লাঞ্চ বিরতিতে বাংলাদেশ এগিয়ে ছিল ৮৬ রানে। চা বিরতিতে সেই লিড পৌঁছায় ১৭৭ রানে। আর তৃতীয় দিনের খেলা শেষের আধঘণ্টা আগে ৬ উইকেটে ৫৬০ রান তুলে ইনিংস ঘোষণা করল বাংলাদেশ। জিম্বাবুয়ে তাদের প্রথম ইনিংসে করেছিল ২৬৫ রান। বিয়োগফল জানাচ্ছে ঢাকা টেস্টের প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশ এগিয়ে ছিল ২৯৫ রানে। দিনের শেষ বেলায় ব্যাট করতে নেমেই চরম বিপদে পড়ে জিম্বাবুয়ে। প্রথম ওভারেই হারায় তারা দুই উইকেট। স্পিনার নাঈম হাসান তার প্রথম ওভারের দ্বিতীয় ও তৃতীয় বলে উইকেট পান। শুরুর সেই ভয়াবহ পরিস্থিতি কোনোমতে সামাল দেন ওপেনার কাসুজা ও ব্রেন্ডন টেলর। ২ উইকেটে ৯ রান তুলে দিন শেষ করে জিম্বাবুয়ে। ইনিংস হার এড়াতে হলে জিম্বাবুয়ের এখনো করতে হবে ২৮৬ রান।
নিঃসন্দেহে কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে আছে জিম্বাবুয়ে। বৃষ্টি এসে বাগড়া না বসালে এই টেস্টে বাংলাদেশের জয়ের সম্ভাবনা উজ্জ্বল। জয়ের এই মঞ্চ তৈরি করে দিয়েছেন মুশফিক ও মুমিনুল। ঢাকা টেস্টে দুজনেই তৃতীয় দিনের সেঞ্চুরিয়ান। মুমিনুলের ব্যাট হাসল ১৩২ রানে। আর মুশফিক অপরাজিতই রইলেন ২০৩ রান তুলে।
অধিনায়ক হিসেবে নিজের প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরির দিনে বাংলাদেশের সম্মিলিত সেঞ্চুরির তালিকায় শীর্ষে থাকা তামিম ইকবালকে ছুঁয়ে ফেললেন এদিন মুমিনুল হক। বাংলাদেশের হয়ে এই দুই ব্যাটসম্যানের সেঞ্চুরির সংখ্যা সমান; ৯।
১৩২ রান করে দিনের দ্বিতীয় সেশনে ফিরে আসেন মুমিনুল। কিন্তু মুশফিক সেঞ্চুরির পর দেড়শ রান করেন। থাকেন ডাবল সেঞ্চুরির অপেক্ষায়। অপেক্ষা শেষে পেয়ে যান দ্বিশতকও। ব্যাটিংয়ে ক্রমশ নিজেকে উন্নতি ও উচ্চতার শিখরে নিয়ে চলেছেন মুশফিকুর রহিম। টেস্টে বাংলাদেশের হয়ে দেড়শ ছড়ানো সবচেয়ে বেশি ৪টি ইনিংস এখন মুশফিকের। দলের চারটি ডাবল সেঞ্চুরির মধ্যে তিনটির মালিকই তিনি। এক ইনিংসে সর্বোচ্চ অপরাজিত ২১৯ রানের কৃতিত্বও তারই। টেস্টে দেশের হয়ে সবচেয়ে বেশি ৪৪১৩ রানের নতুন মালিকও এখন মুশফিক।
সাম্প্রতিক সময়ে টেস্ট ক্রিকেটে বাংলাদেশের পারফরম্যান্স তেমন ভালো কিছু নয়। তবে দলীয় সেই মন্দের মধ্যে ব্যক্তিগত সাফল্যের নিরিখে নিজেকে ঠিকই আলাদা করে চিনিয়েছেন মুশফিকুর রহিম। এই টেস্টে তার ২০৩ রানের অপরাজিত ইনিংসের অন্য নাম- নিরাপদ ব্যাটিংয়ের নমুনা।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:(তৃতীয় দিন শেষে)
জিম্বাবুয়ে ১ম ইনিংস: ২৬৫/১০ (১০৬.৩ ওভারে; মাসভাউরে ৬৪, কাসুজা ২, আরভিন ১০৭, টেলর ১০, সিকান্দার রাজা ১৮, মারুমা ৭, চাকাভা ৩০, তিরিপানো ৮, নাঈম ৪/৭০; রাহী ৪/৭১ ও তাইজুল ২/৯০)।
বাংলাদেশ ১ম ইনিংস: ৫৬০/৬ ডিক্লেয়ার্ড (১৫৪ ওভারে; সাইফ ৮, তামিম ইকবাল ৪১, নাজমুল হোসেন শান্ত ৭১, মুমিনুল হক ১৩২, মুশফিক ২০৩*, লিটন ৫৩*, আইন্সলে লভু ২/১৭০)।
জিম্বাবুয়ে দ্বিতীয় ইনিংস: ৯/২ (৫ ওভারে, কেভিন কাসুজা ৮*, টেলর ১*, নাঈম হাসান ২/৪)।