'সরকার ক্রমশ গণশত্রুতে পরিণত হয়েছে'

বিএনপি, রাজনীতি

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা | 2023-08-24 08:26:11

সরকার ক্রমশ গণশত্রুতে পরিণত হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রহুল কবির রিজভী।

সরকারের সমালোচনা করে তিনি বলেন, সরকার উপলব্ধি করছে তাদের পায়ের তলে মাটি নেই। ক্রমশ: গণশত্রুতে পরিণত হয়েছে তারা। যুগে যুগে আস্তাকুঁড়ে নিক্ষিপ্ত পতিত স্বৈরশাসকদের প্রেতাত্মা ভর করেছে এই ভোট ডাকাত সরকারের ঘাড়ে। শেখ হাসিনা গায়ের জোরে আজীবন ক্ষমতায় থাকার গভীর দুরভীসন্ধি পূর্ণ করতে চাচ্ছেন। এখন তার দলের নেতারা প্রকাশ্যে তাদের নেত্রীর অভিলাষের কথা বলে বেড়াচ্ছেন।

মঙ্গলবার (১৫ ডিসেম্বর) রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

রিজভী বলেন, ভোটারবিহীনভাবে আজীবন ক্ষমতায় থাকার জন্য একদলীয় কর্তৃত্ববাদী বাকশালকেই তারা রাজনৈতিক দর্শণ হিসেবে মনেপ্রাণে গ্রহণ করেছে। তাই স্বাধীনতার অব্যবহিত পরেই আজীবন সম্রাট হওয়ার খায়েশে বাকশাল কায়েম করা হয়েছিল কিন্তু তা ব্যর্থ হয়ে যায়। কিন্তু শেখ হাসিনা ব্যর্থ হতে চান না, আমৃত্যু রাষ্ট্রক্ষমতা দখলে রাখার হীন মনোবাসনা পূর্ণ করার জন্য তিনি এখন বাংলাদেশে ‘মাদার অব অটোক্র্যাটে’ পরিণত হয়েছেন। আর সেজন্য সবচেয়ে জনপ্রিয় নেত্রী, মাদার অব ডেমোক্রেসি দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে সুপরিকল্পিতভাবে নিঃশেষ করার জন্য বন্দী করে রাখা হয়েছে। একটি পাপেট তথাকথিত নির্বাচন কমিশন তৈরী করে তাদের দিয়ে ভোটের নামে রং-তামাশার নির্বাচন হচ্ছে।

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ এতো দুর্নীতি করেছে, এতো খুন-গুম-হত্যা-অপকর্ম করেছে যে তারা ক্ষমতা ছাড়তে ভয় পাচ্ছে। আতংকে প্রহর কাটছে তাদের। ক্ষমতা থেকে চলে গেলে এ দেশের মানুষ তাদের বিচার করবে। এই বিচারের ভয়ে কৌশল করে চিরদিন ক্ষমতায় থাকার স্বপ্ন দেখছে। এছাড়া ক্ষমতা থেকে চলে গেলে লুটপাট-অপকর্মের মচ্ছব বন্ধ হয়ে যাবে। ভাগে-যোগে দেশটাকে লুটেপুটে নিয়ে কানাডায় বেগমপাড়া, আমেরিকায় সাহেবপল্লী, মালয়েশিয়ায় সেকেন্ড হোম, লন্ডন, ইউরোপ, দুবাইতে তাদের অর্থ পাচার বন্ধ হয়ে যাবে। ওরা জানে শেখ হাসিনা যতদিন থাকবে ততদিন অবাধে লুটপাট করা যাবে। তাই যেকোন উপায়ে শেখ হাসিনাকে ক্ষমতায় রাখতে চায়।

বিএনপি এ নেতা বলেন, সংবিধানের কথা বলে জনপ্রশাসনের কর্মকর্তা-কর্মচারী, পুলিশ, এমনকি বিচারকরাও রাজপথে নেমে এসেছেন। তারা রীতিমতো ব্যানার হাতে মিছিল শ্লোগান দিয়ে রাজনীতিবিদদের মতো সভা সমাবেশ করেছেন। বিচারক ও পুলিশ বাহিনী মানববন্ধন করেছে, যা দেশের ইতিহাসে নজীরবিহীন ঘটনা। এধরণের ঘটনা দেশের জন্য অশনি সংকেত।

তিনি আরো বলেন, রাজপথে সরকার ও প্রশাসনের কর্মকর্তাদের এমন ভূমিকা দেখে জনগণ ভীত-সন্ত্রস্ত, আতংকিত ও ক্ষুব্ধ। আইন শৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্ব পুলিশসহ আইন প্রয়োগকারী সংস্থার, বিচারকদের অন্যকোন চেতনা থাকতে পারে না। তাঁদের একটি মাত্র চেতনাই থাকা দরকার। সেটি হলো ন্যায়বিচার। নাগরিক সমাজে বিবদমান নানা পক্ষের মানুষ বিবাদ মিমাংসার জন্য আদালত ও প্রশাসনেরই শরনাপন্ন হয়। তারাই যদি কোন এক পক্ষ নিয়ে রাস্তায় নামে তাহলে অন্য পক্ষের কথা কে শুনবে? তাহলে ন্যায়বিচার বলে তো কিছু থাকবে না।একদলীয় শাসনে যেমন একদলীয় চেতনাই রাষ্ট্রের সবখানে প্রতিফলিত হয়, সেটিরই প্রতিচ্ছবি দেখা গেল বিচারক ও প্রশাসনের ব্যক্তিদের রাজপথে নামার মধ্য দিয়ে।

এ সম্পর্কিত আরও খবর