বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও শ্রমিক দলের প্রধান সমন্বয়ক নজরুল ইসলাম খান বলেছেন, ক্ষমতার মোহে আওয়ামী লীগ জনগণের আশা আকাঙ্ক্ষা ধ্বংস করে দিয়েছে।
শনিবার (৬ জুলাই) নগরের টাউনহলের তারেক স্মৃতি অডিটরিয়ামে জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের ময়মনসিংহ বিভাগীয় বনিয়াদি প্রশিক্ষণ কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে শ্রমিক দলের ময়মনসিংহ বিভাগীয় সভাপতি মোহাম্মদ আবু সাঈদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন কেন্দ্রীয় শ্রমিক দলের সভাপতি আনোয়ার হোসাইন।
নজরুল ইসলাম খান বলেন, বাংলাদেশে সর্বকালের শ্রেষ্ঠতম বাংলাদেশি শ্রমিক ছিলেন শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান। তিনি নিজেকে শ্রমিক হিসেবে গর্ববোধ করতেন। শ্রমিকরা সেই শ্রেণির মানুষ যারা হালাল উপার্জন করে জীবিকা নির্বাহ করে। শ্রমিকরা সেই মানুষ যারা সৃষ্টি করে জন্ম দেয় সবকিছু। এদেশে খাদ্য উৎপাদন করে শ্রমিকরা। কাপড় উৎপাদন করে বস্ত্রকলের শ্রমিকরা।
তিনি বলেন, তারেক রহমানকে মিথ্যা দণ্ড দিয়ে দেশের বাইরে থাকতে বাধ্য করা হলো। তাকে ফিরিয়ে আনতে হবে। এত দূর থেকে বসে তিনি ক্রমাগত দিনরাত কাজ করছেন। ইতিহাসে প্রথম এবারই তিনি তার নেতৃত্বে ডানপন্থী বামপন্থী, কমিউনিস্ট পার্টি, ইসলামিক দল সব একত্রে হয়ে এই সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করেছে। জনগণকে আহ্বান জানানো হয়েছে নির্বাচনে না যাওয়ার জনগণ নির্বাচনে যায় নাই। সেই নেতাকে আমাদের ফিরিয়ে আনতে হবে। জাতীয় সংসদে একজন মাত্র শ্রমিক নেতা এমপি আর সংসদে সদ্যদের সত্তর ভাগ হয় শিল্পপতি না হয় ব্যবসায়ী। শতকরা আশি ভাগ কোটিপতি। এই অবস্থা চলতে থাকলে এই সংসদ সরকারের কাছ থেকে কোন সুবিধা পাওয়ার আশা নাই। কেন এই রকম হচ্ছে? কারণ এই সরকারের ভোটের দরকার হয় না। যদি আমাদের ভোটের দরকার হতো, আমরা এমন লোককে ভোট দিতাম যে আমার পক্ষে কথা বলবে, যে আমার পক্ষে কাজ করবে।
আমরা খুব আশা নিয়ে যুদ্ধে গিয়েছিলাম, দেশে গণতন্ত্র থাকবে, এদেশে সুশাসন থাকবে, বৈষম্যের অবসান হবে, মানবিক মর্যাদা থাকবে, যেটা পাকিস্তানে ছিল না। আমরা সম্মানিত নাগরিক হিসেবে জীবনযাপন করবো, যেটা পাকিস্তানে পারি নাই। কিন্তু দুর্ভাগ্য, ক্ষমতার মোহে আজকে যারা ক্ষমতাসীন তারা আমাদের সব আকাঙ্খাকে ধ্বংস করে দিয়েছে। আজকে দেশে গণতন্ত্র নাই। এদেশে ভোট হয় না। আজকে দেশে বৈষম্য বেড়েছে। ইন্টারন্যাশনাল রিপোর্টে বলে জনসংখ্যার হারে বিবেচনা করলে বাংলাদেশে প্রতিবছর যত কোটিপতি তৈরি হয় বিশ্বের আর কোন দেশে এত কোটিপতি হয় না, বলেন তিনি।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে প্রতিবছর যে পরিমাণ মানুষ দারিদ্র সীমার নিচে চলে যাচ্ছে। একদিকে হাতেগোনা কিছু মানুষ অনেক অনেক সম্পত্তির মালিক হয়ে যাচ্ছে, আরেকদিকে কোটি কোটি মানুষ আরও দরিদ্র হয়ে নিঃস্ব হয়ে যাচ্ছে। এরকম বৈষম্য বাড়ানোর জন্য তো আমরা স্বাধীনতা যুদ্ধ করি নাই। আজকে আমরা যারা হালাল রোজগার করি আমাদের সংসার চলে না। সাত কোটিরও বেশি আমরা শ্রমিক-কর্মচারী। কিন্তু আমাদের গুরুত্ব নাই।
তিনি শ্রমিকদলের কর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেন, আমরা কিভাবে বিএনপিকে সহযোগিতা করতে পারি এবং তার মধ্যে কোন বাঁধা থাকলে কিভাবে দূর করতে পারি। শ্রমিকদলের শক্তি কিভাবে আরও বৃদ্ধি করা সম্ভব এই কর্মশালায় আমাদের আলোচনা করতে হবে।
আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপি চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারী ও শ্রমিক দলের প্রধান সমন্বয়ক শামছুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, ময়মনসিংহ বিভাগীয় সহ সাংগঠনিক সম্পাদক আবু ওয়াহাব আকন্দ, দক্ষিণ বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক জাকির হোকেন বাবলু, শ্রমিক দলের ময়মনসিংহ বিভাগীয় সাধারণ সম্পাদক মো. আবদুস সোবহা।