ব্যাটিং ব্যর্থতায় সিলেটে বড় হার বাংলাদেশের

ক্রিকেট, খেলা

স্পোর্টস ডেস্ক, বার্তা২৪.কম | 2024-03-25 15:24:53

গত বছরের নভেম্বরের শেষ দিকে এই সিলেটেই শক্তিশালী কিউইদের বিপক্ষে টেস্টে ১৫০ রানের বড় ব্যবধানে জিতেছিল বাংলাদেশ। সেই টেস্টে ব্যাট হাতে বেশ ছন্দেই ছিলেন জয়-শান্তরা। তবে কিউই সিরিজের পরের টেস্ট মিরপুরে ব্যাটিং ব্যর্থতা কুঁড়ে খেয়েছে স্বাগতিকদের। প্রায় সাড়ে তিন মাস পর মিরপুরের সেই ব্যাটিং ব্যর্থতা ফিরল সিলেটেও, শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে। প্রথম ইনিংসে ব্যাটিংয়ে লড়াইটা চালিয়েছিলেন একজন পুরোদস্তুর বোলার, তাইজুল ইসলাম। পরের দ্বিতীয় ইনিংসে সেই লড়াইটা লড়লেন সাবেক অধিনায়ক মুমিনুল ইসলাম। তার ৮৭ রানের অপরাজিত ইনিংসটা প্রশংসার দাবিদার দলেও দলের সংগ্রহ পৌঁছাল না লক্ষ্যের অর্ধেকেও। দ্বিতীয় ইনিংসে সবকটি উইকেট হারিয়ে বাংলাদেশ থামল ১৮২ রানে। এতে ৩২৮ রানের বড় ব্যবধানে হারল নাজমুল হোসেন শান্তর দল। 

দুই ইনিংস মিলিয়ে বাংলাদেশের মোট সংগ্রহ ৩৭০। যা লঙ্কানদের দ্বিতীয় ইনিংসের চেয়েও ৪৮ রান কম। 

ব্যাটিং ব্যর্থতা ছাড়াও ফিল্ডিংয়ে বাজে পারফর্ম, রিভিউয়ের বাজে সব সিদ্ধান্তেই সিরিজের এই প্রথম টেস্টে বিশাল ব্যবধানে হারল বাংলাদেশ। 

ব্যাটিং ব্যর্থতার অর্ধেক শো হয়ে গেছে গতকালের বিকেলে। তৃতীয় দিনের শেষ ১৩ ওভার ব্যাটিংয়েই সাজঘরে পাড়ি জমিয়েছিলেন ৫ ব্যাটার, বিপরীতে স্কোরবোর্ডে ছিল স্রেফ ৪৭ রান। সেই স্কোর থেকে শুরু করা চতুর্থ দিনের শুরুতেই ধাক্কা খায় স্বাগতিকরা। আগে ইনিংসে ব্যাট হাতে ৪৭ রানের দারুণ ইনিংস খেললেও এবার কেবল ৬ রান করেই ফেরেন তাইজুল। পরে মেহেদী হাসান মিরাজকে নিয়ে প্রতিরোধ গড়ার আশা জাগাচ্ছিল থিতু হওয়া মুমিনুল হক। তবে দলীয় ১১৭ রানের মাথায় মিরাজ ফিরলে ভেস্তে যায় সেই আশা। ৩৩ রান করে ফেরেন এই ডানহাতি ব্যাটার।

স্বাগতিকদের শেষ তিন ব্যাটার ছিলেন যাওয়া-আসার মধ্যেই, সেখানে আরেকপ্রান্তে একাই লড়েছেন মুমিনুল। শেষ পর্যন্ত ১৪৮ বলে ১২ চার ও ১ ছক্কায় ৮৭ রানে অপরাজিত ছিলেন এই বাঁহাতি ব্যাটার। 

