নিষ্ক্রিয়রা হলেন রাজশাহী জেলা ও নগর যুবদলের আহ্বায়ক

বিএনপি, রাজনীতি

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, রাজশাহী | 2023-09-01 01:53:20

রাজশাহী জেলা ও মহানগর যুবদলের নতুন আহ্বায়ক কমিটি নিয়ে নেতাকর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে। নেতাকর্মীরা বলছেন, দুই ইউনিটের আহ্বায়ক কমিটি গঠনেই রাজনীতির ভেতরে রাজনীতি হয়েছে। বিএনপির দুজন নেতার ঘনিষ্ঠদের যুবদলের দুই ইউনিটের আহ্বায়কের পদে আনা হয়েছে বলেও অভিযোগ তাঁদের।

গত শুক্রবার রাজশাহী জেলা ও নগর যুবদলের আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করেছে কেন্দ্রীয় কমিটি। জেলায় আহ্বায়ক হয়েছেন সদ্য বিলুপ্ত কমিটির ২৪ নম্বর সহসভাপতি মাসুদুর রহমান সজন। আর সদস্য সচিব করা হয়েছে রেজাউল করিম টুটুলকে। জেলায় দুই সদস্যের আহ্বায়ক কমিটি দেওয়া হলেও মহানগরে তিন সদস্যের। এরমধ্যে আবদুল কাদের বকুলকে আহ্বায়ক, শরিফুল ইসলাম জনিকে সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক ও রফিকুল ইসলাম রবিকে যুগ্ম আহ্বায়ক করা হয়েছে।

নতুন এই আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণার পর মহানগর যুবদলের আটটি সাংগঠনিক থানায় প্রতিবাদ সমাবেশ হয়েছে। সর্বশেষ মঙ্গলবার রাতে নগরীর বোয়ালিয়া থানা (পূর্ব ও পশ্চিম) কমিটির আয়োজনেও একটি প্রতিবাদ সভা হয়। সভার ব্যানারে লেখা ছিল, যুবদলের রাজশাহী মহানগরের ‘বিকলাঙ্গ’ কমিটি বাতিল ও আওয়ামী লীগের এজেন্ডা বাস্তবায়নকারীদের হাত থেকে যুবদল রক্ষার দাবিতে এই প্রতিবাদ সভা।

মহানগর যুবদলের সদ্য বিলুপ্ত কমিটির সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক রুহুল আমিন বাবলু বলেন, নগরের আহ্বায়ক আবদুল কাদের বকুল ২০০৭ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত রাজনীতিতে নিষ্ক্রিয় হয়ে চাকরি করতে যান। পরে এসে ব্যবসা করছেন। দলীয় কর্মসূচিতে মাঝে মাঝে এসে নেতাদের সাথে সেলফি তুলতেন। হঠাৎ তাঁকে বোয়ালিয়া থানার আহ্বায়ক করা হলো। তারপর সোজা নগর কমিটির আহ্বায়ক। তিনি আরও বলেন, বকুলের নামে কোন মামলা নেই। মামলা-হামলা, জেল-জুলুম সহ্য করা নেতাদের বাদ দিয়ে বকুলকে আহ্বায়ক করা কোনভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। তাই বৃহস্পতিবার আমরা আবারও প্রতিবাদ সভা করব। এতে নগর বিএনপির নেতাদেরও ডাকা হয়েছে। সেখানে নতুন কমিটি পরিবর্তন না হলে আমরা ঢাকায় দলীয় কার্যালয়ের সামনে মানববন্ধন করব।

এদিকে জেলা কমিটির আহ্বায়কের ব্যাপারেও নেতাকর্মীদের অভিযোগ। তাঁরা জানাচ্ছেন, নতুন আহ্বায়ক মাসুদুর রহমান সজন নগরীর আরডিএ মার্কেট ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি ফরিদ মাহমুদ হাসানের জামাতা। সজন নিজেও একজন ব্যবসায়ী। লকডাউনে দোকানপাট বন্ধ রাখার আন্দোলনে তিনি নেতৃত্ব দিয়েছেন। রাজনীতির চেয়ে নিজের ব্যবসাতেই মনোযোগ ছিলো বেশি। তাঁকে কেউ মানতে পারছেন না।

জেলা যুবদলের সদ্য বিলুপ্ত কমিটির সাধারণ সম্পাদক শফিকুল আলম সমাপ্ত বলেন, আমার নামে ১৩টি মামলা চলমান। আর যাকে আহ্বায়ক করা হয়েছে তাঁর নামে কোনো মামলা নেই। তাঁকে রাজনীতির মাঠে কখনও দেখিনি। তিনি একজন পাদুকা ব্যবসায়ী। তাঁকে আহ্বায়ক করায় জেলার প্রতিটি ইউনিটের নেতাকর্মীরা হতাশ।

নেতাকর্মীরা জানান, নগরের আহ্বায়ক কমিটি হয়েছে নগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শফিকুল হক মিলনের অনুসারীদের নিয়ে। এক্ষেত্রে সভাপতি মোহাম্মদ মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুলের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিতদের বাদ দেওয়া হয়েছে। আর জেলার ক্ষেত্রে বিএনপির রাজশাহী বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক শাহীন শওকতের সঙ্গে যাঁদের সখ্য, তাঁদের নেতৃত্বে আনা হয়েছে। রাজনীতির ভেতর এটা একটা রাজনীতি।

এ বিষয়ে শাহীন শওকতের বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে শফিকুল হক মিলন বলেছেন, এসব কথা সঠিক নয়। কমিটি দিয়েছে যুবদলের কেন্দ্রীয় কমিটি। তাঁর কিছুই করার নেই। উদ্ভুত পরিস্থিতিতে তাঁরা বসে সবকিছু ঠিক করে দেবেন। নগর যুবদলের নতুন আহ্বায়ক আবদুল কাদের বকুল বলেন, ‘নতুন কমিটি হলে অনেকের মনে কষ্ট থাকতেই পারে। এটা ব্যাপার না, আমরা একসাথেই আছি।’ জেলার আহ্বায়ক মাসুদুর রহমান সজন বলেন, ‘রাজনীতিতে পক্ষ-বিপক্ষ থাকবে, এটাই স্বাভাবিক। আমার যোগ্যতা, অভিজ্ঞতা আছে বলেই কেন্দ্র আমাকে দায়িত্ব দিয়েছে।

এ সম্পর্কিত আরও খবর