বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ‘ভোট কারচুপির জন্য জোন ভাগ করে পুলিশের ১২ কর্মকর্তাকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।’ এছাড়া অতিরিক্ত ব্যালট পেপার ছাপিয়ে ভোটের আগে থানায় সংরক্ষণ করে রাখা হবে বলেও অভিযোগ করেছেন তিনি।
শুক্রবার (৭ ডিসেম্বর) রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।
রিজভী বলেন, ‘আসন্ন নির্বাচন পরিচালনার ক্ষেত্রে ইসি কমিশনার মো. রফিকুল ইসলাম, কবিতা খানম ও শাহাদাৎ হোসেন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছেন। তবে তাদের ভূমিকা ক্ষমতাসীন দলের স্বার্থের পক্ষে বলে জনশ্রুতি রয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা এইচ টি ইমাম নিয়মিত তাদের সঙ্গে ফোনে নির্বাচনের বিভিন্ন ধরনের বিষয় নিয়ে আলাপ-আলোচনা করে থাকেন। সরকারের এজেন্ডা বাস্তবায়নের মূল দায়িত্ব এদের মধ্যে সিনিয়র একজনকে দেয়া হয়েছে। এই কমিশনারের মাধ্যমে ইসিকে এইচ টি ইমাম সব ধরনের নির্দেশনা দেন।’
তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে প্রতিদিন সিইসির কাছে বার্তা বাহকের মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের নির্দেশনা পাঠানো হয়। সিইসি’র দফতর থেকে এই তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে। রিটার্নিং অফিসারদের নিয়ন্ত্রণের জন্য প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে সেল স্থাপন করা হয়েছে।’
বিএনপির এই মুখ্যপাত্র বলেন, ‘ভোট কারচুপির জন্য জোন ভাগ করে পুলিশের ১২ কর্মকর্তাকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। এদের মধ্যে ঢাকা মহানগর ও বিভাগ, ময়মনসিংহ বিভাগে অ্যাডিশনাল আইজি, ডিআইজি ও এআইজি র্যাংকের অফিসারদের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। রাজশাহী ও রংপুর জোনে র্যাবের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ ডিআইজি ও এআইজি পদমর্যাদার অফিসার, খুলনা ও বরিশাল জোনেও একইভাবে এসবির অতিরিক্ত আইজি, ডিআইজি এবং সমন্বয়কের দায়িত্বে আছেন পুলিশ সদর দপ্তরের কয়েকজন উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তা। পুলিশের দায়িত্বপ্রাপ্তরা ইতোমধ্যে সংশ্লিষ্ট জোনগুলোতে বৈঠক সম্পন্ন করেছেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘পুলিশের এই ১২জন কর্মকর্তা ১৯৯১ সাল থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত কেন্দ্রভিত্তিক আওয়ামী লীগ-বিএনপির কেন্দ্রের তালিকা, কেন্দ্রভিত্তিক হিন্দু ও বিএনপির ভোটারদের অবস্থান, প্রভাবশালীদের নামের তালিকা প্রস্তুত করতে নির্দেশ দিয়েছেন।’
রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘নির্দেশনা অনুযায়ী নির্ধারিত ব্যালটের বাইরে অতিরিক্ত ব্যালট ছাপানো হবে। যা থানায় ভোটের আগে সংরক্ষণ করে প্রয়োজন মতো ব্যালট বাক্সে ঢোকানো হবে। প্রস্তুত করে রাখা নকল সিল প্যাড প্রিসাইডিং অফিসারদেরকে সরবরাহ করবে পুলিশ। নির্বাচন কমিশনে মূল সিল প্যাড এবং স্বাক্ষর থাকবে আর বিএনপির পোলিং এজেন্টদেরকে নকল সিল প্যাড ও স্বাক্ষরের মূল ফলাফল সম্বলিত শিট সরবরাহ করা হবে। প্রিসাইডিং অফিসারদের মূল স্বাক্ষরে ফলাফল শিটে ভোট গণনা পরিবর্তন করে রিটার্নিং অফিসারকে পাঠানোর নানা জল্পনা-কল্পনা শুরু হয়েছে।’
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন- বিএনপির উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আবদুস সালাম, ফরহাদ হালিম ডোনার প্রমুখ।