ঐক্য যেন আবার বাকশালে রূপান্তর না হয়, সতর্ক করলেন মঈন খান

বিএনপি, রাজনীতি

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম | 2024-12-05 14:49:15

ঐক্য করতে গিয়ে যদি আবার বাকশাল করে ফেলি তাহলে কিন্তু সেই ঐক্য কাজ হবে না বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান। এজন্য তিনি সবাইকে সতর্ক থাকতে বলেছেন।

বৃহস্পতিবার (৫ ডিসেম্বর) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে বাংলাদেশের নদী-পানির অধিকার আন্দোলনের পুরোধা, আন্তর্জাতিক ফারাক্কা কমিটির নেতা আতিকুর রহমান সালুর স্মরণসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন। স্মরণ সভাটির আয়োজন করে আন্তর্জাতিক ফারাক্কা কমিটি (আইএফসি)।

জাতীয় ঐক্য গঠনে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে অন্তর্বর্তী সরকারের বৈঠক নিয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, ঐক্য অবশ্যই প্রয়োজন জাতি, ধর্ম, বর্ণ, নির্বিশেষে। এতে কারো কোন দ্বিমত থাকতে পারে না। কিন্তু এই প্রশ্নের সতর্ক করে দিতে চাই, ইংরেজিতে একটা কথা আছে, ইউনিটি ইন ডাইভারসিটি। আমরা ঐক্য করতে গিয়ে যদি আবার বাকশাল করে ফেলি তাহলে কিন্তু সেই ঐক্যে কাজ হবে না। আমাদের সতর্ক থাকতে হবে। ডেমোক্রেসি মুখে বলা সহজ কিন্তু বাস্তবে রূপদান করা কিন্তু এতো সহজ না।

মঈন খান বলেন, বাংলাদেশের মানুষের মনস্তাত্ত্বিক যে অবস্থান, স্বাধীনতার যে আবেদন, আকাঙ্ক্ষা, কথা বলার ইচ্ছে, ভোট দেবার যে প্রচেষ্টা। আমি কিন্তু ব্যবসায়ী বা রাজনৈতিক নেতাদের কথা বলছি না আমি বলছি হাটে, মাঠে ঘাটে, ফসলের ক্ষেতে, রিকশাচালক, গার্মেন্টস কর্মী তাদের কথা বলছি। তাদের আকাঙ্ক্ষা কিন্তু অর্থ, বিত্ত, বৈভব বা ক্ষমতা নয়। তাদের আকাঙ্ক্ষা প্রত্যাশিতভাবে, আমি ৫ বছর একটি ভোট দিবো।

তিনি বলেন, নতুন প্রজন্মের কথা আপনারা বলেন, কোথায় নতুন প্রজন্ম? বিগত ১৫-২০ বছর বা দুই দশক ধরে আমাদের নতুন প্রজন্মের কেউ ভোট দিতে পেরেছে? পারেনি তো। আরও বলেন, বাংলাদেশের তৃণমূলের মানুষের কথা আমি একটু আগে বলেছি। তাদের সামনে দুটি জিনিস উপস্থাপন করেন, এক হাতে অর্থবিত্ত, ক্ষমতা, অন্য হাতে স্বাধীনতা। তবে একটি কন্ডিশন যেকোন একটাই পাবে তাহলে আপনারা অবাক-বিস্ময়ে লক্ষ করবেন তৃণমূলের মানুষ যারা খেতে পায় না, খাবারের জন্য অনেক কষ্ট করে তারা বলবে, আমি অর্থবিত্ত চাই না, আমি ভোটের অধিকার চাই। এটাই হচ্ছে বাংলাদেশের মানুষের সত্য।

দুঃখের বিষয় হচ্ছে আমরা সে সত্যে বিশ্বাস না করে অর্থ, বিত্ত, বৈভব, ক্ষমতা, পজিশন, মন্ত্রী, প্রধানমন্ত্রী, রাষ্ট্রপতি এগুলো হতে চাই বলেন ড. আব্দুল মঈন খান।

অন্তর্বর্তী সরকারকে উদ্দেশ্য করে বিএনপির সিনিয়র এই নেতা বলেন, আজকে সংস্কারের কথা বলছেন খুব ভাল কথা, সংস্কার তো লাগবেই। কিছু মনে করবেন না, আমি স্পষ্ট ভাষায় বলে দেই, আমরা যতক্ষণ পর্যন্ত না নিজেরা নিজেদের সংস্কার না করবো ততক্ষণ কোনে সংস্কারই কাজে আসবে না।

স্মরণসভায় আরও বক্তব্য রাখেন জাতীয় পার্টির (জাফর) চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, আইএফসি সভাপতি অধ্যাপক জসীম উদ্দিন আহমেদ, আইএফসি চেয়ারম্যান সৈয়দ টিপু সুলতান, আইএফসি সমন্বয়ক মোস্তফা কামাল মজুমদার, আইএফসি বাংলাদেশের সহ-সভাপতি ড. নাজমা আহমেদ, সাবেক এমপি জহিরুদ্দিন স্বপন, ভাসানী অনুসারী পরিষদের আহ্বায়ক শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু, এফ কে মো. এমদাদ খান, বিএফইউজে মহাসচিব কাদের গনি চৌধুরী, জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক আইয়ুব ভূঁইয়া প্রমুখ।

এ সম্পর্কিত আরও খবর