বিএনপির স্বপ্ন গতকাল আঁধারে হারিয়ে গেছে: কাদের

আওয়ামী লীগ, রাজনীতি

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা ২৪.কম, ঢাকা  | 2023-11-16 13:30:54

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বিএনপিকে বলেছেন, ‘নির্বাচনের তারিখ যদি ঘোষণা করা হলে মহা প্লাবন ঘটে যাবে, কই? কোথাও ত দেখিনি। একটা দুইটা গাড়ি পুড়াইলেন, একটা দুইটা বাস পুড়াইলেন। সারাদেশে নির্বাচনের পক্ষে আনন্দের প্লাবন গতকাল সারা রাত। কই, কোনো প্লাবন ত দেখলাম না? কই কোনো বিরোধী ধারা ত দেখলাম না? আপনাদের যত স্বপ্ন গতকাল আঁধারে সব হারিয়ে গেছে।’

বৃহস্পতিবার (১৬ নভেম্বর) সকাল ১১টায় রাজধানীর তেজগাঁও-এ অবস্থিত ঢাকা জেলা ও ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলন তিনি একথা বলেন।

তিনি বলেন, ‘সবাইকে আহ্বান জানাবো, সময় আছে অংশগ্রহণ করুন। সরকারি দল হিসেবে আমি আপনাদের অনুরোধ করছি, কারো জন্য কোনো বাধা নেই। যারা আমাদের দিনরাত গালিগালাজ করেছে আমাদেরকে কখনো বঙ্গোপসাগর, কখনো কর্ণফুলী গঙ্গা ফেলে দিয়ে আমাদের ঢুবিয়েছিলেন। তাদেরকেও ইলেকশনে আসতে বলবো। আপনাদের জন্য ইলেকশনের দরজা এখনো বন্ধ হয়নি। আমরা স্বাগত জানাবো। বিএনপিও যদি তাদের মত পরিবর্তন করে নির্বাচনে আসে ওয়েলকাম। আমরা কাউকে নির্বাচনের পথে নিরুৎসাহিত করবো না’

যারা চিন্তা করছে আমরা শুধু নিজেরা ক্ষমতায় যাবার জন্য নির্বাচন কমিশনকে তফসিল ঘোষণার জন্য নির্ঘণ্ট উৎসাহিত করেছি এই কথা মোটেই ঠিক নয় জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, নির্বাচন সংবিধানের বাইরে যাবার উপায় নেই, নির্বাচন কমিশনের বাইরে গিয়ে কি করে করবে? কারণ জানুয়ারি ২৯ তারিখে সংসদ বসেছে এর আগে তিন মাস, এই তিন মাসের মধ্যে ইলেকশন করতে হবে বাধ্যতামূলক। ইলেকশন কমিশন সে বাধ্যবাধকতা মেনেই ইলেকশনের তারিখ ঘোষণা করেছে।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেছেন, বিএনপি যতদিন তার জামায়েত নির্ভর রাজনীতিটা রাজপথে করেছে। এটা অনেকটা গণতান্ত্রিক। এটা নিয়ে আমাদের বক্তব্য ছিল রাজনৈতিক। কিন্তু চড়াও হবার মত কিছু করিনি। তখন আমরা আশঙ্কা করেছিলাম তারা আবারও নাশকতা, আগুন, সন্ত্রাস এটাই তাদের মূল লক্ষ। কারণ এরা এভাবে তাদের নেতাকর্মীদের ডেকে পিকনিক স্টাইলে সভা-সমাবেশ করে সরকারের পরিবর্তন আনতে পারবে না। সেটা তারা ভাল করেই জানে। কাজেই তাদের যে প্ল্যান। তাদের চোরাগুপ্তা পথ, আতঙ্ক সৃষ্টির পথ, অগ্নি-সন্ত্রাস করার যে কর্মসূচি, প্ল্যান তা কার্যকর করবে। আমরা যা বলেছিলাম আমাদের কথা সত্য প্রমাণিত হয়েছে।

