মিথ্যা মামলা, হামলা এবং ভুয়া ও গায়েবি মামলা দিয়ে গত ছয় সপ্তাহে ২৩ হাজার নেতাকর্মীকে কারারুদ্ধ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান।
শনিবার (১৬ ডিসেম্বর) সকালে সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধে শহীদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানো শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ কথা বলেন তিনি।
মঈন খান বলেন, আমরা শান্তিপূর্ণ, গণতান্ত্রিক, নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলনে বিশ্বাসী। আমরা লগি-বৈঠার রাজনীতি করি না। শান্তিপূর্ণ প্রক্রিয়ায় এ দেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনবো, সেই কারণে রাজপথে আছি।
জনগণের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, সরকারের সব ধরনের উসকানি বর্জন করুন। মিথ্যা মামলা, হামলা এবং ভুয়া ও গায়েবি মামলা দিয়ে গত ছয় সপ্তাহে ২৩ হাজার নেতাকর্মীকে কারারুদ্ধ করেছে। এই সরকার ভুয়া মামলা দিয়ে আমাদের গণতন্ত্রকামীদের কারারুদ্ধ করে এই দেশে তারা থাকতে পারবে না। এই দেশের মানুষ তাদের বর্জন করেছে।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে তারা রাজনৈতিক মামলা দিয়ে কারারুদ্ধ করে রেখেছে। আমাদের মহাসচিবকে তারা গায়েবি মামলা দিয়ে কারারুদ্ধ করে রেখেছে। আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে ১/১১ এর ভুয়া মামলা দিয়ে তারা বিদেশে আটকে রেখেছে, তিনি দেশে ফিরতে পারছেন না।
বিএনপির এই নেতা বলেন, আজকে বাংলাদেশের মানুষ জেগে উঠেছে। তারা জানে এই দেশে ধোঁকাবাজি করে কেউ সরকারে থাকতে পারবে না। আগামীতে শান্তিপূর্ণ গণতান্ত্রিক আন্দোলনের মাধ্যমে এই সরকারকে অপসারিত করে বাংলাদেশে গণতন্ত্র ও সুশাসন ফিরিয়ে আনবো। মানবাধিকার ফিরিয়ে আনবো।
মঈন খান বলেন, আজকে স্বাধীনতার ৫২ বছর পরে এখানে আমরা কোন বিজয় উদযাপন করতে এসেছি। বাংলাদেশের সরকারের সামনে দেশের মানুষের সেই প্রশ্ন তুলে ধরতে হবে। এটা কিসের বিজয়। এটা কি এক দলীয় শাসনের বিজয় নাকি একনায়কতন্ত্রের শাসনের বিজয়। নাকি এমন একটি সরকার চলছে, যারা মানুষকে কথা বলতে দেয় না। যারা মানুষকে ভোট দিতে দেয় না। যারা মানুষকে অর্থনৈতিক মুক্তি দিতে ব্যর্থ হয়েছে।
মঈন খান বলেন, আজকে স্বাধীনতার ৫২ বছর পরে এসে, বাংলাদেশের ১৮ কোটি মানুষকে এ প্রশ্ন করতে হবে যে, আওয়ামী লীগ যদি দাবি করে তারা মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি, তাহলে আওয়ামী লীগকে জবাবদিহি করতে হবে কেনো তারা মুক্তিযুদ্ধের আদর্শকে জলাঞ্জলি দিয়ে বাংলাদেশে একদলীয় স্বৈরাচারী সরকার কায়েম করেছে, এই প্রশ্নের জবাব আওয়ামী লীগকে দিতে হবে।
তিনি বলেন, আমরা স্পষ্ট ভাষায় বলে দিতে চাই, বাংলাদেশের ১৮ কোটি মানুষ এই সরকারকে প্রত্যাখ্যান করেছে। এই সরকারের নৈতিক পরাজয় ইতিমধ্যেই হয়েছে। আরও একটি নির্বাচনের তফসিল দিয়েছে। কোন নির্বাচন? যে নির্বাচনে তারা প্রকাশ্যে সব লজ্জা ভুলে গিয়ে প্রকাশ্যে দর কষাকষি করে সিট ভাগাভাগি করছে। এটার নাম গণতন্ত্র হতে পারে না। যদি সিট ভাগাভাগি করে এমপি নির্বাচিত হয়, তাহলে তো এই নির্বাচন ইতিমধ্যে ব্যর্থ হয়ে গেছে। তারা নির্বাচনী ফলাফল তাদের কাগজে কলমে রাজধানীতে সর্বোচ্চ অফিসে বসে লিখে ফেলেছে। আগামী ৭ তারিখ শুধু সেই ফলাফল ঘোষণা দেবে। এটা কোনো নির্বাচন নয়, এই নির্বাচন দিয়ে বাংলাদেশের মানুষকে ধোঁকা দেওয়া যাবে না।