রাজস্ব ফাঁকির ৭ হাজার মামলা উচ্চ আদালতে

আবুল খায়ের গ্রুপের ২০০ কোটি টাকা শুল্ক ফাঁকি



নাজমুল আহসান রাজু, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম, ঢাকা
আবুল খায়ের গ্রুপের লোগো

আবুল খায়ের গ্রুপের লোগো

  • Font increase
  • Font Decrease

নামীদামি প্রতিষ্ঠানের রাজস্ব ফাঁকির ৭ হাজার ১৫২ মামলা বিচারাধীন রয়েছে উচ্চ আদালতে। এরমধ্যে রয়েছে শুল্ক (কাস্টমস) ফাঁকির ২৫২৮ টি আপিল এবং মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট) ফাঁকির ৭৬০টি আপিল। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) ও কাস্টমস কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত চ্যালেঞ্জ করে রিট রয়েছে ৩ হাজার ৮৬৪টি।

উচ্চ আদালতে এসব মামলা নিষ্পত্তি হচ্ছে ধীরগতিতে। গত জুন মাসে নিষ্পত্তি হয়েছে মাত্র ১৩টি মামলা। চলতি বছরের মে মাসে ৮টি কাস্টমস ও একটি ভ্যাট মামলা এবং জুন মাসে তিনটি কাস্টমস এবং একটি ভ্যাট মামলার চূড়ান্ত নিষ্পত্তি হয়েছে।

তবে মামলাগুলোর বিপরীতে সঠিক আর্থিক পরিমাণের তথ্য পাওয়া না গেলেও আনুমানিক ৪ হাজার কোটি টাকা আর্থিক বিষয় জড়িত বলে জানা গেছে।

এক আবুল খায়ের গ্রুপের ৫৪ আপিলের বিপরীতেই ২০০ কোটি টাকার শুল্ক ফাঁকির বিরুদ্ধে আপিল করেছে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। চলতি বছরের জুন পর্যন্ত ৫৪ টি আপিলের বিপরীতে ২০০ কোটি শুল্ক ফাঁকির আপিল করেছে চট্টগ্রামের কাস্টমস কমিশনার।

জানা গেছে, আবুল খায়ের গ্রুপ, হোলসিম সিমেন্ট (বাংলাদেশ) লিমিটেড, বাটারফ্লাই মাকেটিং লিমিটেড, মংলা সিমেন্ট ফ্যাক্টরি লিমিটেড, এয়ারটেল বাংলাদেশ লিমিটেড, বাংলালিংক ডিজিটাল কমিউনিকেশন লিমিটেড, হোটেল কস্তুরি প্রাইভেট লিমিটেডসহ দেশের নামী কোম্পানিগুলোর আপিল ও রিট বিচারাধীন রয়েছে।

বিচারাধীন মামলার মধ্যে ২০১১ থেকে ২০১৫ ও ২০১৬ সালের আপিলের সংখ্যা বেশি। মাঝে ২০১৭ ও ২০১৮ সালের প্রায় মামলা হয়েছে। চলতি বছর দায়ের করা মামলা এখনো শুনানির জন্য কার্য তালিকায় আসেনি।

রাষ্ট্রপক্ষে শুল্ক ও ভ্যাট আপিল এবং রিট মামলাকে আলাদা গুরুত্ব দিচ্ছে অ্যাটর্নি জেনারেল অফিস। ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল প্রতিকার চাকমা বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে জানিয়েছেন, রাষ্ট্রের আর্থিক সম্পক জড়িত থাকায় অ্যাটর্নি  জেনারেল অফিস সব সময় শুল্ক ও ভ্যাটের মামলায় গুরুত্ব দিচ্ছে। একারণে ২০১৭ ও ২০১৮ সালের আপিল ও রিট শুনানির অপেক্ষায় নেই বললেই চলে। এরআগের মামলাগুলোর পর্যায়ক্রমে শুনানির জন্য পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

তিনি জানান, কাস্টমস কর্তৃপক্ষ বা আপিলকারী পক্ষ যোগাযোগ করলে আমরা তড়িৎ পদক্ষেপ নেওয়া হয়।

বর্তমানে হাইকোর্টের দুটি দ্বৈত বেঞ্চে এবং দুটি একক বেঞ্চে কাস্টমস আপিল ও রিটে আবেদনের শুনানি হচ্ছে। চলতি বছরে মে মাসে ২৫২৫ টি কাস্টমস আপিল এবং ৭৫৩টি ভ্যাট আপিল বিচারাধীন ছিল। মে ও জুনের এক মাসের তুলনামূলক পরিসংখ্যানে দেখা যায় ৩টি কাস্টমস আপিল এবং ৭টি ভ্যাট আপিল যোগ হয়েছে পরবর্তী মাসে।

