‘রাজনীতিতে গুণগত পরিবর্তন ছাড়া মানুষের মুক্তি আসবে না’

বিবিধ, রাজনীতি

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম | 2024-11-13 20:27:08

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম পীর সাহেব চরমোনাই বলেছেন, রাজনীতিতে আদর্শিক ও গুণগত পরিবর্তন ছাড়া মানুষের মুক্তি আসবে না।

তিনি বলেন, বার বার নেতা ও দল পরিবর্তনে কোন কাজে আসবে না। যত দিন পর্যন্ত আদর্শভিত্তিক ন্যায়পরায়ণ, আল্লাহভীরু শাসক না আসবে, তত দিন পর্যন্ত শান্তির আশা করা বৃথা।

বুধবার (১৩ নভেম্বর) বিকেলে কক্সবাজারের চকরিয়া থানা সংলগ্ন মাঠে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ কক্সবাজার জেলার চকরিয়া থানা শাখা আয়োজিত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম বলেন, ১৯৭১ থেকে ২০২৪ পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি বৈষম্যের শিকার হয়েছে মুসলমান। আজও টুপি পরে অনেক অফিসে ঢোকা যায় না। দাড়ি রেখে অনেক জায়গায় যাওয়া যায় না। মুসলমান দেখলেই কটূক্তি করা হয়। মুসলমানদের সন্ত্রাসী বলা হয়। বোরকা পরা নারীদের চাকরি দেওয়া হয় না। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে দাড়ি-টুপি রেখে চলা যায় না। সবচেয়ে বৈষম্যের শিকার হয়েছে মুসলমান। এরপর বৈষম্যের শিকার হয়েছেন আলেমরা।

এ দেশ মুসলমানদের জানিয়ে তিনি বলেন, তবে দেশে সবার অধিকার রয়েছে। ইসলাম অনুযায়ী দেশ শাসন চলবে। আমেরিকা, রাশিয়া, চীন, জাপানের সঙ্গে ও যারা ভারতের গোলামি করেন, তাদের শাসক হিসেবে দেখতে চাই না।

তিনি আরও বলেন, গণহত্যাকারীরা দেশ থেকে কিভাবে পালালো তার জবাব কে দেবে?

ইসলামী আন্দোলনের আমির বলেন, ইসলামি অর্থনীতি চালু হলে আগামী পাঁচ বছরে দেশে কোনো গরিব থাকবে না। দেশে যে অর্থনীতি চালু আছে, সেটা গরিবকে আরও গরিব বানাবে। ধনীরা আরও ধনী হবে। তিনি বলেন, কোনো ইসলামবিদ্বেষী ও সমাজ বিধ্বংসী বিকৃত রুচির মানুষকে আমরা বাংলাদেশে উপদেষ্টা দেখতে চাই না।

তিনি আরও বলেন, আমরা রাজপথে নেমেছিলাম জীবনের মায়া ত্যাগ করে এবং মানুষের অধিকার ফিরিয়ে দেব বলে। যেখানে থাকবে না লুটপাট, চাঁদাবাজি, ধর্ষণ, গুম, খুন, অত্যাচার, অবিচার ও দখলদারি। ভেবেছিলাম ৫ আগস্টের পরে সাম্য রক্ষা হবে, জুলুম-অত্যাচার দূর হবে, ব্যবসায়ীরা ব্যবসা করবে, চাঁদা থাকবে না। মানুষ নির্বিঘ্নে হাঁটবে, ভয় থাকবে না।

পীর সাহেব চরমোনাই বলেন, একজন মহিলা একা একা হাঁটলে ধর্ষিত হবেন না, ইভটিজিংয়ের শিকার হবেন না। যেখানে শ্রমিকসহ সবার অধিকার প্রতিষ্ঠিত হবে। আমারা সেই সমাজ ব্যবস্থা চাই। কিন্তু আমরা কি দেখলাম, ৫ আগস্টের পর আবারও দখলদারি, চাঁদাবাজি, খুন, মিথ্যা মামলা, জুলুম, অত্যাচার, অবিচার হচ্ছে।

তিনি বলেন, উপদেষ্টা পরিষদের নতুন উপদেষ্টা চিত্রনির্মাতা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী তার নির্মিত নাটক ও সিনেমার মাধ্যমে সমাজে পরকীয়া, সমকামিতা এবং বিকৃত রুচির প্রসারে সমাজ বিধ্বংসী ভূমিকা পালন করে আসছে। আমাদের ধর্মীয় ও সামাজিক মূল্যবোধের চরম বিরোধী এমন একজন বিকৃত রুচির মানুষ জুলাই বিপ্লব পরবর্তী সরকারের উপদেষ্টা হতে পারেন না। তাছাড়া ফারুকী ২০১৩ সালে মতিঝিলের শাপলা চত্ত্বরে নিরীহ হেফাজত কর্মীদের ওপর আওয়ামী ফ্যাসিস্টদের চালানো গণহত্যার একজন সমর্থক।

এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন দলের কেন্দ্রীয় শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক আলহাজ জান্নাতুল ইসলাম, চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা দেরাওয়ার হোসাইন সাকী, জেলা সভাপতি মাওলানা মোহাম্মাদ আলী। মুফতী শামসুল হক কাসেমীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে জেলা ও থানান নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন।

এ সম্পর্কিত আরও খবর