অলিম্পিকের মঞ্চ নতুন বিতর্কের জন্মই দিল। ইতালির অ্যাঞ্জেলা কারিনি আর আলজেরিয়ার ইমানে খেলিফ বক্সিংয়ের ওয়েল্টেরওয়েট ইভেন্টের শেষ ষোলোয় মুখোমুখি হয়েছিলেন। তবে ম্যাচটা ৪৬ সেকেন্ডেই শেষ হয়ে গেল। শরীরে পুরুষ ক্রোমোজোমের উপস্থিতি থাকা খেলিফের কাছে ‘হার মেনে’ বক্সিং রিং থেকে সরে দাঁড়ান ক্যারিনি। এরপরই এই ম্যাচ নিয়ে শুরু হয়ে গেছে বিতর্ক।
কারিনি শুরু থেকেই ছিলেন ব্যাকফুটে। তিনি শুরু থেকে মুহুর্মুহু ঘুষি সহ্য কর ৩০ সেকেন্ডের মাথায় হেডগিয়ার ঠিক করতে বিরতি দেন। এরপর ফিরে এসে ১৫ মিনিটও টিকতে পারেননি। চোখের জল বাউট ছেড়ে যান তিনি। খেলা শেষে আলজেরিয়ার প্রতিদ্বন্দ্বীর সঙ্গে তিনি হাতও মেলাননি।
ম্যাচ শেষে তিনি যা বললেন, তা সন্দেহের সৃষ্টি করে। কারিনি বলেন, ‘আমি এখানে ভালো-মন্দ বিচার করতে আসিনি। এটা ঠিক কি না, তা বলতে পারব না আমি। আমার কাজটা আমি করেছি। আমি মাথা উঁচু করে বিদায় নিয়েছি। আমি নারী, আমার হিতাহিত জ্ঞান আছে; কখন আমার খেলাটা ছেড়ে দিতে হবে, আর পেরে ওঠা যাচ্ছে না, সেটা বলতে পারাটা মর্যাদার বিষয়। আমি জিততে পারব, এই আত্মবিশ্বাসটা ছিল। তবে নাকে ওই ঘুষিগুলো বেশ লেগেছিল, এরপরই আমি বলেছি যথেষ্ট হয়েছে, আর না।’
এরপরই জানা যায় আসল কারণ। গেল বছর লিঙ্গ পরীক্ষায় ব্যর্থ হয়ে বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালের আগে বাদ পড়েন প্রতিযোগিতা থেকে।
তার শরীরে এক্সওয়াই ক্রোমোজোমের উপস্থিতি পাওয়া গিয়েছিল, যা মূলত পুরুষদের শরীরে মেলে। নারীদের ক্রোমোজোম এক্সএক্স; দুই ক্রোমোজোমের পার্থক্য নারী পুরুষের শারীরিক পার্থক্য ঠিক করে দেয়। সেই এক্সওয়াই ক্রোমোজোম ছিল ইমানে খেলিফের শরীরে। তাই তিনি একজন ‘বায়োলজিকাল মেল’ হওয়ায় তাকে গেল বছর বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপের স্বর্ণপদকের ম্যাচের ঠিক আগে বাদ দেওয়া হয়।
সেই তিনি এবার প্যারিস অলিম্পিকে খেলার যোগ্যতা পেয়েছেন। শেষ ষোলয় এবারও একটা বিতর্ক তৈরি হয়ে গেল এই নিয়ে।