স্কিন ক্যান্সারের সাবান উদ্ভাবন করে বিশ্ববিখ্যাত ‘টাইম’ ম্যাগাজিনের শিরোনাম হয়েছে ইথিওপিয়ার বংশোদ্ভুত ১৫ বছরের এক মার্কিন শিশু। ইতোমধ্যে ‘শিশু-বিজ্ঞানী’ হিসেবে স্বীকৃতি মিলেছে তার। তাকে ‘কিড অব দ্য ইয়ার’ হিসেবে অভিহিত করা হয়েছে।
ওই শিশুর নাম- হেমান বেকেলে। সে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভার্জিনিয়া রাজ্যে বাসিন্দা। স্বল্প খরচে স্কিন ক্যান্সারের বার সাবান উদ্ভাবন করায় বেকেলেকে সম্মান জানিয়েছে টাইম ম্যাগাজিন।
টাইম ম্যাগাজিন জানায়, হেমানের বয়স যখন মাত্র ৪ বছর, তখন সে হাতের কাছে যা কিছু পেতো, তাই দিয়ে বিজ্ঞানের গবেষণা করতো। সে সংগৃহীত বিভিন্ন জিনিস মিশিয়ে কিছু একটা করার চেষ্টা করতো।
বেকেলের বয়স যখন ৬ বছর, তখন ক্রিসমাস উদযাপনের জন্য পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে তাকে রসায়নের কিছু সামগ্রী উপহার হিসেবে দেওয়া হয়। এ সময় হেমান চিন্তা করে, সে এমন কিছু আবিষ্কার করতে চায়, যা পৃথিবীকে সাহায্য করবে।
হেমান বেকেলে ইথিওপিয়ায় বড় হয়েছে। সে সমসয় সে দেখেছে, কীভাবে সূর্যের তাপে তার আশেপাশেরে মানুষের বিশেষ করে শ্রমিকদের হাতের ত্বক ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
এসময় সে চিন্তা করে, কীভাবে সূর্যের তাপ প্রতিরোধক কিছু ব্যবহার না করে কিছু একটা করা যায় কী না। সে অবাক হয়ে যায়, যখন সে জানতে পারে স্কিন (ত্বক) ক্যান্সার চিকিৎসা করাতে ৪২ হাজার ডলার পর্যন্ত ব্যয় হয়ে যায়। এরপর হেমান ভাবতে থাকে, কীভাবে কম খরচে স্কিন ক্যান্সারের চিকিৎসা সেবা উদ্ভাবন করা যায়।
তখন হেমান এ বিষয়ে পড়াশোনা শুরু করে। সে একসময় জানতে পারে, স্কিন ক্যান্সারে চিকিৎসা করাতে ইমিকুমোড নামে এক ধরনের ওষুধ ক্রিমে পাওয়া যায়। তখন তার মাথায় কাজ করতে থাকে, এটি দিয়ে যদি একটি সাবান বানানো যায়, তাহলে স্কিন ক্যান্সারের খরচ একেবারে হাতের নাগালে চলে আসবে। এরপর সেটি নিয়ে গবেষণা শুরু করে হেমান বেকেলে।
২০২৩ সালে ‘৩এম’স ইয়াং সায়েন্টিস্ট চ্যালেঞ্জ’-এ অংশ নিতে আবেদন করে হেমান বেকেলে। আবেদনের পর বিচারকদের সামনে বক্তব্য রাখতে তার ডাকও পড়ে।
তার গবেষণা প্রতিবেদন উপস্থাপনের তাকে বিজয়ী হিসেবে ঘোষণা করা হয় এবং তাকে ২৫ হাজার ডলার পুরস্কার হিসেবে দেওয়া হয়।
বেকেলে তার বর্তমান ল্যাব পার্টনার ভিটো রেবেকার সঙ্গে দেখা করে। রেবেকা মূলত একজন মলিউক্যুলার জীববিজ্ঞানী এবং অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসর।
রেবেকা হেমান বেকেলের কাজ সম্পর্কে জানার চেষ্টা করেন। তার সম্পর্কে জানার পর এই শিশু-বিজ্ঞানীকে উৎসাহ দিতে থাকেন।
বর্তমানে এই দুইজন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জনস হোপকিনস ইউনিভার্সিটির ল্যাব কাজ করছেন- স্কিন ক্যান্সারের জন্য উদ্ভাবিত বার সাবানের প্রভাব নিয়ে।