দুইজন অপেশাদার মহাকাশচারীসহ মোট চার নভোচারী নিয়ে পৃথিবীতে নিরাপদে ফিরে এসেছে স্পেসএক্স পোলারিস ডন ক্যাপসুল।
এর আগে ১০ সেপ্টেম্বর চার মহাকাশচারী নিয়ে স্পেসএক্স পোলারিস ডন পৃথিবীর বাইরে যায়। তখন পৃথিবী পৃষ্ঠ থেকে ৪শ' ৩৫ মাইল (৭শ' কিলোমিটার) উপরে অবস্থান করছিল।
রাষ্ট্রীয় কোনো মহাশূন্য গবেষণা সংস্থার বাইরে বাণিজ্যিক মিশন ছিল এই মহাশূন্য ভ্রমণ।
রোববার (১৫ সেপ্টেম্বর) বিবিসি জানায়, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডার উপকূলে স্পেসএক্স পোলারিস ডনের ক্যাপসুল চারজন নভোচারী নিয়ে নিরাপদে অবতরণ করে।
খবরে জানানো হয়, এটি যখন পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে ফিরে আসে তখন বাতাসের সঙ্গে সংঘর্ষ ও তীব্র চাপে এর তাপমাত্রা ছিল ১ হাজার ৯শ' ডিগ্রি সেলসিয়াস (৩ হাজার ৫ ডিগ্রি ফারেনহাইট) আর গতি ছিল ঘণ্টায় ৭ হাজার মাইল (২৭ হাজার কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টা)।
পৃথিবীতে অবতরণের পর মাইক্রোব্লগিং সাইট এক্সে (সাবেক টুইটার) এক বার্তায় স্পেসএক্স জানায়, ‘ড্রাগনের স্প্ল্যাশডাউন’ নিশ্চিত হয়েছে! পৃথিবীতে স্বাগতম!
এদিকে, স্পেসএক্সের নিরাপদে ফিরে আসার পর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রীয় গবেষণা সংস্থা নাসা জানায়, বাণিজ্যিক মহাশূন্য শিল্পের জন্য এটি একটি বড় ধরনের লাফ!
মহাশূন্যে অবস্থানকালে স্পেসএক্স পোলারিস ডন ৪০টিরও বেশি বৈজ্ঞানিক গবেষণা পরিচালনা করে। এর মধ্যে মহাশূন্যে অভিযানকালে মানুষের শরীরে এর প্রভাব, দ্য ড্রাগন স্পেসক্রাফট ও স্পেসএক্সের স্টারলিংক স্যাটেলাইটের মধ্যে ইন্টারস্টেলার লেজার যোগাযোগ পরীক্ষা করা হয়।
মঙ্গলবার (১০ সেপ্টেম্বর) ৪ জন মহাকাশচারী নিয়ে ৫ দিনের যাত্রায় মহাশূন্যে যাত্রা করে স্পেসএক্স পোলারিস ডন এবং ১৫ সেপ্টেম্বর পৃথিবীতে ফিরে আসে। ৪ মহাকাশচারীর মধ্যে দুইজন ছিলেন মার্কিন বিলিনিয়র এবং বাকি দুইজন স্পেসশিপের ক্রু।
যখন মিশন কমান্ডার বিলিয়নিয়র জ্যারেড আইজ্যাকম্যান ক্যাপসুলের দরজা খুলে নিজের শরীরের কিছু অংশ বের করে পৃথিবীর দিকে তাকান, তখন পৃথিবী পৃষ্ঠ থেকে ৭শ' ৫৭ কিলোমিটার উচ্চতায় (৪শ' ৫৭ মাইল) স্পেসএক্স পোলারিস ডন ঘণ্টায় ২৫ হাজার কিলোমিটার (১৫ হাজার ৫শ' মাইল) গতিতে ঘুরছিল। তাকে দেখে পৃথিবী থেকে যারা সম্প্রচার দেখছিলেন, তারা উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন।
জ্যারেড আইজ্যাকম্যানের পর স্পেসএক্স ইঞ্জিনিয়ার সারাহ গিলিস একইভাবে স্পেসশিপের বাইরে এসে পৃথিবীকে দেখেন। এ সময় তাদের দুজনের পরনের ছিল মহাশূন্যে নভোচারীদের জন্য বিশেষভাবে তৈরি স্পেসস্যুট।
স্পেসএক্স পোলারিস ডনের ভেতরে নভোচারী হিসেবে ছিলেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এয়ার ফোর্সের কমান্ডার স্কট ‘কিড’ এবং স্পেসএক্স ইঞ্জিনিয়ার ও মেডিকেল কর্মকর্তা আন্না মেনন।