ম্যারাডোনা ভুল বলেননি, তবে...

, খেলা

  সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম | 2023-08-25 17:40:39

অভিবাসীদের নিয়ে ডিয়েগো ম্যারাডোনার বেফাঁস মন্তব্যের উত্তাপ এখনো শেষ হয়ে যায়নি। তবে সত্য অনেক সময় কর্কশ শোনায়। 'চার বেলা খাবারের লোভের' আফ্রিকা থেকে অনেকের ইউরোপে পাড়ি জমানোটা সত্য হলেও সেই কথায় বর্ণবাদী একটা ছায়া থাকে। কিন্তু এটা তো অস্বীকার করার উপায় নেই ইউরোপের প্রায় প্রতিটি ফুটবল খেলুড়ে দেশই এভাবে 'লোভ' দেখিয়ে অভিবাসীদের নিয়ে নিজেদের শক্তিটা বাড়িয়ে নিয়েছে।

রাশিয়া বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে তিন দল ফ্রান্স, বেলজিয়াম আর ইংল্যান্ডের দিকে চোখ রাখলেই উত্তরটা পেয়ে যাবে। এনিয়ে বিবিসি বিস্তারিত প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। যেখানে দেখা যাচ্ছে ফ্রান্সের ২৩ সদস্যের বিশ্বকাপ দলের ১৬ জনের অভিবাসী বাবা কিংবা মা রয়েছেন। বেলজিয়ামের এগারো জন আর ইংল্যান্ডের ছয়জন ফুটবলারের একইরকম অভিবাসী বাবা কিংবা মা রয়েছেন।

অবশ্য অভিবাসী ফুটবলারদের নিজের করে নিয়ে শক্তি বাড়ানোর এই কৌশলটা আজকের নয়। আফ্রিকা আর এশিয়া থেকে অভিবাসীদের স্রোত অনেক দিন ধরেই ইউরোপে বহমান। এই যেমন

১৯৯৮ সালে ফ্রান্সের যে দল বিশ্বকাপ জিতেছিল, তা নিয়ে কম কথা হয়নি। অনেকে তো এটিকে আবার 'দ্য রেইনবো টিম' বলেছিলেন। 

খোদ দলের সেরা তারকা জিনেদিন জিদান অভিবাসী ফুটবলার। এনিয়ে বর্ণবৈষম্যের শিকার হতে হয়েছিল তাকে। আলজেরিয়ায় যুদ্ধ শুরু হওয়ায় পর তার বাবা-মা পালিয়ে এসে আশ্রয় নেন ফ্রান্সে। সেখানেই বেড়ে উঠে এক সময় দেশটির সর্বকালের সেরা ফুটবলারদের একজন হয়েছেন জিজু!

বেলজিয়ামের হয়ে ঝড় তোলা দুই ফুটবলার রোমেলু লুকাকু ও ভিনসেন্ট কম্পানির বাবা কঙ্গো থেকে পাড়ি জমান ইউরোপে। এমন কী লুকাকুর বাবা ১৯৯০-এর দশকে কঙ্গোর ফুটবলও খেলেছিলেন।

আবার ইংল্যান্ড দলটাতে আছে ছয়জন অভিবাসী ফুটবলার। জ্যামাইকায় জন্ম নেয়া রাহিম স্টারলিং দুর্দান্ত খেলে যাচ্ছেন। বেলজিয়াম আর ফ্রান্সে অভিবাসীদের নিয়ে নানা কথা থাকলেও এই ইস্যুতে বরবারই উদার ইংল্যান্ড। তারা বরং রাহিম স্টারলিংদের স্বাগতই জানিয়েছেন বারবার।

সব মিলিয়ে রাশিয়া বিশ্বকাপে ইউরোপের প্রধান দশটি দেশের ২৩০ জন ফুটবলারদের মধ্যে ৮৩ জনই অভিবাসী ফুটবলার।

সবমিলিয়ে আসলে ইউরোপিয়ানদের ফুটবলে আজকের এই দাপটের পেছনে বড় ভূমিকা আছে অভিবাসীদের। যুদ্ধ সমস্যা, দারিদ্রতা কিংবা ম্যারাডোনার ভাষায় 'নাগরিকত্বের লোভ' যেভাবেই হোক দেশ ছাড়লেও ইউরোপকেও কম দিচ্ছেন না এইসব দেশ হারা ফুটবলাররা! ম্যারাডোনা ভুল বলেন নি, কিন্তু অভিবাসীরা কেউ আর কারো করুণার পাত্র নন!

এ সম্পর্কিত আরও খবর