এক স্বৈরাচারের পতন হয়েছে, নতুন রূপে অন্য স্বৈরাচার যাতে ক্ষমতা দখল করতে না পারে সেজন্য সবাইকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় আমির ডা. শফিকুর রহমান।
শনিবার (২৪ আগস্ট) সকালে হবিগঞ্জ পৌরসভা মাঠে জামায়াতে ইসলামী জেলা শাখার আমির আব্দুর রহমান মাস্টারের সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারি কাজী মহসিন আহমেদের পরিচালনায় অনুদান প্রদান অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
ডা. শফিকুর রহমান বলেন, শেখ হাসিনা বলতেন, এটা তাদের দেশ, অন্যরা ভাড়াটিয়া, এখন তারা নিজেরাই দেশে থাকতে পারছেন না। র্যাবকে তারা রক্ষীবাহিনীতে রূপান্তরিত করেছিল, আদালতকে কুক্ষিগত করা হয়েছে, তাদের কাছে কেউ নিরাপদ নয়। সংখ্যাগুরু বা সংখ্যালঘু বলতে কিছুই নেই, আমরা সবাই মানুষ। মানুষ হিসেবে আমাদের অধিকার নিশ্চিত করতে হবে।
তিনি বলেন, ছাত্র আন্দোলনে যারা নিহত হয়েছেন তারা জাতীয় সম্পদ, জাতীয় বীর। তাদের আত্মত্যাগের কারণে দেশ একটি জুলুমবাজ সরকারের হাত থেকে রক্ষা পেয়েছে। ২০০৭ সাল থেকে ঘৃণিত সেনাপ্রধান মঈন উদ্দিন আহমেদ জোরবলে দুই বছর ক্ষমতা দখল করে রাখে। তাদের দুর্নীতির কাছে হিমালয়ের পর্বতও লজ্জা পেয়েছে। এক পর্যায়ে তারা দুই নেত্রীকে প্রস্তাব দেয়-আমরা নির্বাচন দিয়ে ক্ষমতা ছাড়তে চাই, তবে শর্ত হচ্ছে- আমাদেরকে বিচারের মুখোমুখি করা যাবে না। এক নেত্রী বললেন, এখনই তা বলা যাবে না, দোষ করে থাকলে বিচার হবে, আরেক নেত্রী বললেন, আমাদেরকে ক্ষমতায় বসিয়ে দেন, আমরা আপনাদেরকে বিচারের মুখোমুখি করব না। অবৈধ চুক্তি মোতাবেক শেখ হাসিনা সরকার গঠন করে বিরোধী রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের ওপর নির্যাতন শুরু করেন। ১৫ বছরে জামায়াতের সাবেক দুই আমিরসহ কেন্দ্রীয় ১১ জন নেতাকে জুডিসিয়াল কিলিং-এর মাধ্যমে হত্যা করে। তাদের মধ্যে পাঁচজনকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে, পাঁচজনকে জেলে ভেতরে রেখে এবং একজনকে জেলের বাহিরে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়।’
তিনি আরও বলেন, আওয়ামী লীগ হত্যার রাজনীতিতে বিশ্বাসী, গুম খুন, লুটপাট, মেয়েদের ইজ্জত লুন্টনের রাজনীতিতে বিশ্বাসী, আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা দেশের মানুষের ওপর, ভিন্নমতের রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের ওপর এতোটাই নির্যাতন করেছে যে, বিচারের ভয়ে তারা পালাতে গিয়ে এখন খালে বিলে ধরা পড়ছে।
জামায়াত আমির হবিগঞ্জে ছাত্র-আন্দোলনে নিহত ১৫ জনের মধ্যে ১৪ জনের পরিবারকে ১ লাখ টাকা প্রদান করেন। এর মধ্যে একজনের পরিবারকে আগেই সিলেটে অনুদান প্রদান করা হয়েছিল। এ সময় তিনি মঞ্চ থেকে নেমে শহীদ পরিবারের সদস্যদের কাছে যান এবং অনুদান প্রদান করেন।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে আরও বক্তব্য রাখেন জামায়াতের কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এহসানুল মাহবুব জুবায়ের।