বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান বলেছেন, আওয়ামী লীগ এবং বিএনপি দুটি ভিন্ন চরিত্রের রাজনৈতিক দল। আওয়ামী লীগ যা করে বিএনপি তা করে না। আওয়ামী লীগ বাকশাল করে আর বিএনপি গণতন্ত্র করে। আওয়ামী লীগ তাদের বিরোধী দলের উপরে জুলুম করে আর বিএনপি তাদের বিরোধী দলকে কথা বলার সুযোগ দেয়।
আওয়ামী লীগ কথায় কথায় নিজেদেরকে স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি দাবি করে, এমন কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ কালো রাতে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীরা যখন মানুষের উপর হায়নার উপর ঝাপিয়ে পড়েছিল তখন আওয়ামী লীগ কোথায় ছিল? এ প্রশ্ন আজকে তাদেরকে করতে হবে। আওয়ামী লীগ মুক্তিযুদ্ধ করেনি। আওয়ামী লীগ ১৯৭২ থেকে ৭৫ সালে একবার বাকশাল গঠন করেছে, এখন তারা আবারও বাকশাল ‘টু’ গঠন করেছে।
রোববার (২৮ জানুয়ারি) জাতীয় প্রেস ক্লাবের আব্দুস সালাম হলে গণফোরাম ও বাংলাদেশ পিপলস পার্টি আয়োজিত গ্যাস সংকট ও দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি নিয়ন্ত্রণ, পাচারকৃত ও ঋণখেলাপীদের টাকা উদ্ধার সর্বগ্রাসী দুঃশাসন রোধে একদলীয় ডামি নির্বাচনের সংসদ বাতিল ও নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে সুষ্ঠু গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য করণীয় শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
বর্তমান সরকার কথায় কথায় বলে বিএনপি যখন সরকারে ছিল তখন নাকি আওয়ামী লীগের উপরে নির্যাতন করেছে, এমন কথা উল্লেখ করে ড. মঈন খান বলেন, আওয়ামী লীগ আজকে বিএনপির সেক্রেটারি জেনারেলের বিরুদ্ধে ১০০টির অধিক মিথ্যা, বানোয়াট, গায়েবি মামলা দিয়েছে। বিএনপি যখন সরকারের দায়িত্বে ছিল তখন আওয়ামী লীগের যিনি সাধারণ সম্পাদক ছিলেন তার বিরুদ্ধে বিএনপি কয়টি মামলা দিয়েছে? বিএনপি একটি মামলাও দেয়নি। আজকে আমাদের চেয়াপারসন বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে অনেকগুলো মামলা দেওয়া হয়েছে। বিএনপি যখন ক্ষমতায় ছিল তখনকি বিএনপি আওয়ামী লীগের সভানেত্রীর বিরুদ্ধে কোনও মামলা দিয়েছে? একটি মামলাও দেয়নি। তারা যে বলে বিএনপি ক্ষমতায় থাকাকালীন তাদের উপর অনেক নির্যাতন করেছে, আওয়ামী লীগকে এটার হিসেব দিতে হবে। আওয়ামী লীগ এটা পারবে না, এটা সম্ভব নয়।
তিনি আরও বলেন, বিশ্বের নামি-দামি নিউজ ম্যাগাজিন, টাইম ম্যাগাজিন গুলোতে বলা হয়েছে বাংলাদেশে এখন যে শাসন চলতেছে সেটি হলো বাকশাল ‘টু’। বাংলাদেশে ৭ জানুয়ারির পর এখন একদলীয় শাসন আরও শক্তভাবে কায়েম হচ্ছে। নিউইয়র্ক টাইমস এবং ওয়াশিংটন পোস্ট লিখেছে, বাংলাদেশ উত্তর কোরিয়ার পথে হাঁটছে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, সারা বিশ্বের স্বীকৃত পন্থা হলো কালো পতাকা মিছিল, এটা প্রতিবাদের ভাষা। আমরা কালো পতাকা মিছিলের মাধ্যমে শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদের ভাষা ব্যবহার করেছি। যতক্ষণ পর্যন্ত এই সরকারের পতন না হবে ততক্ষণ পর্যন্ত আমরা শান্তিপূর্ণ কালো পতাকা মিছিল করে যাবো। গণতন্ত্র কিন্তু ছেলের হাতের মোয়া নয়। ৭ জানুয়ারি আমাদের প্রত্যাশা অনেক বড় ছিল। কিন্তু, আমরা সেটি অর্জন করতে পারিনি। এতে হতাশ হওয়ার কিছু নেই। আমাদের শক্তি হচ্ছে জনগণের শক্তি।
গণফোরামের সভাপতি মোস্তফা মোহসীন মন্টু'র সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন, গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি, গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক প্রমুখ।