এদিকে দিনের শুরু চার উইকেট তুলে ইনিংসে ফাইফার স্পর্শ করেন কাসুন রাজিথা। প্রথম ইনিংসের পর দ্বিতীয়তেও বাংলাদেশ ইনিংসের পুরো ১০ উইকেট নেন পেসাররাই। সেখানেও দুই ইনিংস মিলিয়ে ৮ উইকেট নিয়েছেন তিন পেসারের মধ্যে এগিয়ে রাজিথাই। 

এর আগে নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংসের শুরুটা খুব ভালো হয়নি শ্রীলঙ্কার। ১২৬ রানেই ৬ উইকেট হারিয়েছিল সফরকারীরা। সেখানে আরও একবার ধনঞ্জয়া-কামিন্দু ‘শো’, এবং তাতেই বিধ্বস্ত শান্ত-শরিফুলরা। আগের ইনিংসের পর এই ইনিংসেও ধনঞ্জয়া-কামিন্দু তুলেছেন সেঞ্চুরি। ১০৮ রান করে অধিনায়ক ধনঞ্জয়া ফিরলেও এবার কামিন্দু মেন্ডিস পাড়ি দিয়েছেন আরও খানিকটা পথ। ২৩৭ বলে ১৬ চার ও ৬ ছক্কায় করেছেন দলীয় সর্বোচ্চ ১৬৪ রান। তাতেই চারশ পেরিয়ে দ্বিতীয় ইনিংসে লঙ্কানদের সংগ্রহ দাঁড়ায় ৪১৮ রানে এবং জয়ের জন্য বাংলাদেশের সামনে লক্ষ্য ৫১১ রানের। সেখানে বাংলাদেশের হয়ে সর্বোচ্চ ৪ উইকেট নেন মেহেদী মিরাজ। 

দ্বিতীয় ইনিংসের মতো প্রথম ইনিংসের শুরুতেও ব্যাট হাতে লঙ্কানরা ছিল নড়বড়ে। ৫৭ রানেই হারিয়েছিল ৫ উইকেট। তবে সেখানে সেই ধনঞ্জয়া-কামিন্দু ম্যাজিক, ২০২ রানের জুটি, দুজনেই তুললেন সেঞ্চুরি। এতেই দল পৌঁছায় ২৮০ রানের লড়াকু পুঁজিতে। জবাবে নিজেদের প্রথম ইনিংসে ব্যাট হাতে নিবু নিবু আলোর মতোই পারফর্ম ছিল নাজমুল হোসেন শান্তর দলের। এতে ১৮৮ রানের মামুলি সংগ্রহ পেয়েছিল স্বাগতিকরা। 

এই জয়ে দুই ম্যাচ টেস্ট সিরিজে ১-০ তে এগিয়ে গেল শ্রীলঙ্কা। সিরিজের দ্বিতীয় ও শেষ টেস্টটি আগামী ৩০ মার্চ শুরু হবে চট্টগ্রামের মাঠে। 

সংক্ষিপ্ত স্কোর:
শ্রীলঙ্কা ১ম ইনিংস: ২৮০/১০ ( ধনাঞ্জয়া ডি সিলভা ১০২, কামিন্দু মেন্ডিস ১০২; নাহিদ রানা ৩/৮৭, খালেদ আহমেদ ৩/৭২)।
বাংলাদেশ ১ম ইনিংস: ১৮৮/১০ (তাইজুল ৪৭; ফার্নান্ডো ৪/৪৮, রাজিথা ৩/৫৬, লাহিরু কুমারা ৩/৩১)।
শ্রীলঙ্কা ২য় ইনিংস: ৪১৮/১০ ( ধনাঞ্জয়া ১০৮, কামিন্দু মেন্ডিস ১৬৪; মেহেদী মিরাজ ৪/৭৪)। বাংলাদেশ ২য় ইনিংস: ১৮২/১০ ( মুমিনুল হক ৮৭*, মেহেদী মিরাজ ৩৩, রাজিথা ৫/৫৬, ফার্নান্ডো ৩/৩৬, লাহিরু কুমারা ২/৩৯)।
ফল: শ্রীলঙ্কা ৩২৮ রানে জয়ী।
ম্যাচসেরা: ধনঞ্জয়া ডি সিলভা

এ সম্পর্কিত আরও খবর