কানেকটিভিটির নামে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ভারতের এক অংশ থেকে আরেক অংশ পর্যন্ত রেল যোগাযোগের নামে করিডোর দেওয়া হয়েছে বলে মন্তব্য করে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, এতে দেশের সার্বভৌমত্ব ও জাতীয় নিরাপত্তা মারাত্মক হুমকির মুখে পড়বে।
রোববার (৩০ জুন) বিকেলে রাজধানীর গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে একথা বলেন মির্জা ফখরুল।
তিনি বলেন, আমাদের নিশ্চয়ই ১৯৭২ সালে ভারতের সঙ্গে স্বাক্ষরিত ২৫ বছরের গোলামি চুক্তির কথা স্মরণ আছে। ৫২ বছর পর সে ধারাবাহিকতায় গত ২২ জুন ভারতের সঙ্গে সমঝোতার আড়ালে যেসব চুক্তি করা হলো, তা বাংলাদেশকে আজীবনের জন্য ভারতের গোলামে পরিণত করবে। এর ফলে বাংলাদেশের জাতীয় নিরাপত্তা বিপন্ন হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশকে দীর্ঘ মেয়াদে ভারতের গোলামি চুক্তির যে গভীর ফাঁদ তৈরির ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে, এধরনের জাতীয় স্বার্থ বিরোধী চুক্তি জনগণ মেনে নেবে না।
চুক্তি-স্মারকের মাধ্যমে দেশের প্রতিরক্ষা এবং জাতীয় নিরাপত্তার বিষয়টিকে ভারতের জাতীয় প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তার অংশে পরিণত করা হয়েছে মন্তব্য করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, যা খুবই বিপজ্জনক এবং দেশের স্বাধীনতার প্রতি হুমকি। এটি শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান ও জোট নিরপেক্ষ নীতির পরিপন্থি।
মির্জা ফখরুল বলেন, ভারত সফর পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে শেখ হাসিনা বলেছেন, ভারত যদি আমাদের তিস্তা প্রজেক্টটা করে দেয়, তাহলে আমাদের সব সমস্যাই তো সমাধান হয়ে গেল। শেখ হাসিনা ভারতের সঙ্গে সাধারণ কূটনৈতিক দরকষাকষির ন্যূনতম ক্ষমতা হারিয়ে ফেলেছেন।
তিনি বলেন, একদিকে ভারত থেকে তিস্তার পানি আদায়ে ব্যর্থতা, অপরদিকে অসহায় মানুষের সাথে এ নিয়ে তামাশা— এটি জাতির জন্য নিতান্তই দুঃখজনক। শেখ হাসিনা তিস্তা পানি বণ্টন চুক্তিকে পুরোপুরি অবজ্ঞা করেছেন। তিস্তা চুক্তি তাদের এজেন্ডাতেই স্থান পায়নি। অনেকে মনে করেন, পানি মানুষের জীবন-জীবিকা ও জলবায়ুর সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িত এবং পানি নিয়ে ভবিষ্যতে বিভিন্ন দেশের মধ্যে যুদ্ধ পর্যন্ত গড়াতে পারে।
বাংলাদেশের ভেতর দিয়ে ভারতীয় রেল ট্রানজিটের ফলে বাংলাদেশের জনগণ উপকৃত হবে— প্রধানমন্ত্রীর এই বক্তব্যের প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, বিশেষজ্ঞরা রেল করিডোরের ফলে বাংলাদেশের লাভ নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন। এ ট্রেন বাংলাদেশের কোনো মানুষ ব্যবহার করতে পারবে না। একতরফাভাবে ভারতকে করিডোর সুবিধা দেওয়ার জন্য এ চুক্তি করা হয়েছে। এতে বাংলাদেশের কোনো লাভ হবে না।