বর্তমান সরকার বৈষম্যে নোবেল পাওয়ার যোগ্য: জিএম কাদের
বৈষম্য তৈরি করার জন্য যদি নোবেল প্রাইজ থাকতো, তাহলে বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার সেই প্রাইজ পেত। কারণ বাংলাদেশের ইতিহাসে অতীতে কোনো সময় এত বেশি বৈষম্য ছিল না বলে মন্তব্য করেছেন বিরোধীদলীয় নেতা ও জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদের।
শনিবার (১১ মে) জাতীয় পার্টির বনানী কার্যালয়ে ঢাকা মহানগর উত্তর জাতীয় পার্টি আয়োজিত মতবিনিময় সভায় তিনি এমন মন্তব্য করেন।
জিএম কাদের বলেন, আমরা চাই শোষণ ও বৈষম্যমুক্ত সমাজ। যারা বৈষম্য সৃষ্টি করছেন, আমরা চাই তারাও নিপাত যাক। যারা সরকারি দল করছেন, তারা সব ধরনের নিয়ম-নীতি ও আইনের ঊর্ধ্বে। সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা নিচ্ছেন এবং তারা একটি শক্তিশালী গোষ্ঠী তৈরি করেছেন। সেটা রাজনৈতিক দল হিসেবে আমার মনে হয় না, একটি শক্তিশালী গোষ্ঠী, সংঘবদ্ধ দল জনগণের কাঁধে চেপে বসেছে।
তিনি বলেন, এমন কোনো বিষয় নেই যেখানে বর্তমান সরকার বৈষম্য সৃষ্টি করছেন না। চাকরি, ব্যবসা-বাণিজ্য যেখানে যাবেন! প্রথম কথা হলো আপনি সরকারি দলের সদস্য কি না। তারপর দ্বিতীয় কথা হলো, আপনার পরিবারের কেউ সরকারি দলের বাইরে অন্য কোনো দল করে কি না, যদি করে তাহলে আপনি কোনো সুযোগ-সুবিধা পাবেন না। যে রাষ্ট্রের জন্য মানুষ জীবন দিয়েছে, রক্ত দিয়েছে, ইজ্জত দিয়েছে, কীসের জন্য? আমার দেশ পাওয়ার জন্য। সেই দেশ আমার থেকে চলে গেল একটি গোষ্ঠীর হাতে এবং তারা এটার মালিকানা, তারা কাঁধে চেপে বসেছে।
তিনি আরও বলেন, যারা আওয়ামী লীগের বাইরে তারা অবাঞ্ছিত। থাকলে থাকেন, দাস হিসেবে থাকবেন। না থাকলে যান। দেশ তাদের কোনো কিছুতে কোনো কিছু বলা নেই। কথা বলার কোনো অবস্থান নেই মানুষের। কাজেই এই অবস্থা থেকে উত্তরণ প্রয়োজন। উত্তরণ খুব কঠিন।
জিএম কাদের বলেন, আমাদের কিছু জায়গা দিয়েছে, এটাই হলো আমাদের সর্বনাশ। কারণ আমাদের যারা কিছু সুযোগ-সুবিধা পাচ্ছেন, উনারা এই সুযোগ-সুবিধা ভোগ করতে ইচ্ছুক। তারা কঠিন পথে যেতে চাচ্ছেন না। জনগণকে উদ্ধার করার জন্য তারা যেতে পারছেন না। সেজন্য আমাদের ওইভাবে সামনের দিকে প্রস্তুত থাকতে হবে। যদি রাজনীতি করতে হয়, কেননা সামনের দিকে আর কোনো রাজনীতি থাকবে না।
নেতাকর্মীদের উদ্দেশে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান বলেন, আমাদের বুঝতে হবে যে আমরা জনগণের পক্ষে থাকব না সুযোগ-সুবিধার পক্ষে থাকব। জনগণের পক্ষে থাকতে গেলে ত্যাগ স্বীকারের মানসিকতা থাকতে হবে এবং আমাদের সে রকম মনোভাব থাকা উচিত। যারা সুযোগ-সুবিধার লোভে পড়ছেন, আমার দৃঢ় বিশ্বাস এই সুযোগ-সুবিধা অত্যন্ত স্বল্প সময়ের জন্য। সামনের দিকে তাদের প্রয়োজনীয়তা থাকবে না।
তিনি বলেন, যদি টিকে থাকতে হয় সঠিক রাজনীতিতে থাকতে হবে। জনগণের সঙ্গে থাকতে হবে, যতই কঠিন হোক। সেখানেই আপনি টিকতে পারবেন। না টিকতে পারলে আপনি শেষ হয়ে যাবেন। আর যদি অন্যভাবে বেঁচে থাকতে চান সুযোগ-সুবিধা নিয়ে, সেখানেও আপনি রাজনীতিতে শেষ হয়ে যাবেন। দালাল হিসেবে বেঁচে থাকবেন, রাজনীতিবিদ হিসেবে বেঁচে থাকতে পারবেন না।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশে এখন বিরাজনীতিকরণ চলছে। জনগণকে রাজনীতি থেকে দূরে সরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। নির্বাচনগুলোতে দেখেছেন লোক যায় না। আজকাল লোকে বলে, আমরা গেলেই কী হবে, না গেলেই বা কী হবে?