৯ ফেব্রুয়ারি, রোববার অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপের ফাইনাল শেষে বাংলাদেশ ও ভারতের কয়েকজন ক্রিকেটার নিজেদের মধ্যে ধাক্কাধাক্কিতে জড়িয়ে পড়েন। পুরো ম্যাচ জুড়ে যে তীব্র আবেগ ও উত্তেজনার রেশ ছিল তারই কিছুটা বহিঃপ্রকাশ ঘটে উভয় দলের তরুণ ক্রিকেটারদের মধ্যে। তবে ভদ্রলোকের খেলা ক্রিকেটে এমন আচরণের অনুমতি নেই। আর তাই সেদিনের ফাইনালের ভিডিও ফুটেজ দেখে আইসিসি উভয় দলের ৫জন খেলোয়াড়কে কয়েকটি ম্যাচ নিষিদ্ধ করেছে।
অভিযুক্ত ক্রিকেটাররা তাদের দোষ স্বীকার করে নিয়েছেন। শাস্তিপ্রাপ্ত বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দলের তিন ক্রিকেটার হলেন তৌহিদ হৃদয় (১০ ম্যাচ নিষিদ্ধ), শামীম হোসেন (৮ ম্যাচ নিষিদ্ধ) এবং রকিবুল হাসান (৪ ম্যাচ নিষিদ্ধ)। ভারতের দুই ক্রিকেটারের মধ্যে আকাশ সিং নিষিদ্ধ হয়েছেন ৮ ম্যাচ আর লেগস্পিনার রবি বিষ্ণুইকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে ৫ ম্যাচ। এই ক্রিকেটাররা অনূর্ধ্ব-১৯ বা ‘এ’ দলের হয়ে সামনের ওয়ানডে অথবা টি-টোয়েন্টি ম্যাচে এই নিষেধাজ্ঞার শাস্তি ভোগ করবেন।
আইসিসি জানিয়েছে- ফাইনাল ম্যাচ শেষে নিজেদের মধ্যে বিতর্ক এবং ধাক্কাধাক্কি করে এই ক্রিকেটাররা ক্রিকেটের স্পিরিট নষ্ট করেছেন। মাঠের খেলোয়াড় ও সাপোর্টিং স্টাফদের মধ্যে আইসিসির বিধি বিধানের লেভেল তিন ভঙ্গ করেছেন। তাই এই শাস্তি।
ফাইনালের ম্যাচ রেফারি গ্রায়েম ল্যাবরয় জানান-বাংলাদেশের তিন ক্রিকেটার তৌহিদ হৃদয়, শামীম হোসেন এবং রকিবুল হাসান এবং ভারতের দুজন খেলোয়াড় আকাশ সিং ও রবি বিষ্ণুইয়ের বিরুদ্ধে আইসিসি’র এই বিধি বিধানের ২.২১ ধারা ভঙ্গের অভিযোগ আনা হয়েছে। এর মধ্যে বিষ্ণুইয়ের অপরাধের মাত্রা আরেকটু বেশি। তিনি এর সঙ্গে ২.৫ বিধির মাত্রাও অতিক্রম করেছেন।
ম্যাচ রেফারি ভিডিও ফুটেজ দেখে অভিযুক্ত ক্রিকেটারদেরকে জবানবন্দি নেন। অভিযুক্ত পাঁচ ক্রিকেটারই তাদের দোষ স্বীকার করে নেন।
শাস্তির বিস্তারিতটা এমন:
তৌহিদ হৃদয়: তার বিরুদ্ধে ২.২১ বিধি বিধান ভঙ্গের অভিযোগ আনা হয়েছে। অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে। শাস্তি হিসেবে তাকে দেওয়া হয়েছে ১০টি সাসপেনশন পয়েন্ট। যার ডিমেরিট পয়েন্ট হলো ৬। এই ডিমেরিট পয়েন্ট তার ক্যারিয়ারে থাকবে আগামী দু’বছরের জন্য। শাস্তি হিসেবে সামনের ১০ ম্যাচে খেলতে পারবেন না তৌহিদ হৃদয়।
শামীম হাসান: এই ক্রিকেটার ২.২১ বিধি বিধান ভঙ্গের অভিযোগ স্বীকার করে নিয়েছেন। তাকে দেওয়া হয়েছে ৮টি সাসপেনশন পয়েন্ট। সেই সঙ্গে তার নামের পাশে যোগ হয়েছে ৬টি ডিমেরিট পয়েন্ট। শামীমকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে ৮ ম্যাচে।
রকিবুল হাসান: ফাইনালের উইনিং শট নেওয়া বাংলাদেশের এই স্পিন বোলিং অলরাউন্ডার শাস্তি হিসেবে পেয়েছেন ৪টি সাসপেনশন পয়েন্ট। সেই সঙ্গে যোগ হয়েছে ৫টি ডিমেরিট পয়েন্ট। সামনের ৪ ম্যাচে নিষিদ্ধ থাকছেন রকিবুল হাসান।
আকাশ সিং: ভারতের এই ক্রিকেটারের বিরুদ্ধেও ২.২১ বিধি ভঙ্গের অভিযোগ প্রমাণিত। তাকে দেওয়া হয়েছে ৮টি সাসপেনশন পয়েন্ট। তিনি ডিমেরিট পয়েন্ট পেয়েছেন ৬টি। সবমিলিয়ে ৮ ম্যাচে নিষিদ্ধ থাকছেন আকাশ সিং।
রবি বিষ্ণুই: ফাইনালে ৪ উইকেট পাওয়া এই লেগস্পিনার নিষিদ্ধ হয়েছেন ৫ ম্যাচে। তার ডিমেরিট পয়েন্ট ৭।
ফাইনাল ম্যাচ শেষে উভয় দলের খেলোয়াড়দের বিরুদ্ধে ক্রিকেটীয় স্পিরিট ভঙ্গের এই অভিযোগ আনেন মাঠের দুই আম্পায়ার। মাঠের তৃতীয় এবং চতুর্থ আম্পায়ারও তাতে সায় দেন।