বিএনপি ও সমমনা বিরোধী দলগুলোর ডাকা ৪৮ ঘণ্টার হরতালের প্রথম দিনে সিলেটে বিক্ষিপ্ত পিকেটিং ও মিছিল করেছে বিএনপি ও জামায়াতে ইসলাম। তবে, এসব মিছিল ও পিকেটিংয়ের স্থায়িত্ব ছিল মাত্র ২-৩মিনিটি। এসকল ঝটিকা মিছিল করার পরপরই উধাও হয়ে যান তারা। পিকেটিংকালে গাড়ি ভাঙচুর করলেও হরতালের প্রথমদিন রোববার সিলেট নগরীতে হরতালের তেমন একটা প্রভাব পড়েনি।
রোববার (১৯ নভেম্বর) সরেজমিনে দেখা যায়, দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে নগরীর আম্বরখানার লেচুবাগান এলাকায় হরতাল সমর্থনে আড়াই মিনিটের একটি ঝটিকা মিছিল বের হয়। এসময় একটি ট্রাক ভাঙচুর করেন তারা। তবে পুলিশ আসার আগেই দ্রুত স্থানত্যাগ করেন হরতাল সমর্থকরা।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্র জানা যায়, দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে প্রভাতি পীরমহল্লা এলাকায় কয়েকটি মোটরসাইকেলে হেলমেটধারীরা সড়ক অবরোধ করে একটি ট্রাকের গ্লাস ভাঙচুর করে এবং ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায়। কয়েক মিনিটের মধ্যে পুলিশ আসার আগেই সটকে পড়ে দুর্বৃত্তরা।
একইদিন দুপুর ২টার দিকে নগরীর শাহী ঈদগাহ এলাকায় সিলেট যুবদল নেতা সিদ্দিকুর রহমান পাপলু ও সিলেট জেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক হাজী দিলোয়ার হোসেন দিনার নেতৃত্বে একটি মিছিল বের হয়। মিছিল শুরুর তিন মিনিটের মাথায় শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়ামের সামনে গিয়ে নেতাকর্মীরা সড়কে ব্যানার ফেলে সটকে পড়নে। এসময় তারা কয়েকটি গাড়িকে লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে এবং ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায়।
বিকাল ৩টার দিকে দক্ষিণ সুরমা উপজেলা বিএনপির নেতাকর্মীরা বঙ্গবীর রোডের লাউয়াই এলাকায় ঝটিকা মিছিল, গাড়ি ভাঙচুর ও ককটেল বিস্ফোরণ করেছেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রোববার বিকেলে উপজেলা বিএনপির কয়েকজন নেতাকর্মী বঙ্গবীর রোডের লাউয়াই এলাকায় ঝটিকা মিছিল নিয়ে বের হয়ে নূরজাহান মহিলা কলেজের রাস্তার সামনে পিকেটিং শুরু করেন। এসময় তারা কয়েকটি গাড়িকে তাড়া করেন ও ককটেল বিস্ফোরণ ঘটান। মিনিট দেড়েকের মধ্যেই তাড়া মোটর সাইকেল যোগে নুরজাহান মহিলা কলেজের রাস্তার দিকে চলে যান।
এছাড়াও রোববার সকালে নগরীর ওসমানী মেডিকেল কলেজ রোড, বিমানবন্দর এলাকা এবং সিলেট–সুনামগঞ্জ সড়কের টুকেরবাজার সড়কে বিক্ষোভ ও পিকেটিং করেছে স্বেচ্ছাসেবক দলসহ অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীরা।
অপরদিকে, হরতালের প্রথম দিনে সিলেটে যানবাহনের চলাচল অন্যান্য দিনের চেয়ে কিছুটা কম দেখা যায়। সকাল থেকে সিলেট নগরীর সড়কগুলোতে সিএনজিচালিত অটোরিকশা, রিকশা, লেগুনা, মোটরসাইকেল ও ব্যক্তিগত কার চলাচল করতে দেখা গেছে। সিলেট থেকে আন্তঃজেলা ও দূরপাল্লার বাস ছেড়ে যেতে দেখা যায়।
সকাল থেকে সিলেট নগরীতে নাশকতা এড়াতে বিভিন্ন পয়েন্টে সতর্ক অবস্থানে দেখা যায় পুলিশ ও র্যাব সদস্যদের। এছাড়া প্রধান প্রধান সড়কগুলোতে গাড়িযোগে টহল দিতে দেখা যায়।
এ ব্যাপারে সিলেট জেলা বাসমালিক সমিতির সভাপতি ময়নুল ইসলাম রোববার সন্ধ্যায় বার্তা২৪.কম’কে বলেন, সকাল থেকে আন্তঃজেলা ও দূরপাল্লার বাস অন্যান্য দিনের তুলনায় চলাচল কম ছিল। তবে, কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।
সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের উপপুলিশ কমিশনার (উত্তর) আজবাহার আলী শেখ’র মুঠোফোনে কল দিলে তিনি কল রিসিভ করেননি।