বাংলাদেশের জাতীয় খেলা কাবাডি হলেও এই দেশে খেলাটি প্রচার এবং প্রসার নেই বললেই চলে। খেলাটির গুরুত্ব, ঐতিহ্য এবং প্রয়োজনীয়তা বুঝে ২০২১ সালে প্রথমবারের মতো আন্তর্জাতিক পর্যায়ে টুর্নামেন্ট আয়োজন করে বাংলাদেশ কাবাডি ফেডারেশন। যার ধারাবাহিকতায় আগামী ২৬মে দেশের মাটিতে পর্দা উঠছে এই টুর্নামেন্টের চতুর্থ আসরের।
এই টুর্নামেন্ট উপলক্ষ্যে আজ (সোমবার) বাংলাদেশ অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশনে সংবাদ সম্মেলন করেছে কাবাডি ফেডারেশন। যেখানে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক এবং জাতীয় সংসদের বর্তমান হুইপ মাশরাফি বিন মোর্ত্তজা।
কাবাডির অনুষ্ঠানে এর আগেও এসেছেন মাশরাফি। আজ আবারও জাতীয় খেলার সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকতে পেরে বেশ ভালো লাগছে তার। খেলাটির প্রচার এবং প্রসার ঘটানো কতটা জরুরি তা বুঝাতে যেয়ে তিনি বলেছেন, ‘কাবাডির ব্র্যান্ড ভ্যালু বাড়ানোটা ডিফিকাল্ট, এটা একদিনের কাজ না। এই মুহুর্তে সম্ভব না হলেও ভবিষ্যতে যদি সুযোগ আসে অবশ্যই আমি এর ব্র্যান্ডিং থেকে শুরু করে যেকোনো কিছুর জন্যই চেষ্টা করব।‘
নিজে কখনও কাবাডি খেলেছেন কিনা এই প্রশ্নের জবাবে মাশরাফি বলেন, ‘খেলেনি এমন না, তবে খুব কম খেলেছি। এটা মূলত গ্রামীণ খেলা ছিল, নড়াইলের কাবাডি টিমটাও খুব ভাল। মাঠে যখন প্র্যাক্টিস হতো দেখতাম। কয়েকদিন আগেও নড়াইলে খেলা হলো আমি দেখেছি, রাতেই সাধারণত খেলাটি হয়।‘
দেশের জাতীয় খেলা হলেও অন্যান্য খেলাকে যেমন গুরুত্ব দেওয়া হয় কাবাডিকে তেমনটা দেওয়া হয়না। এই প্রসঙ্গে নিজেই বিশ্লেষণ করেছেন মাশরাফি, ‘আমি যখন জাতীয় দলে ক্রিকেট খেলেছি তখন অন্যান্য খেলাকেও আমি ঠিক ততটাই গুরুত্ব দিয়েছি। কারণ দিনশেষে সবাই আমাদের দেশের জন্যই খেলছে। ক্রিকেটটা হয়ত আপনারা বেশি ফোকাস করেন তাই ক্রিকেট নিয়ে আলোচনা বেশি হয়। ফুটবলসহ অন্যান্য খেলাও যদি আপনারা ফোকাস করেন তাহলে সেগুলোও লাইমলাইটে আসবে স্পন্সরশিপ বাড়বে।‘
দেশের প্রত্যেকটি খেলাকে জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ে এগিয়ে নিতে মিডিয়ার গুরুত্ব সম্পর্কে মাশরাফি বলেন, ‘আপনারাই পারেন অন্য খেলাগুলোকে এগিয়ে নিতে। আজ যেমন কাবাডিতে এসেছেন তার মানে গুরুত্ব দিচ্ছেন। সব কিছুর সমন্বয় দরকার, খেলাধুলায় বিনিয়োগ প্রয়োজন। বিনিয়োগ আসতে লাগে ফোকাস। সেই ফোকাস আপনারা (মিডিয়া)। ফোকাস থাকলে স্পন্সর আসবে। ক্রিকেট বোর্ডের অর্থ আছে, অন্য ফেডারেশনের সেভাবে নেই। সুযোগ সুবিধা থাকলে খেলোয়াড় বেরিয়ে আসবে। কাবাডিতে যেমন চলছে।'
তবে বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনায় কাবাডির প্রসার এতটাও সহজ না বলে মনে করেন তিনি, ‘বাস্তবতাটা ভিন্ন, ঢাকার ভিতরে এই মুহুর্তে একটা কমপ্লেক্স তৈরি করাটা কঠিন। তবে ঢাকার আশেপাশে হলে এই বিষয়ে আমি আলোচনা করব যাতে শীঘ্রই কাবাডি কমপ্লেক্স বানানো যায়।‘
অলিম্পিককে ক্রিকেট বিশ্বকাপের থেকেও বড় মাপের বলেছেন মাশরাফি, ‘ক্রিকেট ওয়ার্ল্ড কাপ পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ঠ গেম না। সর্বশ্রেষ্ঠ গেম হচ্ছে অলিম্পিক। তো এখানে যদি কেউ গোল্ড মেডেল পেয়ে আসে তাহলে সেটাই সবথেকে বড় অর্জন হবে বাংলাদেশের জন্য। দিনশেষে সবাই আমরা লাল-সবুজের জন্যই খেলি, সবার ওই রেস্পেক্টের জায়গাটা যেন থাকে।‘