কিছু কিছু ছবি থাকে যা ইতিহাসে নিজের ছাপ ফেলে দিয়ে যায়। সেই একটি ছবি দশকের পর দশক মানুষের মনে গেঁথে থাকে। মানুষ সেই ছবিটার মুহূর্তকেই যেন আবার নতুন করে উপভোগ করতে চায়, সেই মুহূর্তে বাঁচতে চায়। এমনই এক ছবি হল ১৯৮৬-র বিশ্বকাপ জয়ের পর সতীর্থদের কাঁধে চড়ে উল্লাসে মাতা মারাদোনার। সেই ছবি মারাদানো হওয়ার ইচ্ছে ছিল লিওনেল মেসিরও।
মেসির সতীর্থরাও চাইতেন, মেসিকে সেই মুহূর্ত ‘উপহার’ দিতে। ২০২২ সালে কাতারের লুসাইল স্টেডিয়ামে আর্জেন্টিনার জয়ের পর মারাদোনার সেই মুহূর্ত ফিরে এলো। সতীর্থ, বন্ধু আগুয়েরোর কাঁধে চেপে বিশ্বকাপের ট্রফি মাথার ওপর তুললেন মেসি। উঠল তার নামের জয়ধ্বনি।
অনেকেই মনে করেছিলেন ১৯৮৬ সালে মারাদোনার সেই দৃশ্যের পুনরাবৃত্তি ঘটবে না। তবে মেসি পুনরাবৃত্তি ঘটালেন সেই মুহূর্তের। ৩৬ বছর পর শুধু বিশ্বকাপই জিতলেন না, নিজেকে কার্যত মারাদোনার সমকক্ষ করে তুললেন মেসি। এ মেসি আজ ‘রাজপুত্র’ নন, তিনিই রাজা।
ব্যক্তিগত ভাবে ফুটবল বিশ্বের সব সম্মান তার ঝুলিতে ছিল। এমন কী, এর আগে বিশ্বকাপ না জিতলেও ‘গোল্ডেন বল’ জিতেছিলেন ২০১৪ সালে। তবে ক্যারিয়ারের শেষ লগ্নে এসে নিজের সবটা উজার করে দিয়ে বিশ্বকাপটাও জিতলেন।
নেদারল্যান্ডসের বিরুদ্ধে বিশ্বকাপ কোয়ার্টার ফাইনালে তো অনেকেই মনে করেছিলেন, মেসির মধ্যে হয়ত মারাদোনার ‘ভুত’ ঢুকেছে। না, খেলার জন্য নয়। সে তো গত ১৬ বছর ধরেই মেসির তুলনা হয়ে আসছে মারাদোনার সঙ্গে। তবে ‘শান্ত’ মেসির ‘রাগ’ দেখেই মেসির মধ্যে মারাদোনার ‘ছায়া’ দেখতে পেয়েছিলেন অনেকে।
এদিকে আর্জেন্টিনার দলে ছিলেন না মেসির বন্ধু আগুয়েরো। হৃদরোগের কারণে ফুটবলই ছেড়ে দিয়েছেন তিনি। তবে কাপ জিততে মরিয়া আর্জেন্টিনা সেই আগুয়েরোকে দলের সঙ্গেই রেখেছিল। এমন কী রিপোর্ট অনুযায়ী, তিনি মেসির সঙ্গে একই ঘরে ঘুমাচ্ছিলেন। সেই আগুয়েরোই মেসিকে কাঁধে তুলে নিয়ে ১৯৮৬-র ছবির পুনরাবৃত্তি ঘটালেন। মারাদোনা নিজের দলকে কাঁধে করে টেনে নিয়ে বিশ্বকাপ জিতিয়েছিলেন। মেসিও তাই করলেন।