পেনাল্টি শুটআউট নিয়ে দুশ্চিন্তা ছিল স্পেনের কোচ লুইস এনরিকের। বিশ্বকাপের শেষ ষোলোতে মরক্কোর মুখোমুখি হওয়ার আগে জানিয়েছিলেন সেই দুর্বলতা কাটাতে প্রয়োজনীয় অনুশীলনের কথা। জানিয়েছিলেন ফুটবলারদের প্রত্যেককে অন্তত এক হাজার পেনাল্টি অনুশীলন করতে তিনি বলেছেন।
যেখানে দুর্বলতা সেখানেই হার মানল স্পেন। বিশ্বকাপে আরও একবার পেনাল্টি শুটআউটে হেরে গেল তার দল। মরক্কোর বিপক্ষে স্পেনের নেওয়া তিনটি পেনাল্টি শুটআউটের একটিও গোল হয়নি।
দুইটি শট রুখে দিয়েছেন মরক্কোর গোলরক্ষক ইয়াসিন বোনো, আর অন্যটি লেগেছে গোলপোস্টে। টাইব্রেকারে পাবলো সারাবিয়ার শট পোস্টে লাগার পর কার্লোস সলের ও সের্হিও বুসকেতসের শট ঠেকিয়ে দেন ইয়াসিন বোনো।
মঙ্গলবার আল রাইয়ানের এডুকেশন সিটি স্টেডিয়ামে কোয়ার্টার ফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে স্পেন ও মরক্কোর ম্যাচটি নির্ধারিত ও অতিরিক্ত সময়ে গোলশূন্য ড্রয়ের পর টাইব্রেকারে ৩-০ গোলে জিতেছে মরক্কো।
গত ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপে ইতালির বিপক্ষে একইভাবে হারে স্প্যানিয়ার্ডরা। এখানেই শেষ নয়, স্পেনের পেনাল্টি শুটআউট দুর্ভাগ্য আছে তিনবার। ২০০২ বিশ্বকাপে কোয়ার্টার ফাইনালে দক্ষিণ কোরিয়ার কাছে ৫-৩ গোলে হারে স্পেন, নির্ধারিত সময়ে গোলশূন্য ছিল ম্যাচটি। ১৯৮৬ বিশ্বকাপে কোয়ার্টার ফাইনালে নির্ধারিত সময়ে ১-১ গোলে ড্র ছিল ম্যাচ, এরপর পেনাল্টি শুটআউটে স্পেন হারে ৫-৪ গোলে। ২০১৮ বিশ্বকাপে স্বাগতিক রাশিয়ার বিপক্ষে শেষ ষোলোর ম্যাচে স্পেন টাইব্রেকারে হারে ৫-৪ গোলে, নির্ধারিত সময়ে ম্যাচটি ছিল ১-১ গোলের সমতায়।
যে টাইব্রেকারে হেরে স্পেন বিদায় নিলো বিশ্বকাপ থেকে সেই টাইব্রেকার নিয়ে সতর্ক ছিলেন কোচ লুইস এনরিকে। ম্যাচ-পূর্ব সংবাদ সম্মেলনে এনরিকে বলেছিলেন, ‘এক বছর আগে সবাইকে জানিয়েছি আমাদের অন্তত ১ হাজার পেনাল্টি প্রাকটিস করতে হবে। পেনাল্টিতে নার্ভ ধরে রাখা কষ্ট। আমরা প্রত্যেকবার প্রাকটিস শেষ করে পেনাল্টির প্রাকটিস করেছি।’
এক হাজার পেনাল্টি শুটআউটের প্রাকটিস সত্ত্বেও মরক্কোর বিপক্ষে এনরিকের দল তিনটি শট থেকে একটিও গোল করতে পারেনি। কেবল টাইব্রেকারেই ব্যর্থতা নয়, ম্যাচের ১২০ মিনিটে ৭৭ শতাংশ বল দখলে রেখে দলটি গোলে শট নেয় ১৩টি যার মাত্র একটি ছিল লক্ষ্যে। এই সময়ে তারা পাস খেলেছে ১ হাজার ১৯টি।
২০১০ সালে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর স্পেন সবশেষ তিন আসরে একবারও কোয়ার্টার ফাইনালে উঠতে পারেনি। ২০১৪ বিশ্বকাপে গ্রুপ পর্ব থেকে বিদায়ের পর এবার নিয়ে টানা দুই আসরে তারা শেষ ষোলো থেকে বিদায় নিলো।