কোনো কাজকর্ম না করায় প্রতিনিয়ত তাচ্ছিল্যের সাথে স্বামী আব্দুল জব্বারকে মারধর করতেন গৃহবধূ স্মৃতি খাতুন (২৭)। পাবনার ঈশ্বরদী ইপিজেডের একটি বেভারেজ কোম্পানিতে কাজ করে সংসার চালাতেন স্মৃতি। পারিবারিক অভাব-অনটনসহ নানা কারণে স্বামী জব্বারকে কঠোর ভৎসনা করতেন তিনি। এই ভৎসনা জব্বারকে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত করে তুলে। এসব যন্ত্রণা থেকে চিরতরে মুক্তি পাওয়ার জন্য খাবার স্যালাইনে ঘুমের ঔষধ মিশিয়ে অচেতনের পর শ্বাসরোধ করে স্ত্রীকে হত্যা করেন স্বামী জব্বার।
বৃহস্পতিবার (২৩ জুলাই) দুপুরে পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে এক প্রেস বিফ্রিংয়ে লালপুর উপজেলার চাঞ্চল্যকর গৃহবধূ স্মৃতি খাতুনের হত্যার রহস্য উন্মোচনকালে এসব তথ্য জানান পুলিশ সুপার লিটন কুমার সাহা।
গত ২১ জুলাই অভিযান চালিয়ে লালপুর উপজেলার ভাদুর বটতলা এলাকা থেকে ঘাতক আব্দুল জব্বারকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এই ঘটনায় আব্দুল জব্বার আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। আব্দুল জব্বার লালপুর উপজেলার মোহরকয়া গ্রামের ইসাহাক প্রামানিক ওরফে ইমরাজ আলীর ছেলে।
পুলিশ সুপার বলেন, 'পারিবারিক বিভিন্ন কারণে স্বামী জব্বারের সাথে স্ত্রী স্মৃতি খাতুনের কলহ লেগেই থাকতো। কথা ও আচরণে পেরে না ওঠায় প্রায়ই জব্বারকে মারধর করতো স্মৃতি। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে স্মৃতিকে হত্যার পরিকল্পনা করে জব্বার। পরিকল্পনা অনুযায়ী গত ১৬ জুলাই রাতে স্ত্রী স্মৃতি খাতুন অসুস্থবোধ করলে তাকে স্যালাইন পানির সাথে ১০টি ঘুমের বড়ি শুড়া করে খাওয়ায় স্বামী জব্বার। কয়েক ঘণ্টা পর স্মৃতি পুরোপুরি অচেতন হলে বালিশ চাপা দিয়ে তাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে জব্বার। হত্যার পর মরদেহ বাড়ির পাশে পুকুরে ফেলে দেয় সে। পরদিন দুপুরে পুকুর থেকে স্মৃতির মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় ওইদিন স্মৃতির পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় মামলা দায়ের করা হলে গত ২১ জুলাই অভিযান চালিয়ে লালপুর উপজেলার ভাদুর বটতলা এলাকা থেকে আব্দুল জব্বারকে গ্রেফতার করা হয়।'
প্রেস বিফ্রিংয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তারেক যুবায়ের, মীর আসাদুজ্জামান, গোয়েন্দা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ আনারুল ইসলাম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।