‘অতীতে যারা ক্ষমতায় ছিল সবাই নিজেদের ভাগ্য পরিবর্তন করেছে, জনগণের নয়’

, রাজনীতি

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, চট্টগ্রাম | 2024-11-10 05:40:12

অতীতে যারা ক্ষমতায় ছিল সবাই নিজেদের ভাগ্য পরিবর্তনে করেছে, জনগণের ভাগ্যের কোনো পরিবর্তন হয়নি বলে মন্তব্য করেছেন চট্টগ্রাম উত্তর জেলা জামায়াতের আমীর মুহাম্মদ আলাউদ্দিন সিকদার। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে আর কোনো শ্রমিকদেরকে শোষণ করা চলবে না। শ্রমিকদেরকে তাদের অধিকার ফিরিয়ে দিতে হবে। না হলে শ্রমিক ফেড়ারেশনের নেতৃত্বে সকল শ্রমজীবী মানুষ সন্ত্রাস ও চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে সংগ্রাম করবে। আন্দোলন-সংগ্রামের মধ্যদিতে অন্যায়কারিকে দেশের রাজনীতি থেকে বিতাড়িত করা হবে। অতীতে যারা রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় ছিল তারা মানুষের অধিকার নিশ্চিত করতে পারেনি, ভাগ্যের পরিবর্তন ঘটাতে পারেনি। তারা শুধু নিজেদের ভাগ্যের পরিবর্তন করেছে। কারণ তারা ছিল দুর্নীতিবাজ, সন্ত্রাসী ও সম্পদ পাচারকারী। সুতরাং আগামীতে বাংলাদেশে সৎ ও যোগ্য নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠা করা যায় তাহলে দেশের মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন হবে। পাশাপাশি সব ধরণের বৈষম্য দূর হবে।’

শনিবার (৯ নভেম্বর) সন্ধ্যায় ফটিকছড়ি উপজেলা সদরের একটি কমিউনিটি সেন্টারে বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন ফটিকছড়ি থানা শাখার আয়োজনে শ্রমিক সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। এর আগে, বিকেল থেকে উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে শত শত শ্রমিক খণ্ড খণ্ড মিছিলে সমাবেশে যোগ দেন।

আলাউদ্দিন সিকদার বলেন, ৫৩ বছরে বার বার ক্ষমতার পালাবদল হয়েছে। বিভিন্ন সময় বিভিন্ন দল রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় এসেছে। এ শ্রমিকদেরকে সিড়ি বানিয়ে ক্ষমতা এসেছে কিন্তু ক্ষমতায় এসে তারা শ্রমিকদের অধিকারকে কলঙ্কিত করেছে। শ্রমিকদের ন্যায অধিকার না দিয়ে তাদের ব্যবহার করে অনেকেই ক্ষমতায় গিয়েছে। কিন্তু শ্রমিকদের অধিকার দেয়নি। আমরা বাংলাদেশকে সকল ধরণের বৈষম্যহীন রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে তুলতে চায়। শ্রমিক ভাইদেরকে ও শ্রমিক নেতৃবৃন্দকে আমরা অনুরোধ করবো। আসুন যে যেখানে যা সেক্টরে কাজ করি আমরা শ্রমিকদের অধিকার যেন নিশ্চিত করি।

শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের ফটিকছড়ি উপজেলা শাখার সভাপতি মো. নাজিম উদ্দিন ইমু সভাপতিত্বে সমাবেশে বিশেষ অতিথি ছিলেন, চট্টগ্রাম মহানগর জামায়াত সেক্রেটারি ও সংগঠনের উপদেষ্টা অধ্যক্ষ মুহাম্মদ নূরুল আমীন, প্রধান বক্তা শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সহ সেক্রেটারি জেনারেল মুহাম্মদ লুৎফর রহমান।

প্রধান বক্তা মুহাম্মদ লুৎফর রহমান বলেন, ইসলামি শ্রমনীতি প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে শ্রমিকদের ন্যায্য অধিকার ফিরিয়ে দেয়া সম্ভব হবে। শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন শ্রমিকদের অধিকার আদায়ে কাজ করে। যারা সংগঠনের নাম দিয়ে লুটপাঠ করার চিন্তা করবে তাদের ছাড় দেবে না এ সংগঠনের খেটে খাওয়া শ্রমিকেরা।

চট্টগ্রাম নগর জামায়াতের সেক্রেটারি অধ্যক্ষ মুহাম্মদ নুরুল আমীন বলেন, মালিক শ্রমিকের সম্পর্ক এমন হতে হবে যেভাবে মালিক শ্রমিক নামাজের এক কাতারে দাঁড়াতে ভেদাভেদ থাকে না। এই শিক্ষা দেয় আমাদের ইসলাম। ইসলাম এমন একটা সমাজ চাই, সমাজের সকল মানুষ তার ন্যায্য যে পাওনা সেটি পাবে।

তিনি আরও বলেন, জামায়াতে ইসলামি যদি ক্ষমতায় যায় ১০ বছরের মধ্যে দারিদ্রতা দূর হয়ে যাবে ইনশাআল্লাহ। এটির জন্য সৎ লোকের শাসন দরকার। যারা বিদেশে টাকা পাচার করবেন না, চুরি করবেন না। এরকম একটা বৈষম্যহীন ন্যায় ও ইনসাফ সমাজ আমরা চাই। যেখানে সব ধর্মে মানুষ নিরাপদ থাকবে। সেই সমাজ বির্নিমাণে কাজ করে যাচ্ছে বাংলাদেশ জামায়াত ইসলামী।

সমাবেশে অন্যান্যদের অথিতি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন চট্টগ্রাম উত্তর জেলার সভাপতি মুহাম্মদ ইউসুফ বিন আবু বক্কর, সংগঠনের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফজলুল করিম, সংগঠনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক শহীদুল ইসলাম, চট্টগ্রাম উত্তর জেলার সেক্রেটারি মুহাম্মদ জসিম উদ্দীন আজাদ, জেলা জামায়াতের এ্যাসিস্টেন্ট সেক্রেটারি এজহারুল ইসলাম, ফটিকছড়ি থানা জামায়াতের আমীর মাস্টার নাজিম উদ্দিন সিকদার, নায়েবে আমীর এডভোকেট মুহাম্মদ ইসমাঈল গণি, থানা জামায়াতের সেক্রেটারি ইউসুফ বিন সিরাজ, মুহাম্মদ আব্দুর রহিম, শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন ফটিকছড়ি থানার সেক্রেটারি গাজী মো. বেলাল উদ্দিন প্রমুখ।

জামায়াতের পাইন্দং ইউনিয়ন শাখার সেক্রেটারি এরশাদ উল্লাহ্ন সঞ্চালনায় সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন এডভোকেট আলমগীর মুহাম্মদ ইউনুস, লন্ডন প্রবাসী ব্যবসায়ী মাসুদুর রহমান, আনোয়ারুল আজিম, শ্রমিক নেতা লোকমান চৌধুরী, ইব্রাহীম খলিল, ওসমান গণি প্রমুখ।

এ সম্পর্কিত আরও খবর