জিএম কাদের আমাকে বহিষ্কার করতে পারেন, এটা আমি জানি। আমি অখুশি না, এখন ফ্রি ঘুরতে পারবেন বলে মন্তব্য করেছেন মসিউর রহমান রাঙ্গা।
বৃহস্পতিবার (১৫ সেপ্টেম্বর) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি মিলনায়তনে এক সাংবাদিক সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন। জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্যসহ সকল পদ থেকে অব্যাহতির বিষয়ে জানাতেই তিনি ওই সাংবাদিক সম্মেলন আহ্বান করেন।
তিনি আরও বলেন, আমি কাউন্সিলের সময় বলেছিলাম ওই ধারাটি বদলাতে হবে। আমরা গঠনতন্ত্র জিএম কাদেরও চেয়েছিলেন। কিন্তু কিছু চামচার কারণে ওনি এই ধারা বহাল রেখেছেন। ধারাটি পরিবর্তন করা না হলে, তাহলে দল করবো না। অন্যদলেও যাবো না। আগামীতে দুটি দল ছাড়া আর কোন দল থাকবে না। আমি না থাকি না থাকি যায় আসে না। দলটা যেনো ভালোভাবে চলতে পারে, খরা বন্যায় মানুষের পাশে দাঁড়াবো।
তিনি বলেন, আমি শুধু বলেছি, রওশন এরশাদ সরানোর প্রক্রিয়া সঠিক হয় নি। এতেই ক্ষেপেছেন জিএম কাদের। আকস্মিকভাবে আমাকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। আমি যদিও এখনও চিঠি পাইনি, মিডিয়ার মাধ্যমে জেনেছি। ১৮ বছর ধরে প্রেসিডিয়াম সদস্য। আমাকে কোন শোকজ করা হয় নি, পান দোকানে কর্মচারীকেও বাদ দিতে গেলে শোকজ করা হয়। আমাদের গঠনতন্ত্রে ধারা ১৩ এ চেয়ারম্যান যা খুশি তাই করতে পারেন।
তিনি বলেন, সম্প্রতি রওশন এরশাদ কাউন্সিলের জন্য চিঠি দেন। সেই চিঠির পর পার্টির চেয়ারম্যান আমাকে সংসদীয় দলের বৈঠক ডাকতে বলেন। আমি এজেন্ডার কথা বললে ওনি (চেয়ারম্যান) প্রয়োজন নেই বলেন। আমরা ৩১ আগস্ট সভা করি, চিঠিতে স্বাক্ষর করা হয় ১ সেপ্টেম্বর। রওশন এরশাদকে বিরোধীদলীয় নেতার পদ থেকে সরানোর চিঠি দিতে গেলেন, স্পিকার বললেন, কি দিলেন। এই কয়টা দিন ওনি থাকলে কি হতো।
রাঙ্গা বলেন, এরশাদ সাহেব মারা গেলে দল ভাঙ্গার উপক্রম হয়েছিল। একদিকে জিএম কাদের অন্যদিকে রওশন এরশাদ। আমি দুই জনকেই বুঝিয়েছি। রওশন এরশাদ বারবার ডাকলেও আমি তার কাছে যাই নি। দলটি যদি এবার ভাঙ্গে ৮বার হবে।
তিনি বলেন, গতকাল আমার ছবিতে আগুণ দেওয়া হয়েছে। আমার সামনে দিক আপত্তি করবো না, এটি গণতান্ত্রিক অধিকার, আমাকে তারা পছন্দ নাও করতে পারেন। গতকাল মারামারি করে লোকজন আহত হয়ে, আরও বড় ঘটনা ঘটতে পারে, তাতে কি দলের ভালো হবে। আমি বলে দিচ্ছি রংপুরে আর কোন সংঘাত হবে না।
১৪ সেপ্টেম্বর কোন রকম শোকজ কিংবা নোটিশ ছাড়াই তাকে অব্যাহতি দিয়েছে জাপা। মসিউর রহমান রাঙ্গা গত কাউন্সিলে মহাসচিব নির্বাচিত হয়েছিলেন। কয়েক মাসের মাথায় তাকে মহাসচিব পদ থেকে সরিয়ে দেন জিএম কাদের। গত জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময়ে জাপার তৎকালীন মহাসচিব এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদারকে সরিয়ে রাঙ্গাকে মহাসচিব করেছিলেন হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। এরশাদের মৃত্যুর পর জিএম কাদের এর চেয়ারম্যান পদ নিয়ে জাপায় বিভক্তি দেখা দিলে শক্তহাতেই ভাঙ্গনের হাত থেকে রক্ষা করেছিলেন পার্টিকে।