বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীকে নিষিদ্ধ করার নিন্দা জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেছেন, আন্তর্জাতিক মানের ন্যায়সংগত ও বিশ্বাসযোগ্য, গ্রহণযোগ্য, নিরপেক্ষ কোনো তদন্ত ছাড়াই কোনো রাজনৈতিক দলকে অপবাদ দিয়ে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা অন্যায় এবং সংবিধান সম্মত নয় ।
বৃহস্পতিবার (১ আগস্ট) এক বিবৃতিতে জামায়েতের দীর্ঘদিনের সঙ্গী বিএনপির মহাসচিব বলেন, সরকারের এই সিদ্ধান্ত নিন্দনীয়, অগণতান্ত্রিক এবং অসাংবিধানিক। ছাত্র আন্দোলনে বর্বরোচিত গণহত্যার দায়ে আওয়ামী সরকারের পদত্যাগের চলমান ইস্যুকে ধামাচাপা দিতে নতুন বিতর্ক, নতুন ইস্যু সামনে আনা হচ্ছে, যা বুমেরাং হতে বাধ্য।
ফখরুল বলেন, পরিকল্পিতভাবে নন ইস্যুকে ইস্যু বানানোর পুরাতন কার্ড নতুন করে খেলে আওয়ামী লীগ জনদৃষ্টি ভিন্ন দিকে প্রবাহিত করতে পারবে না।
বৃহস্পতিবার সন্ত্রাস বিরোধী আইনে জামায়াতও এর ছাত্র সংগঠন ইসলামী ছাত্রশিবিরসহ সব অঙ্গ সংগঠনকে নিষিদ্ধ করে গেজেট জারি করেছে সরকার। আইন অনুযায়ী, জামায়াত-শিবির এখন ‘সন্ত্রাসী সত্তা’।
বিএনপি নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোট সরকারের অন্যতম শরিক জামায়াতকে সম্প্রতি সংঘটিত সহিংসতার জন্য দায়ী করা হয়েছে।
সরকারের ভাষ্য, ছাত্রদের আন্দোলনে ঢুকে জামায়াত-শিবির নাশকতা ও সহিংসতা করেছে।
এর প্রতিবাদে বিবৃতিতে বিএনপি বলছে, বাংলাদেশের ঘরে ঘরে এই ফ্যাসিষ্ট সরকারের পদত্যাগের দাবি উচ্চারিত হচ্ছে তখন আওয়ামী লীগ বিরোধী দলকে নিশ্চিহ্ন ও চাপে রাখতে বিশ্বাসযোগ্য কোনো তদন্ত ছাড়াই নিজেদের দায় দায়িত্ব বিরোধী দলের ওপর চাপানোর অংশ হিসেবে জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশকে নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল সরকারের সিদ্ধান্তকে ‘হঠকারি’ আখ্যা দিয়ে বলেন, আওয়ামী লীগ নিজেরা পরিকল্পিতভাবে পরিস্থিতি আরো জটিল ও সংঘাতময় করে তার দায় বিরোধী দলের ওপর চাপানোর আশঙ্কা করছে দেশবাসী। অতীতেও তারা নিজেরা সংঘাতময় পরিস্থিতির সৃষ্টি করে তা রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের ওপর চাপিয়ে দেয়ার অপচেষ্টা করেছে। চলমান আন্দোলনেও করছে। বিরোধী দল, মতকে নির্মূল করে বিরোধী দল শূন্য করার সুদুরপ্রসারী পরিকল্পনা নিয়ে রাষ্ট্রঘাতি আওয়ামী লীগ তা ভবিষ্যতেও করতে পারে।
দেশ স্বাধীন হওয়ার পর ‘ধর্মের অপব্যবহারের’ কারণে নিষিদ্ধ হয় জামায়াত। জাতির বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হত্যাকাণ্ডের পর বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা সামরিক শাসক জিয়াউর রহমানের আমলে দলটিকে রাজনীতি করার অধিকার দেওয়া হয়। উল্লেখ্য, পাকিস্তানের সাবেক স্বৈরশাসক আইয়ুব খানের আমলেও জামায়াতে ইসলামি নিষিদ্ধ করা হয়েছিলো।