সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ানডে ম্যাচেও ব্যাট হাতে দাপট দেখাচ্ছে বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা। আরেকটু সরাসরি বলা যায় তামিম ইকবাল ও মুশফিকুর রহিম আছেন চেনা ছন্দে। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দুজনই তুলে নিয়েছেন ফিফটি।
সিলেট আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামেই মঙ্গলবার এ রিপোর্ট লেখার সময় ২৫.৪ ওভারে ৩ উইকেট হারিয়ে ১৫২ রান তুলেছে বাংলাদেশ।
মুশফিকুর রহিম ফিরে গেলেন ৫৫ রানে। তামিম ৭৯ রানে লড়ে যাচ্ছেন। এই জুটিতে ফিফটি আসে ৬১ বলে। ৪৭ বলে ফিফটি করেন মুশি। কিন্তু এরপরই ফিরে যান তিনি।
অথচ সমালোচনা ছিল তামিম ইকবালের দেখা মিলছে না। এটাও ঠিক গতবছর বিশ্বকাপ থেকেই ব্যাট কথা বলেনি। কিছুদিন বিশ্রামে থেকে এসেও ধারাবাহিকতার বড্ড অভাব। এরমধ্যে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজের প্রথম ম্যাচে করলেন ৪৩ বলে ২৪। পাওয়ার প্লেতেও ফ্লপ! সমালোচনার তোপে ছিলেন তামিম ইকবাল। সেই সমালোচনা উড়িয়ে দিচ্ছেন দেশসেরা এই ওপেনার। তুলে নিলেন দারুণ এক হাফসেঞ্চুরি।
৪২ বলে পঞ্চাশ স্পর্শ করেন তামিম। ওয়ানডেতে এটি তার ৪৮তম ফিফটি। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দশম অর্ধশতক।
আগের ম্যাচের সেঞ্চুরিয়ান লিটন দাস ফিরে যান ৯ রানে। ৬ রানে আউট নাজমুল হাসান শান্ত। তারা দ্রুত বিদায় নিলেও হাল ধরেছেন তামিম-মুশফিক।
সিরিজ জয়ের মিশনে ব্যাট করছে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে দেখে-শুনেই খেলছেন দুই ওপেনার। এরমধ্যে একটি অর্জনে সাকিব আল হাসানকে পেছনে ফেললেন তামিম ইকবাল। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে বাংলাদেশের হয়ে ওয়ানডেতে সবচেয়ে বেশি রান এখন এই বাঁহাতি ওপেনারের। নির্বাসিত থাকা সাকিবকে পেছনে ফেললেন তিনি।
পরিসংখ্যান জানাচ্ছে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সাকিব ৪২ ইনিংসে তুলেছেন ১৪০৪ রান। তামিম ৪০ ইনিংসে পেছনে ফেললেন সাকিবকে। ১৩৯৮ রান নিয়ে মঙ্গলবার শুরু হয় তামিমের। এ রিপোর্ট লেখার সময় তিনি অপরাজিত ২৮ রানে।
৬.২ ওভারে বিনা উইকেটে ৩৮ রান তুলেছে বাংলাদেশ। আগের ম্যাচের সেঞ্চুরিয়ান লিটন দাস অপরাজিত ৯ রানে।
সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ানডে খেলার আগে গুঞ্জন ছিল বাদ পড়তে পারেন মুশফিকুর রহিম। পাকিস্তান সফরে যেতে রাজি না হলে তাকে ছুড়ে ফেলা হতে পারে একাদশ থেকে-এমন কথা ভাসছিল ক্রিকেটাঙ্গনে। কিন্তু না, তেমনটা হয়নি। মুশি যথারীতি আছে দ্বিতীয় ওয়ানডের একাদশে।
জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টস জিতে ব্যাট করতে নামা বাংলাদেশ দলে এসেছে দুটি পরিবর্তন। আগের ম্যাচে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে অনায়াসে জিতলেও একাদশে নেই পেস বোলিং অলরাউন্ডার মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন এবং বাঁহাতি পেসার মুস্তাফিজুর রহমান। দলে ফিরলেন শফিউল ইসলাম ও আল-আমিন।
২০১৯ সালে জুলাইয়ে শ্রীলঙ্কায় সর্বশেষ খেলেন শফিউল। আল-আমিন ২০১৫ সালের পর ফিরলেন ওয়ানডেতে।
এদিকে জিম্বাবুয়ের নেতৃত্বে চামু চিবাবার জায়গায় এসেছেন শন উইলিয়ামস।
জিতলেই সিরিজ বাংলাদেশের। প্রথম ওয়ানডে জিতে এগিয়ে থেকেই আজ মঙ্গলবার মাঠে নামল মাশরাফি বিন মর্তুজার দল। সিলেট আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ানডেতে টস ভাগ্য থাকল বাংলাদেশের পক্ষে।
দিবা-রাত্রির এই ম্যাচে উইকেট ও আবহাওয়ার কথা চিন্তা করে টাইগার অধিনায়ক শুরুতেই ব্যাটসম্যানদের উপর আস্থা রাখলেন।
ঈর্ষণীয় রেকর্ড সঙ্গী করেই জিম্বাবুয়ের মুখোমুখি বাংলাদেশ। আগের ম্যাচেই দল পেয়েছে রেকর্ড গড়া ১৬৯ রানের বিশাল এক জয়। যেখানে লিটন দাস-তামিম ইকবালদের সামনে পাত্তা পায়নি সফরকারীরা। অবশ্য জিম্বাবুয়ে-বাংলাদেশ লড়াইটা এখন একেবারেই একপেশে।
ইতিহাস জানাচ্ছে-গত সাত বছর জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে কোনো ওয়ানডে ম্যাচেই হারেনি বাংলাদেশ। সেই ধারাবাহিকতটাই ধরে রাখতে চায় দল। মাশরাফি বিশ্বকাপ শেষে জাতীয় দলে ফিরে মানিয়েও নিয়েছেন। আগের ম্যাচে উইকেটেরও দেখা মিলেছে।
সব মিলিয়ে এ অব্দি জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে বাংলাদেশ ওয়ানডে খেলেছে ৭৩টি। তার মধ্যে ৪৫টিতে জয় আর ২৮টি হেরেছে টাইগাররা। সর্বশেষ ১৪ দেখাতেই জিতেছে লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা। সেই রেকর্ড আরও বাড়িয়ে নেওয়ার পালা। অন্য প্রান্তে তিন ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজে উত্তেজনা জিইয়ে রাখতে জয় চাই জিম্বাবুয়ের। না হলে এক ম্যাচ আগেই সিরিজ হেরে যাবে তারা।