ওয়ানডে ব্যাটিংয়ের নতুন বিশ্বরেকর্ড; ৪৮১ রান!

, খেলা

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট,বার্তা২৪.কম | 2023-08-27 17:08:44

অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে তৃতীয় ওয়ানডেতে ইংল্যান্ড যা করেছে তাকে এক কথায় বলা যায়-ব্যাটিং তান্ডব। সেই তান্ডবে ভেঙ্গেচুরে একাকার হয়ে গেছে কয়েকটি বিশ্বরেকর্ড! নটিংহ্যামে সিরিজের তৃতীয় এই ওয়ানডেতে ৫০ ওভারে ইংল্যান্ড তুলেছে ৬ উইকেটে ৪৮১ রান। ওয়ানডে ক্রিকেটের ইতিহাসে এটি দলীয় সর্বোচ্চ রানের নতুন বিশ্বরেকর্ড। এর আগে এই রেকর্ডটা ছিল ৩ উইকেটে ৪৪৪ রান। সেটির মালিকও ছিল ইংল্যান্ড।

মজার তথ্য হল সেই বিশ্বরেকর্ডও গড়েছিল ইংল্যান্ড এই নটিংহ্যামশায়ারের ট্রেন্টব্রিজ মাঠেই! ২০১৬ সালের ৩০ আগস্ট সেই ম্যাচে ইংল্যান্ড ব্যাটিং ঝড় তুলেছিলো পাকিস্তানের বিপক্ষে। মঙ্গলবার দিনরাতের এই ম্যাচে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ওয়ানডের সর্বোচ্চ রানের রেকর্ডের সঙ্গে একম্যাচে সবচেয়ে বেশি ছক্কা (২২) হাঁকানের বিশ্বরেকর্ডও প্রায় ছুঁয়ে ফেলেছিল ইংল্যান্ড। তবে দলীয় সর্বোচ্চ ছক্কার নিউজিল্যান্ডের সেই বিশ্বরেকর্ডটা অক্ষত রয়ে গেল। এই ম্যাচে ইংল্যান্ডের ছক্কার সংখ্যা বিশ্বরেকর্ড থেকে এক কম-২১ টি!

নটিংহ্যামে টসে জিতে অস্ট্রেলিয়া বোলিং বেছে নেয়। ম্যাচের শুরু থেকেই ইংল্যান্ড ব্যাটিং উৎসবে মাতে। ওপেনিং জুটিতে ১৯.৩ ওভারে ইংল্যান্ড তুলে নেয় ১৫৯ রান। ওপেনার জেসন রয় ৬১ বলে ৪ ছক্কা ও ৭ বাউন্ডারিতে ৮২ রান করে আউট হন। অন্য ওপেনার জনি বেয়ারস্টো এবং পজিশন বদলে ওয়ান ডাউনে খেলতে নামা অ্যালেক্স হেলস বাকিটা সময় অস্ট্রেলিয়ার বোলারদের নিয়ে স্রেফ ছেলেখেলায় মেতে উঠেন। দুজনেই সেঞ্চুরি হাঁকান। কে কার চেয়ে কম বল খেলে আর বেশি ছক্কা হাঁকিয়ে সেঞ্চুরি করতে পারেন তেমন একটা প্রতিযোগিতায় নামেন!

মজার ব্যাপার হল দুজনেই সমান সংখ্যক ৯২টি করে বল খেলেন। বেয়ারস্টো করেন ১৩৯ রান। হাঁকান ১৫ বাউন্ডারি ও ৫ ছক্কা। লড়াইয়ে প্রায় সমান সমান থাকেন অ্যালেক্স হেলসও। ৯২ বলে তার রান ১৪৭। পাঁচ ছক্কা ও ১৬টি বাউন্ডারিতে সাজানো ছিল হেলসের এই মারকাটারি সেঞ্চুরির ইনিংস। বেয়ারস্টো সেঞ্চুরি পান ৬৯ বলে। অ্যালেক্স হেলস সেঞ্চুরি পেতে আরও কম বল খরচা করেন। তার সেঞ্চুরি আসে মাত্র ৬২ বলে! এই দুজনের সেঞ্চুরির ব্যাটিং আনন্দে মাতেন অধিনায়ক ইয়ুন মরগান। বাঁহাতি মরগান শেষের দিকে নেমে স্রেফ টি-টুয়েন্টি ষ্টাইলে ব্যাট চালান। খেলেন মাত্র ৩০ বল। তাতেই ৬ ছক্কা ও ৩ বাউন্ডারিতে তার রান ৬৭! ষ্ট্রাইক রেট দুশো’র বেশি!

৪৬ নম্বর ওভার শেষে ইংল্যান্ডের রান ছিল ৩ উইকেট ৪৫০ রান। আগের ৪৪৪ রানের দলীয় সর্বোচ্চ বিশ্বরেকর্ড টপকে যায় ইংল্যান্ড এই ওভারে। একসময় মনে হচ্ছিল ইংল্যান্ডের রান পাঁচশ ছাড়িয়ে যাবে। কিন্তু শেষের তিন ওভারে অস্ট্রেলিয়া কিছুটা নিয়ন্ত্রিত বোলিং করায় ইংল্যান্ডের ইনিংস থামে ৬ উইকেটে ৪৮১ রানে!

সবমিলিয়ে আটজন বোলার ব্যবহার করে অস্ট্রেলিয়া এই ম্যাচে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ১০০ রান খরচা করেন অ্যান্ড্রু টাই। এই ম্যাচের বোলিংটা খুব দ্রুতই ভুলে যেতে চাইবেন টাই। ৯ ওভারে কোন সাফল্য ছাড়া তিনি পাক্কা ১০০ রানের খরচা গোনেন!

ঠিক কি হয়েছিল এই ম্যাচে যে ইংল্যান্ড এমন ব্যাটিং তা-বে মেতে উঠল। বোলিং কি খুব খারাপ করেছিল অস্ট্রেলিয়া? নাকি সত্যিকার অর্থেই অকল্পনীয় কোন ব্যাটি করল ইংল্যান্ড? উইকেট কি পুরোদুস্তর পাঁটা ছিল? নাকি বাউন্ডারি লাইন একটু বেশি ছোট ছিল?

ব্যাটিং বিশ্বরেকর্ডের এই ম্যাচের কথা যখনই উঠবে, তখনই অস্ট্রেলিয়ার বোলাররা কুঁকড়ে উঠবেন-আহা রে কি পিটুনিই না দিয়েছিল ইংল্যান্ড!

এ সম্পর্কিত আরও খবর