কোনো সাময়িক সমঝোতার ভিত্তিতে বিএনপির পক্ষ থেকে কেউ যেন মধ্যবর্তী নির্বাচনের টোপ না গিলে সেজন্য বিএনপির নীতিনির্ধারণী ফোরামের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন দলটির যুগ্ম মহাসচিব মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল।
মঙ্গলবার (২৪ নভেম্বর) নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের নিচে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ৫৬তম জন্মদিন উপলক্ষে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ শ্রমিক দল আয়োজিত এক দোয়া ও মিলাদ মাহফিলে অংশ নিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
আলাল বলেন, কোনো প্রকার মিথ্যা বাণী বা আশায় আশান্বিত হয়ে মধ্যবর্তী নির্বাচনের টোপ আমাদের মাঝে কেউ যেন গ্রহণ করতে না পারে সেই বিষয়টিতে আমাদের সচেষ্ট থাকতে হবে। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থেকে অথবা প্রশাসন বা নির্বাচন কমিশন এমন অবস্থায় আছে যেখানে আওয়ামী লীগ প্রভাব বিস্তার করতে পারে, এমন পরিবেশে কোনো জাতীয় নির্বাচনে অংশগ্রহণ করা ঠিক হবে না। কারণ আওয়ামী লীগের জন্মের সাথে এই ইতিহাস যায় না। আর তারা কেনো এটা করতে যাবেন। এই সৎ সাহসী বেগম খালেদা জিয়া আছে। তিনি ১৯৯১ সালে এক অধিবেশনে তত্ত্বাবধায়ক সরকার আইন পাস করে নিজেই ক্ষমতা ছেড়ে দিয়েছেন। এটা বেগম জিয়ার পক্ষে সম্ভব তারেক রহমানের পক্ষে সম্ভব। কিন্তু আওয়ামী লীগের পক্ষে সম্ভব না। কারণ তাদের নেতৃত্বের ধাপ এখানেই শেষ। প্রধানমন্ত্রীর পর তাদের নেতৃত্বে কে সেটা তারাও জানেন না আর দেশের জনগণও জানেন না। কিন্তু আমরা জানি বেগম খালেদা জিয়ার পর কে। এই যে পার্থক্য এটাকে নানা প্রতারণার মধ্য দিয়ে একটা জায়গায় নিয়ে যাওয়ার কিছু অপচেষ্টা চলছে। তার আভাস আমরা পাচ্ছি।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের জন্মের পর থেকে নিরপেক্ষ সুষ্ঠু নির্বাচন আজ অব্দি বিপরীতমুখী অবস্থান করছে। ১৯৭৩ সনে আওয়ামী লীগ যখন ক্ষমতায় তখন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সকল ব্যালট বাক্স ছিনতাই হয়েছিল। এর আগে পাকিস্তান বা বাংলাদেশের মানুষ দেখেনি কলেজ বা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্র সংসদ নির্বাচনে ব্যালট বাক্স ছিনতাই হয়। আওয়ামী লীগের লোকেরা তাই করেছে।
বিএনপি যুগ্ম মহাসচিব বলেন, আওয়ামী লীগের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা আবুল মনসুর আহমেদ দুঃখ করে তার বইয়ের মধ্যে লিখেছেন, আমরা এতো করে বুঝালাম মুজিব ভাই কাজটা ঠিক হচ্ছে না, আপনি এতো জনপ্রিয়, আওয়ামী লীগ এতো জনপ্রিয় রাজনৈতিক দল, সম্পূর্ণ নিরপেক্ষ নির্বাচন হলে আপনি ক্ষমতায় থাকবেন। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকবে। তারপরও জোর করে সারা বাংলাদেশে ব্যালট বাক্স ছিনতাই করে হেলিকপ্টার পাঠিয়ে ঢাকায় ভোট ভর্তি ব্যালট বাক্স এনে আওয়ামী লীগের প্রার্থীদের বিজয়ী ঘোষণা করা হলো। মাত্র ৭টি আসন দেওয়া হল বিরোধী দলকে। তিনি সেদিন লিখেছিলেন, ১৯৭৩ সালে যেখানে অন্য কোনো দলের ক্ষমতায় আসার কোনো আভাস ছিল না। তারপরও ছোট্ট বিরোধী দলকে যেখানে আওয়ামী লীগ সহ্য করতে পারেনি। এটা তাদের সুদূরপ্রসারী একটি পরিকল্পনার অংশ। এসময় আলাল বলেন, আওয়ামী লীগের এসব অপকর্ম ও গণতন্ত্র বিরোধী অবস্থানের কারণে আওয়ামী লীগ এর মত একটি বর্ষীয়ান রাজনৈতিক দলের চাইতে জিয়াউর রহমান, বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের তিন প্রজন্মের ৪২ বছরের রাজনৈতিক দল আজকে অনেক বেশি জনপ্রিয়তায় অবস্থান করছে।
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ শ্রমিক দলের সভাপতি কাজী মো. আমির খসরুর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক মাহবুব আলম বাদলের সঞ্চালনায় দোয়া মাহফিলে আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, হাবিব উন নবী খান সোহেল, সাংগঠনিক সম্পাদক ও দফতরের চলতি দায়িত্বে থাকা সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, শ্রমিক দলের কেন্দ্রীয় সভাপতি আনোয়ার হোসাইন, দক্ষিণ শ্রমিক দলের সিনিয়র সহ সভাপতি সুমন ভূঁইয়া প্রমুখ।