ওপেনার লিটন দাস আউট হয়ে ফিরছেন। আর ড্রেসিংরুম থেকে সিঁড়ি বেয়ে মাঠে আসছেন মোসাদ্দেক হোসেন।
-ওয়ানডাউনে মোসাদ্দেক হোসেন, কেন?
ওটা তো মমিনুল হকের ব্যাটিংয়ের পজিশন। প্রথম ইনিংসেও মমিনুল তার নির্ধারিত ওয়ানডাউন পজিশনে ব্যাট করতে পারেননি। ব্যাটিংয়ে ডানহাতি-বাঁহাতি কম্বিনেশন রাখতেই প্রথম ইনিংসে মমিনুল হকের জায়গায় লিটন দাস ব্যাট করতে নামেন। দ্বিতীয় ইনিংসেও সেই একই ধারণা থেকে বেরিয়ে আসতে পারেনি বাংলাদেশ। এবার মমিনুলের পরিচিত জায়গায় এলেন এই পজিশনে অপরিচিত মোসাদ্দেক হোসেন। টেস্ট ম্যাচে এই প্রথম এতো উপরে ব্যাট করার সুযোগ পেলেন তিনি।
কিন্তু ওয়ানডাউনের দায়িত্বশীল পজিশনের মূল্যটা কি দিতে পারলেন এই ব্যাটসম্যান? একজন ব্যাটসম্যান আউট তো হবেনই। কিন্তু সেই আউটের মধ্যে যদি তার খামখেয়ালিপনা এবং খেয়াল খুশিটাই মূখ্য হয়ে উঠে-তখন বুঝতে হবে তিনি এই খেলার মর্যাদা বুঝেন না। অথবা বুঝে থাকলেও সেটা মানতে চান না।
সীমিত ওভারের ক্রিকেটে মোসাদ্দেক হোসেন মূলত ব্যাটিং অর্ডারের নিচের দিকে ব্যাট করতে নামেন। কম বলে দ্রুত কিছু রান তুলতেই তাকে পাঠানো হয়। এই টেস্ট ম্যাচে ওয়ানডাউন পজিশনে তাকে অবশ্য সেজন্য পাঠানো হয়নি। পাঠানো হয়েছিলো লম্বা ইনিংস খেলতে। উইকেটে যথেচ্ছ সময় কাটাতে। কিন্তু মাত্র ১৭ বল খেলার পর মোসাদ্দেক যেন ভুলে গেলেন-তিনি টেস্ট নয়, টি-টুয়েন্টি খেলতে নেমেছেন!
স্পিনার জহির খানের যে বলে তিনি আউট হলেন সেটা কোনো মতেই উইকেট টেকিং কোনো ডেলিভারি নয়। অফস্ট্যাম্পের অনেক বাইরে পড়া বল। সেই বলে জায়গায় দাঁড়িয়ে হঠাৎ মোসাদ্দেকের মনে হলো ছক্কা মারি! কিন্তু অনেক বাইরের বলে এমন শট খেলতে গিয়ে ব্যাটের ঠিক জায়গায় লাগাতে পারেননি তিনি। ব্যাটের কানায় বল লেগে ক্যাচ উঠে। ফিল্ডিংয়ে একটু পেছন দিকে সরে এসে আসগর আফগান সেই ক্যাচ নেন।
১৭ বলে ১২ রানে শেষ মোসাদ্দেকের ওয়ানডাউন অ্যাডভেঞ্চার! আউট হয়ে ফেরার সময় টিভি ক্যামেরায় মোসাদ্দেকের চেহারা দেখা গেল। বিড়বিড় করে কি যেন বলছিলেন তিনি। আউটের অমন ধরণে সম্ভবত নিজেই নিজেকে শাপশাপান্ত করছিলেন যেন!
মোসাদ্দেক কট আসগর আফগান বোল্ড জহির খান ১২। দ্বিতীয় ইনিংসের স্কোরবোর্ডে এমনই লেখা মোসাদ্দেকের নামের পাশে। তবে ব্র্যাকেটে লেখা উচিত-মস্তিষ্ক ভ্রান্তি!
ম্যাচের অমন পরিস্থিতিতে এমনভাবে নিজের উইকেট ছুঁড়ে দিয়ে আসা তো মস্তিষ্ক ভ্রান্তিরই লক্ষণ!