২৮ তারিখ প্রধানমন্ত্রী দক্ষিণ এশিয়ার নদীর তলদেশের প্রথম টানেল উদ্বোধন করেছেন জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, সেখান থেকেই আমরা খবর পেলাম একজন পুলিশকে পেটাতে পেটাতে হত্যা করা হয়েছে, প্রধান বিচারপতি বাসভবনে হামলা, এই দুইটা শুনেই বুঝেছিলাম আন্দোলনের বারোটা বেজে গেছে। ডেডলাইন ২৮ এখানেই ফিনিশ। সেদিনই তাদের আন্দোলন শেষ। আন্দোলন এমন একটা বিষয়, এর খুঁটিনাটি, এর রণকৌশল এগুলো জানতে হয়। এসবের সাথে এদের রাজনৈতিক নেতৃত্বের কোনো অভিজ্ঞতা নেই।

তিনি বলেন, আমাদের বলেছিল, ২৮ তারিখ আমরা অলিগলি পাবো না আর দেখলাম গলির মধ্যেই ঢুকে গেল। একজন গিয়ে আওয়ামী লীগের একজনের বাড়ির ভিতর ঢুকে গেল। তখন বলে, কি হলো? কি হলো? আওয়ামী লীগ আমাকে দৌড়াচ্ছে। বলে আমিও ত ভাই আওয়ামী লীগ করি। এখন আওয়ামী লীগের বাড়িতে গিয়ে ঢুকছে। এই হলো তাদের দশা। এখন আর কিছু নাই।

ওবায়দুল কাদের বলেন, সর্বশেষ নির্বাচনের নির্ঘণ্ট ঘোষণা হয়ে গেছে। এখন আর কি নিয়ে আন্দোলন? নেতা নেই আছে ঐ যে আবাসিক প্রতিনিধি। আবাসিক প্রতিনিধির আবাস আর নেই। হঠাৎ হঠাৎ কোন গোপন গুহাতে বের হন মাবুদ আল্লাহ জানেন। নেত্রী একদিন বলছিলেন এক অফিসারকে, দরকার নাই, একজন আছে বলুক। একজন আছে বলুক যা খুশি। বলা তো লাগবে। বিরোধী কণ্ঠ লাগবে না? তাকে ধরার এমন জোড় কোনো চেষ্টা সরকারের পক্ষ থেকে করা হয়নি।

আগে আমেরিকা ও গতকাল সিইসি দলগুলোর মধ্যে সংলাপের আহ্বান জানিয়েছেন, তাহলে সংলাপের আর কোনো সম্ভাবনা আছে কি না এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, সংলাপের সময় এখন আর নেই। গতকাল আমি এটা বলেছি। আপনার মনে আছে? সংলাপের সময় এখন আর নেই, এই কথা গতকাল আমি উচ্চারণ করেছি। তবে ডোনাল্ড লু চিঠি যেটা দিয়েছে সে চিঠিটার রিপ্লাই আমরা অবশ্যই দিবো। এটা গণতান্ত্রিক রীতিনীতির মধ্যেও পড়ে।

ইউরোপ-আমেরিকা আমাদের নির্বাচন নিয়ে যে দ্বন্দ্ব তা সমাধানের কথা বলছে, এমন প্রশ্নের উত্তরে ওবায়দুল কাদের বলেন, ইউরোপ-আমেরিকা নিয়ে অনেক কথা হয়েছে। চিঠি চালালি হয়েছে। এসব অনেক শুনেছি। আজকে বিশ্ব কোথায়? কি হচ্ছে ফিলিস্তিনে? কি করতে পারলো জাতিসংঘ, আমেরিকা, ইউরোপ। ইউক্রেন চলছে, কি করলে ইউরোপ। আর বাংলাদেশের একটা নির্বাচন নিয়ে তারা কেন এত মাথা ঘামায়। আমি এটার উত্তর দিতে চাই না।

এ সম্পর্কিত আরও খবর