্রয়োজন সকলের সহযোগিতা, আমরা সকলের সহযোগিতা পাচ্ছিও। কিন্তু কিছু কিছু মতলবি মহল অবহেলা করছে, অসযোগিতা করছে এবং অন্ধকারের পথ বেছে নিচ্ছে। নতুন করে সংক্রমিত এলাকায় ম্যাপিং এর মাধ্যমে রেড, ইয়েলো এবং গ্রিন জোন করতে যাচ্ছে। সঠিক সমন্বয়ের ওপর নির্ভর করবে কার্যকর ফল। আর অবহেলার সময় নেই। সরকারের নতুন সিদ্ধান্ত দ্রুত কার্যকরভাবে বাস্তবায়নের মাধ্যমে সংক্রমণ রোধে সকলের সহযোগিতা কামনা করেন তিনি। রাজধানী থেকে তৃণমূল পর্যন্ত গড়ে তুলতে হবে কার্যকর সমন্বয়। গড়ে তুলতে হবে সুরক্ষার দূরভেদ্য প্রাচীর।
তিনি আরও বলেন,সরকার জোন ভিত্তিক লকডাউন কার্যকর করার পাশাপাশি চিকিৎসা সরঞ্জাম বৃদ্ধি, টেস্টিং সেন্টারের সংখ্যা বাড়ানোর উদ্যোগ নিয়েছে এবং সবধরনের সম্ভাবনাকে কাজে লাগানোর চেষ্টা করছে।
নমুনা পরীক্ষা নিয়ে একটি অসাধু চক্র সক্রিয় হয়েছে, তাদের এই অপপ্রয়াসের বিরুদ্ধে শুরুতেই কঠোর হাতে নিয়ন্ত্রণ করতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রতি আহ্বান জানান ওবায়দুল কাদের। অসাধু চক্র করোনা সংক্রমিত মানুষের মাঝে বিভ্রান্তির সৃষ্টির অপপ্রয়াস চালাচ্ছে।
সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী আবারও বলেন, দুর্নীতি ও অনিয়মের বিরুদ্ধে শেখ হাসিনা সরকারের অবস্থান স্পষ্ট। অনিয়মকারীদের দলীয় পরিচয় যাই হোক না কেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে কোনো প্রশ্রয় নেই। ত্রাণ নিয়ে অনিয়মের অভিযোগে যেমনি কঠোরভাবে শাস্তি দেওয়া হয়েছে তেমনি চিকিৎসা সরঞ্জাম অনিয়মের বিরুদ্ধেও সরকার শূন্য সহিষ্ণুতা বজায় রাখবে।