চাঁপাইনবাবগঞ্জের হাটগুলোতে প্রতিদিন বেচা-কেনা হয় হাজার হাজার গরু। এসব গরু কিনে নেন দেশের বিভিন্ন জেলার ব্যাপারীরা। আবার স্থানীয় ব্যবসায়ীরাও দেশের অন্য হাটগুলোতে গরু পাঠিয়ে থাকেন। তবে পরিবহনের সময় এসব গরুর চোখে-মুখে মরিচের গুঁড়া ও গুল ছিঁটানো হচ্ছে।
গরু পরিবহনের সময় অসুস্থ বা দুর্বল না হওয়ার জন্য মরিচের গুঁড়া ব্যবহার করা হয় বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট একাধিক ব্যক্তি।
শনিবার (২৫ জুলাই) বিকেলে চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার তর্ত্বিপুর গরুর হাটে গিয়ে কথা হয় বেশ কয়েকজন ব্যাপারীর সঙ্গে। ফেনী থেকে গরু কিনতে আসা ব্যাপারী সেরাজুল ইসলাম জানান, তিনি বর্তমান ঈদ মৌসুমে চাঁপাইনবাবগঞ্জের বিভিন্ন হাট হতে প্রায় তিন শতাধিক গরু কিনে ফেনীসহ দেশের বিভিন্নস্থানে পাঠিয়েছেন। পরিবহনে গুরুর চোখে, মুখে ও কানে ব্যবহার করা হয়েছে শুকনো মরিচের গুঁড়া।
তিনি আরও জানান, এ পদ্ধতিতে গরু বহন করলে গাড়ির মধ্যে শুয়ে পড়ে না, পুরো পথ দাঁড়িয়ে থাকে। ফলে অসুস্থ হওয়ার সম্ভাবনা কম থাকে। এছাড়া স্বাভাবিকভাবে গরু পরিবহন করলে ট্রাকের মধ্যে ক্লান্ত হয়ে শুয়ে যায়। এ সময় অন্য গরুগুলো শুয়ে থাকা গরুর উপর উঠে তার ক্ষতি করতে পারে।
গরুর সঙ্গে কুমিল্লা যাওয়া (স্কট) শ্রমিক মনাকষার সেলিম জানান, ট্রাকে যখন গরু বোঝাই করা হয় তার পরেই ব্যবহার করা হয় মরিচের গুঁড়া। গন্তব্যে পৌঁছানোর আগ পর্যন্ত প্রতিটি গরুর চোখে, মুখে ও নাকে একাধিকবার মরিচের গুঁড়া ব্যবহার করা হয়।
নাম না প্রকাশ করার শর্তে গোদাগাড়ীর একজন ট্রাক চালক বলেন, ‘গরুর সঙ্গে যাওয়া (স্কট) শ্রমিক সারা রাস্তায় গরুর চোখে মুখে নানান ধরনের জ্বলন্ত কেমিক্যাল ব্যবহার করে। বিশেষ করে মানুষের ব্যবহার করা গুল ও মরিচের গুঁড়া নিয়মিত ব্যবহার করা হয়।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডা. মোস্তাফিজুর রহমান গরুর চোখে-মুখে মরিচের গুঁড়া এবং গুল ব্যবহারের বিষয়টি অমানবিক জানিয়ে দ্রুতই ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দেন।
তিনি বলেন, ‘আগামী রোববার থেকে জেলার সব প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তাদের দ্রুত ম্যাসেজ দিয়ে অসাধু গরু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ম্যাসেজ পাঠানো হবে।’