বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, বাংলাদেশ শান্তিপূর্ণ একটি দেশ। ভয়েস অব আমেরিকা জরিপ করেছে, সবচেয়ে নিরাপদে আছে বাংলাদেশের সংখ্যালঘুরা। কিন্তু ভারত ইচ্ছাকৃতভাবে, পরিকল্পিতভাবে গণতন্ত্রের পথে হাটার যে সুযোগ হয়েছে সেটিকে নস্যাৎ করার জন্য ও ছাত্র-জনতার আন্দলোনের স্প্রিট, চেতনাকে ধূলিসাৎ করার জন্য পরিকল্পিত অপপ্রচার করছেন। ভারতের বিভিন্ন জায়গা থেকে প্রচারণাগুলো করা হচ্ছে।
শনিবার (৩০নভেম্বর) সন্ধ্যায় নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ‘ওরা আমার জন্মভূমি চুষে খেতে চায়’ গানের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, সামরিক ও রাজনৈতিক পরিমণ্ডলে একটি কথা আছে পঞ্চম বাহিনী। এই পঞ্চম বাহিনীর উপদ্রব এখন বাংলাদেশে ব্যাপক ভাবে হচ্ছে। ইসকন বলে একটি সংগঠন আমরা জানি এটি ধর্মীয় সংগঠন। কিন্তু হঠাৎ তারা এতো বেশি উত্তপ্ত হয়ে গেলো কেন? তাদের মধ্যে একটা আগ্রাসী মনভাব কেন বিস্তার লাভ করছে? এদেরকে আমাদের নতুন করে চিনতে হবে। এই দেশে তো যুগ যুগ ধরে হিন্দু মুসলমান সবাই একসাথে বাস করেছেন। আমরা কেউ কারোর প্রতি বিদ্বেষ পোষণ করিনি। কেউ কখনো একে অপরের প্রতি হিংসা প্রতিহিংসায় ভুগিনি। আজকে কেন এই কথা গুলো আসছে? কারা এই বিদ্বেষ পোষণ করছে? তারা এখানে সংঘাত করছে আর ভারতের সংবাদমাধ্যম অপপ্রচারের ঢেউ চালাচ্ছে- এতে বোঝা যায় একটা দুইটা নয়, অনেক পঞ্চমবাহিনী বাংলাদেশে তৈরি করে গেছেন শেখ হাসিনার সহায়তায় পার্শ্ববর্তী দেশের পলিসি মেকাররা। এই পঞ্চম বাহিনী সম্পর্কে সচেতন থাকতে হবে।
তিনি আরও বলেন, ভারতের যে সংগ্রাম ছিল তা হলো স্বাধীনতা সংগ্রাম। ভারত যুদ্ধের মধ্যদিয়ে স্বাধীনতা লাভ করেনি। যুদ্ধ করেছি আমরা, আমাদের সেই অভিজ্ঞতা আছে। সেখানকার এক ডাক্তার বলেছেন, ভারত নাকি আমাদের চিকিৎসা দেবে না। তারা যে বাংলাদেশিদের প্রতি কি পরিমাণ ঈর্ষা ও বিদ্বেষে ভোগেন তা প্রমাণ হচ্ছে। বাংলাদেশের ১ শতাংশ মানুষ চিকিৎসা নিতে যায় ভারতে। কিন্তু এতো বড় জনগোষ্ঠি তাদের কি করে চিকিৎসা হয়? আমাদের অত্যান্ত যোগ্য ডাক্তার রয়েছেন। আপনাদের মুখাপেক্ষী আমরা নই। আমরা ভিত্তিহীন নই, সবকিছুই অবলম্বন আমাদের রয়েছে। আমাদের একটি রাষ্ট্র আছে, আমাদের যোগাযোগ ব্যবস্থা অনেক ভালো।
রিজভী বলেন, ভারতের চেয়ে বাংলাদেশের স্যানিটেশন সিস্টেম অনেক উন্নতমানের। কলকাতা থেকে দিল্লি পর্যযন্ত রেললাইনের উন্মুক্ত প্রাঙ্গণ ব্যবহার করেন। সেখানে আমাদের অত্যান্ত উন্নত স্যানিটেশন সিস্টেম। আমাদের গ্রামেগঞ্জেও কমোড ব্যবহার করে মানুষ। তাহলে আপনারা কিসের অহংকার করেন। প্রত্যেক দিক দিয়ে আমরা আত্মনির্ভরশীল। গ্লোবালাইজেশনের যুগে হয়তো আমাদের কিছু পেয়াজ ঘাটতি পড়লে আমরা আমদানি করি। তবে তা টাকা দিয়ে, বিনা পয়সায় নয়। আমাদের লোক যারা চিকিৎসা করতে যায় তারা ডলার খরচ করে আসে। বরং কলকাতা থেকে শুরু করে অন্যান্য অনেক হাসপাতাল, ক্লিনিকগুলো চলে বাংলাদেশের মানুষের টাকায়।
সঙ্গীত পরিচালক ও জাসাস জাতীয় নির্বাহী কমিটির যুগ্ন আহ্বায়ক ইথুন বাবুর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপি নেত্রী শাম্মী আক্তার, জাসাসের সাবেক সহ-সভাপতি রশিদুজ্জামান মিল্লাতসহ অন্যান্য নেতৃবিন্দ।