বন্যার পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় কয়েক জায়গায় সড়ক ও রেলযোগাযোগ বন্ধ হয়ে পড়ায় অসহনীয় দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে জেলার ৫২ ইউনিয়নের সাড়ে চার লক্ষাধিক বানভাসিদের।
জানা যায়, বাড়ি-ঘরে পানি ঢুকে পানিবন্দি মানুষ পরিবার পরিজন ও গৃহপালিত গরু ছাগল নিয়ে পড়েছেন চরম বিপাকে। তাদের মধ্যে বিশুদ্ধ পানি, শুকনো খাবার এবং গো-খাদ্যের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। বাড়ি-ঘরে পানি ঢুকে পড়ায় অনেক পরিবার বাঁধে নিরাপদ আশ্রয় নিচ্ছে।
গত ২৪ ঘণ্টায় জামালপুরের বাহাদুরাবাদ ঘাট পয়েন্টে যমুনা নদীর পানি বেড়ে বিপৎসীমার ১২৮ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। বুধবার (১৫ জুলাই) রাত ১০টার দিকে জামালপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) পানি পরিমাপক (গেজ রিডার) আব্দুল মান্নান বার্তা২৪.কমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। বানভাসিদের দুর্ভোগ কমাতে জেলা প্রশাসন ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রম অব্যাহত রাখলেও চাহিদার তুলনায় ত্রাণের পরিমাণ অপ্রতুল বলে দাবি করছে জন প্রতিনিধিরা।
জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জ রেলওয়ে স্টেশনের রেললাইন বন্যার পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় জামালপুর-দেওয়ানগঞ্জ রুটে ট্রেন চলাচল বন্ধ ঘোষণা করেছে কর্তৃপক্ষ। এতে বিপাকে পড়েছে ট্রেনের যাত্রীরা। বুধবার (১৫ জুলাই) বিকেলে বন্যা পানির প্রবল স্রোতে মাদারগঞ্জ উপজেলার মহিষবাথান-মাহমুদপুর বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের ৫০ মিটার অংশ ভেঙে গেছে। বাঁধ ভাঙায় ১০টি গ্রাম বন্যার পানিতে প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
এ ব্যাপারে মাদারগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম বাঁধ ভাঙার বিষয়টি বার্তা২৪.কমকে নিশ্চিত করে বলেন, বাঁধের ভাঙা অংশ দ্রুত মেরামতের জন্য স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানকে বলা হয়েছে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণের উপ-পরিচালক মো.আমিনুল ইসলাম বার্তা২৪.কমকে বলেন, বন্যার পানিতে ৭৩৯ হেক্টর জমির আমন বীজতলা, ১৬ হাজার ৬৬ হেক্টর জমির আউশ ধান এবং ২১ হাজার ২৭ হেক্টর জমির পাট তলিয়ে গেছে।
জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ আবু সাঈদ বার্তা২৪.কমকে বলেন, যমুনা নদীর পানি বৃদ্ধির হার তুলনামূলকভাবে কম। তাই আশা করছি যমুনার পানি কিছুটা কমার সম্ভাবনা রয়েছে। আগামী ২৪ ঘণ্টার ভেতর যমুনা নদীর পানি বৃদ্ধি বা কমার বিষয়টির সার্বিক ধারণা পাওয়া যাবে বলে জানান তিনি।
জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মো. নায়েব আলী বার্তা২৪.কমকে বলেন, জেলায় বন্যা কবলিত এলাকায় এখন পর্যন্ত ৩১০ মেক্ট্রিক টক জিআর চাল ও নগদ ১২ লাখ ৫০ হাজার টাকা এবং শুকনো খাবার ৪ হাজার প্যাকেট এবং গো-খাদ্য বাবদ দুই লাখ টাকা বিতরণ করা হচ্ছে।