এই তো এক সিরিজ আগের কথা। পাকিস্তানের বিপক্ষে ২-০ ব্যবধানে সিরিজ জিতে বাংলাদেশ ইতিহাসই গড়েছিল। অধিনায়ক হিসেবে এই কীর্তিটা লেখা ছিল নাজমুল হোসেন শান্তর নামের পাশে।
তবে এরপর ভারতের কাছে টেস্ট ও টি-টোয়েন্টিতে হোয়াইটওয়াশ হওয়া, এরপর দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে ঘরের মাঠে টেস্ট হার বাংলাদেশকে টালমাটাল করে দিয়েছে আবার। প্রোটিয়াদের বিপক্ষে চট্টগ্রামে এখন দলের মিশন সিরিজ বাঁচানোর। ঠিক এ সময় এসে রীতিমতো বোমা ফাটালেন শান্ত, বিসিবিকে জানিয়ে দিয়েছেন, নেতৃত্বে আর তিনি থাকতে চান না।
তার নেতৃত্ব ছাড়ার মূল কারণ বাংলাদেশ দলনেতা হওয়ার পর থেকে তার ব্যাটিং ফর্ম। টেস্ট আর টি-টোয়েন্টিতে নেতৃত্ব পাওয়ার পর থেকে তার ব্যাটিং গড় ক্যারিয়ার গড়ের চেয়েও কম। ওয়ানডেতে তা বেড়েছে বটে, কিন্তু তা তার সমালোচনার পথ বন্ধ করতে পারেনি।
সে কারণেই হয়তো সিরিজের মাঝপথে এসে তিনি জানিয়েছেন, দলের নেতৃত্বে আর থাকতে চান না তিনি। চলতি সিরিজের পরই তিনি নেতৃত্ব ছেড়ে দিতে চান বলে জানিয়েছেন বোর্ডকে। এখন অপেক্ষা স্রেফ সভাপতি ফারুক আহমেদের অনুমোদনের। আজ-কালের ভেতর তার ওমরাহ শেষ করে দেশে আসার কথা। এরপরই শান্তর নেতৃত্ব ছাড়ার ঘোষণা আসতে পারে।
একাধিক বিসিবি কর্তা তাকে বুঝিয়ে শুনিয়ে সিদ্ধান্ত বদলের চেষ্টা করছেন। তবে ক্রিকবাজ জানিয়েছে, তার ভাবনায় শান্ত অটল থাকার সম্ভাবনাই বেশি। যার ফলে বাংলাদেশকে এখন আবারও নতুন নেতা খোঁজ করার মিশনে নামতে হবে।
শান্ত নেতৃত্ব ছেড়ে দিলে কে হবেন বাংলাদেশের অধিনায়ক, এখন প্রশ্ন উঠছে এখানে। তবে যেই আসুন, তিন ফরম্যাটের অধিনায়ক হবেন না তিনি, এটা অনেকটাই পরিষ্কার। তিন ফরম্যাটে সমানতালে খেলছেন, পারফর্ম করছেন, এমন কেউ তো দলেও নেই! তাসকিন আহমেদের নাম এখানে আসতে পারত, তবে তার চোটাঘাতের কারণে নিয়মিত খেলা নিয়েও আছে প্রশ্ন।
সে ভাবনা থেকে টেস্ট-ওয়ানডের জন্য আলাদা ও টি-টোয়েন্টির জন্য আলাদা অধিনায়ক নির্বাচনের পথে হাঁটতে পারে বিসিবি। সেক্ষেত্রে বেছে নেওয়া হতে পারে সেরা দুই পারফর্মারকে। দীর্ঘতর ফরম্যাটে ব্যাটে-বলে দারুণ পারফর্ম করা মেহেদি হাসান মিরাজকে দেওয়া হতে পারে টেস্ট আর ওয়ানডে ক্রিকেটের নেতৃত্ব। সঙ্গে টি-টোয়েন্টিতে দলের ক্রমাগত ব্যাটিং ব্যর্থতার মাঝে ব্যতিক্রম হয়ে থাকা তাওহীদ হৃদয়কে দেওয়া হতে পারে ক্ষুদ্রতর ফরম্যাটের নেতৃত্ব।
তবে শেষমেশ চূড়ান্তভাবে কার নাম ঘোষণা করা হয়, নাকি শান্তকেই বুঝিয়ে রেখে দেওয়া হয় শেষ পর্যন্ত, সেসব প্রশ্নের জন্য অপেক্ষা করতে হবে আরও অন্তত একটা দিন।