তৃতীয় দিনের শুরুটা বুকে কাঁপনই ধরিয়ে দিয়েছিল রীতিমতো। দশ ওভার পেরোনোর আগেই নেই তিন উইকেট, ১১২ রানে ৬ উইকেট খুইয়ে সমূহ বিপদের মুখে দাঁড়িয়ে ছিল বাংলাদেশ। ইনিংস হারের শঙ্কাও মনের কোণে উঁকি দিচ্ছিল বেশ করে। তবে শেষমেশ বাংলাদেশ সে শঙ্কা এড়িয়েছে। সেশন শেষ করেছে ওই তিনটি উইকেট খুইয়েই।
মেহেদি হাসান মিরাজের ফিফটি আর জাকের আলির দারুণ ব্যাটিংয়ে এখন লিডের খুব কাছে দাঁড়িয়ে আছে দল। ৬ উইকেট খুইয়ে দলের রান এখন ২০১।
দিনের শুরুতে ব্যাটিং কোচ ডেভিড হেম্প সম্প্রচারকারী টিভিতে বলেছিলেন, ‘প্রত্যেকটা বলই একটা ‘স্কোরিং অপরচুনিটি’, তো আমি এই মানসিকতাটাকে উদ্বুদ্ধ করতে চাই।’ সে কথাতে ‘উদ্বুদ্ধ’ হয়েই কি-না, অফ স্টাম্পের অনেক বাইরের বল তাড়া করতে গেলেন মাহমুদুল হাসান জয়, ফুটওয়ার্কের বালাই ছিল না তাতে।
ফলাফল যা হওয়ার, তাই হলো। কাগিসো রাবাদা আগের দিন দুটো উইকেট তুলে নিয়েছিলেন বাংলাদেশের। আজ দিনের শুরুতেই পেয়ে গেলেন আরও একটা। মাহমুদুল হাসান জয় ফিরলেন ৯২ বলে ৪০ রান করে।
একটা উইকেট প্রায়ই আরও উইকেটের দুয়ার খুলে দেয়। জয়ের বিদায় তা দিলও। আগের ইনিংসে রাবাদার ইনকামিং ডেলিভারি স্টাম্প উপড়ে দিয়েছিল মুশফিকের। জয়ের বিদায়ের এক বল পর তার পুনর্মঞ্চায়ন দেখা গেল দ্বিতীয় ইনিংসেও। ৩৯ বলে ৩৩ করে ফেরেন মুশফিক।
এরপর লিটন দাসও ফেরেন দ্রুতই। কেশভ মহারাজের বলে ডিফেন্ড করতে চেয়েছিলেন তিনি। তবে তার ব্যাটের কানায় লেগে তা চলে যায় কাইল ভেরেইনার হাতে। আম্পায়ার শুরুতে আউট না দিলেও দক্ষিণ আফ্রিকা রিভিউ নিয়ে সফলতা পায়। ১১২ রানে ৬ উইকেট খুইয়ে বসে বাংলাদেশ।
দিন শুরুর আট ওভারে নেই তিন উইকেট, তখন পরিস্থিতিটা স্বাগতিকদের বিপক্ষেই ছিল। সেটা সামলায় শেষ স্বীকৃত ব্যাটারের জুটি। মেহেদি হাসান মিরাজ তাতে নেতৃত্ব দিয়েছেন, একের পর এক শট খেলে প্রতি আক্রমণ করেছেন, ওপাশ থেকে দারুণভাবে সঙ্গ দিয়েছেন জাকের আলি অনিক।
দুয়ের মিশেলে বাংলাদেশ রান তুলতে থাকে দ্রুত। দুজন মিলে এরপর ১৭২ বলে ৮৯ রান যোগ করেছেন দলের স্কোরবোর্ডে। যা আবার দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে দলের সপ্তম উইকেটে জুটির রেকর্ডও। মেহেদি হাসান মিরাজ আবার সেশনের শেষ দিকে তুলে নেন ক্যারিয়ারের নবম ফিফটি। তিনি অপরাজিত আছেন ৫৫ রানে, ওপাশে জাকেরের নামের পাশে রান ৩০।
এই সেশনে অবশ্য লিড নেওয়া হয়নি বাংলাদেশের। ১ রানের দূরত্বে দাঁড়িয়ে আছে দলটা। লিডটা দ্বিতীয় সেশনের জন্য তোলা রেখে মধ্যাহ্ন বিরতিতে গেছে স্বাগতিকরা।