বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে উঠে গেল ফ্রান্স। শনিবার কোয়ার্টার ফাইনালে ইংল্যান্ডকে ২-১ গোলে হারিয়ে দিল তারা। সেমিফাইনালে ফ্রান্সের সামনে মরক্কো। আগামী বুধবার খেলা দুই দলের।
ফ্রান্স-ইংল্যান্ড ম্যাচে নজর ছিল কিলিয়ান এমবাপের দিকে। এমবাপেকে বোতলবন্দি করে রাখার জন্য কাইল ওয়াকারকে রেখেছিলেন ইংরেজ কোচ গ্যারেথ সাউথগেট। এমবাপে নিজে গোল করতে পারলেন না ঠিকই। কিন্তু প্রথম গোলের ক্ষেত্রেই তিনিই অবদান রাখলেন। সারা ম্যাচে এমবাপে একাধিকবার তার মার্কারকে বোকা বানালেন। গোল না করেও নায়ক হয়ে থাকলেন তিনিই।
প্রথম থেকে আক্রমণের রাশ ছিল ফ্রান্সের হাতেই। প্রথম আক্রমণও করে তারাই। ডান দিকে বল পেয়েছিলেন ওসমানে দেম্বেলে। তিনি পাস দেন আঁতোয়া গ্রিজম্যানকে। সেখান থেকে অলিভিয়ের জিহুর হেডার বাঁচিয়ে দেন ইংল্যান্ডের গোলকিপার জর্ডান পিকফোর্ড।
তবে প্রথম গোলের জন্য বেশিক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়নি ফ্রান্সকে। ১৭ মিনিটে দূরপাল্লার শটে চোখধাঁধানো গোল করে চমকে দেন অরেলিয়েঁ চুয়ামেনি। দুর্দান্ত প্রতি আক্রমণের ফল পায় ফ্রান্স। ডেক্লান রাইসকে টপকে বল নিয়ে এগিয়ে যান কিলিয়ান এমবাপে। তার থেকে বল পেয়ে গ্রিজম্যান পাস দেন চুয়ামেনি। বক্সের বেশ খানিকটা বাইরে থেকে নীচু শটে গোল করেন রিয়াল মাদ্রিদের ফুটবলার। কিছুক্ষণ পরেই সুযোগ পেয়েছিল ইংল্যান্ড। জর্ডান হেন্ডারসন বল ভাসিয়েছিলেন বক্সে। হেড করতে পারেননি জুড বেলিংহ্যাম। এর পরে বক্সের বাইরে ফেলে দেওয়া হয় হ্যারি কেনকে। তবে পেনাল্টির আবেদনে কর্ণপাত করেননি রেফারি।
প্রথমে কিছুটা চাপে থাকলেও, ধীরে ধীরে ইংল্যান্ডের খেলা খুলতে শুরু করে। বেশ কয়েকটি আক্রমণ করে তারা। তবে প্রথমার্ধে সমতা ফেরাতে পারেনি। দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই একটা ভাল সুযোগ পেয়ে গিয়েছিল ইংল্যান্ড। ফিল ফোডেনের কর্নার ক্লিয়ার করতে পারেনি ফ্রান্স। হেন্ডারসনের থেকে পাস পেয়ে বেলিংহ্যামের দিকে ক্রস ভাসান লুক শ। বেলিংহ্যাম ভলি আঙুল ছুইয়ে বের করে দেন ফ্রান্সের গোলকিপার হুগো লরিস। তার পরেই পেনাল্টি পায় ইংল্যান্ড। ডান দিক থেকে ইনসাইড কাট করে ফ্রান্সের বক্সে ঢুকতে গিয়েছিলেন সাকা। তাকে অবৈধভাবে বাধা দেন চুয়ামেনি। পেনাল্টি থেকে সমতা ফেরান হ্যারি কেন।
দু’দলই জয়সূচক গোলের লক্ষ্যে আক্রমণাত্মক খেলতে থাকে। ইংল্যান্ডের দু’টি দারুণ আক্রমণ বাঁচিয়ে দেন লরিস। অন্য দিকে, ফ্রান্সের হয়ে সুযোগ পেয়েছিলেন আন্দ্রেয়া হাঁবিয়। ডান দিক থেকে বল ভাসিয়েছিলেন জুলস কৌন্ডে। হাঁবিয়কে মার্ক করেননি কোনও ইংরেজ ডিফেন্ডার। চলতি বলে হাঁবিয় জোরালো শট নিলেও পিকফোর্ড বাঁ দিকে ঝাঁপিয়ে পড়ে বাঁচিয়ে দেন। এর পর বেশ কিছু আক্রমণ করে ইংল্যান্ড। কিন্তু কোনওটিই কাজে লাগাতে সফল হয়নি তারা।
উল্টে এগিয়ে যায় ফ্রান্সই। ৭৭ মিনিটের মাথায় ডেম্বেলের থেকে পাস পেয়ে সপাটে শট মেরেছিলেন জিহু। কিন্তু পিকফোর্ড সেটা বাঁচিয়ে দেন। পরের মিনিটেই বাঁ দিক থেকে গ্রিজম্যানের ক্রসে মাথা ছুঁইয়ে গোল করেন জিহু। নাটকের তখনও বাকি ছিল। জিহুর গোলের চার মিনিট পরেই আক্রমণে উঠেছিল ইংল্যান্ড। ম্যাসন মাউন্টকে বক্সের মধ্যে পিছন থেকে ধাক্কা মেরে ফেলে দেন থিয়ো হের্নান্দেস। ভার-এর সাহায্য দিয়ে পেনাল্টি দেন রেফারি। কিন্তু হ্যারি কেনের শট বারের অনেকটা উপর দিয়ে উড়ে যায়। ম্যাচে ফেরার এটাই ছিল ইংল্যান্ডের কাছে সেরা সুযোগ। পরের দিকে আক্রমণ করলেও গোল করতে পারেনি তারা। একদম শেষ মুহূর্তে বক্সের বাইরে একটি ফ্রিকিক পেয়েছিল ইংল্যান্ড। কিন্তু মার্কাস র্যাশফোর্ডের শট অল্পের জন্য লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়।