রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের কাছে নির্বাচনের তারিখ পুনর্বিবেচনার দাবি জানিয়েছেন বিরোধীদলীয় নেতা রওশন এরশাদ। রাষ্ট্রপতি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করার আশ্বাস দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন বিরোধী দলীয় চিপ হুইপ মসিউর রহমান রাঙ্গা।
রোববার (১৯ নভেম্বর) রাষ্ট্রপতির সঙ্গে বৈঠক শেষে বেরিয়ে যাওয়ার সময় তিনি এ মন্তব্য করেন।
রাঙ্গা বলেন, ৩০ নভেম্বর আয়কর রির্টান দাখিলের বিষয় রয়েছে তাই পেছানো যায় কিনা এমন প্রস্তাব করা হয়। জবাবে রাষ্ট্রপতি বলেছেন, কিছু সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা রয়েছে। তারপরও আপনারা প্রস্তাব করেছেন, আমি সকলের সঙ্গে কথা বলে দেখবো কোন সুযোগ আছে কিনা।
মসিউর রহমান রাঙ্গা আরও বলেন, রাষ্ট্রপতি সম্প্রতি চিকিৎসা নিয়ে দেশে ফিরেছেন। তার স্বাস্থ্যের খোঁজ নেওয়ার জন্য এই সাক্ষাৎ। পাশাপাশি নির্বাচন নিয়ে কিছু আলোচনা হয়েছে। রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে সকল দলের অংশগ্রহণ কামনা করেছেন।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, জিএম কাদের কি বলেছেন সে বিষয়ে আমার মন্তব্য নেই। আমি রওশন এরশাদের সঙ্গে ছিলাম ওনি নির্বাচনে যাচ্ছেন।
রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে বেরিয়ে যাওয়ার সময় গাড়িতে বসেই মিনিট খানেক কথা বলেন রওশন এরশাদ। তিনি বলেন, যেহেতু ৩০ নভেম্বর আয়কর রির্টান দাখিলের বিষয় রয়েছে। তাই তারিখ পেছানো অনুরোধ করেছি। সকল দলের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার জন্য রাষ্ট্রপতি কোন আলোচনার উদ্যোগ নিতে পারে কিনা সে বিষয়ে বিবেচনার আহ্বান জানিয়েছি।
রাষ্ট্রপতির মো. সাহাবুদ্দিনের সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে দুপুর ১২টা ৫৮ মিনিটে বঙ্গভবন থেকে বেরিয়ে আসেন জাতীয় সংসদের বিরোধী দলীয় নেতা ও জাতীয় পার্টির প্রধান পৃষ্ঠপোষক বেগম রওশন এরশাদ। দুপুর ১২টায় ৪ সদস্যের প্রতিনিধি দল নিয়ে বঙ্গভবনে প্রবেশ করেন রওশন। ১২টা ২০ মিনিটে বৈঠক শুরু হয়ে ৩০ মিনিট চলে আলোচনা।
প্রতিনিধি দলে ছিলেন বিরোধী দলীয় চিফ হুইপ মশিউর রহমান রাঙ্গা, সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি অধ্যক্ষ রওশন আরা মান্নান, এরশাদ পুত্র রাহ্গির আল মাহি সাদ এরশাদ ও বিরোধী দলীয় নেতার মুখপাত্র কাজী মো. মামুনূর রশিদ।
গত ১৫ নভেম্বর দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হয়। জাতীয় পার্টির পক্ষ থেকে নির্বাচন প্রশ্নে এখনও কোন সিদ্ধান্ত জানায়নি। নির্বাচন প্রশ্নে ভেবে চিন্তে পা ফেলতে চায় জাতীয় পার্টি। সময়ক্ষেপণ করে দেখতে চান অন্যকিছু ঘটে কিনা। বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রের দৌড়ঝাঁপের দিকেও নজর রাখছে দলটি। অনেকেই ২০১৪ সালের নির্বাচনের আলামত দেখতে পাচ্ছেন। ২০১৪ সালে নির্বাচনে মনোনয়ন দাখিল করার পর হঠাৎ করেই নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেন হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। কিন্তু সেই নির্দেশ অমান্য করে রওশনের নেতৃত্বে ৮৭ জন প্রার্থী নির্বাচনে থেকে যান। রওশন এরশাদ এবারও নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার ঘোষণা দিয়ে রেখেছে।
দোলাচালের মধ্যেই রওশন এরশাদ তার অনুসারীদের নিয়ে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।
এর আগে, শনিবার নির্বাচন কমিশনে পাল্টাপাল্টি চিঠি দেন রওশন ও জিএম কাদের। রওশন তার চিঠিতে দলীয় প্রতীক লাঙ্গল অথবা জোটগতভাবে নৌকা প্রতীকে নির্বাচন করার কথা জানিয়েছেন । আর জিএম কাদের নিজে প্রতীক বরাদ্দের দেওয়ার কথা অবগত করেছেন ইসিকে।