আপিল আবেদন থেকে দেখা যায়, চীন থেকে ‘কেলন’ ব্যান্ডের রেফ্রিজারেটর আমদানির বিষয়ে ২০১৫ সালে আপিল করেন বাটারফ্লাই মার্কেটিং লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক। তার আগে ২০১৬ সালের ৭ এপ্রিল রাজধানীর কাস্টমস, এক্সাইজ অ্যান্ড ভ্যাট অ্যাপিলেট ট্রাইব্যুনাল বাটার ফ্লাই মার্কেটিংয়ের করা আপিল খারিজ করে দেয়।

বাটারফ্লাই মার্কেটিং ‘কেলন’ ব্র্যান্ডের ৩১২ ইউনিট রেফ্রিজারেটর আমদানি করে ২০১০ সালে। সঙ্গে খুচরা যন্ত্রাংশও ছিল। মূল্য ১৫ হাজার ৬০০ ডলার। প্রয়োজনীয় আনুষ্ঠানিক সম্পন্ন করে এগুলো আমদানি পর কমলাপুর আইসিডি থেকে এসব পণ্য খালাস করতে ২০১১ সালের ২১ মাচ বিল জমা দেয় কোম্পানিটি। কাস্টমস কর্তৃপক্ষ পণ্য সরেজমিন পরিদর্শন করে মান, পরিমাণ ও পণ্যের কোড যাচাই করে।

আমদানিকৃত পণ্যের ওপর ৫ লাখ ৯৩ হাজার ১০৮ টাকার শুল্ক আরোপ করে পণ্যের মূল্য নির্ধারণ করে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। এরমধ্যে বেসিক ব্যাংকের গ্যারান্টি দেখিয়ে পণ্য খালাস করে বাটারফ্লাই। পণ্য খালাসের পর তারা কাস্টমস (আপিল) কমিশনারের কাছে আবেদন করে। আবেদনে কোম্পানিটি দাবি করে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ বেআইনিভাবে পণ্যেও মূল্য নির্ধারণ করেছে। কোন যুক্তিসঙ্গত ভিত্তি ছাড়া এবং আইন বর্হিভূতভাবে এ শুল্ক আরোপ করা হয়েছে। চালানের ভিত্তিতে মূল্য পুননির্ধারণের জন্য বাটারফ্লাই আবেদন করে। ২০১১ সালের ১১ অক্টোবর কাস্টমস কমিশনার তাদের আবেদন খারিজ করে দেয়। এর বিরুদ্ধে আপিল করা হলে ২০১৬ সালের ৭ এপ্রিল কাস্টমস, এক্সাইজ অ্যান্ড ভ্যাট অ্যাপিলেট ট্রাইব্যুনালেও তা বহাল থাকে।

হোলসিম সিমেন্ট (বাংলাদেশ) লিমিটেড তাদের ৫০ লাখ টাকা জরিমানা আরোপ চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে। ঢাকার কাস্টমস, এক্সাইজ অ্যান্ড ভ্যাট অ্যাপিলেট ট্রাইব্যুনালে ২০১৪ সালের ২ ফেব্রুয়ারি দেওয়া রায়ে ওই জরিমানা বহাল থাকলে তারা এ চ্যালেঞ্জ করে।

সিমেন্ট উৎপাদন আরো বাড়াতে আরেকটি কারখানা স্থাপনের লক্ষ্যে স্ট্যান্ডার্ড চাটার্ড ব্যাংক মতিঝিল শাখার মাধ্যমে ভারত থেকে যন্ত্রপাতি আমদানি করে হোলসিম। আমদানিকৃত যন্ত্রপাতির মূল্য এক কোটি ৫৩ লাখ ৫ হাজার ৬৭৯ ডলার।

এলসি খোলার পর ২০১৩ সালের ৯ জানুয়ারি হোলসিম আনুষঙ্গিক যন্ত্রপাতি আমদানিতে রেয়াত পেতে আবেদন করে এনবিআরে। ১৭ জানুয়ারি রেয়াতের আবেদনে সাড়া দিয়ে একটি চিঠি ইস্যু করে এনবিআর। যন্ত্রপাতি আসার পর নারায়নগঞ্জ বন্দরে তা খালাসের জন্য বিল জমা দেওয়া হলে এইচএস কোডের ভিত্তিতে পণ্য খালাসের অনুমতি দেয় কাস্টমস কর্তৃপক্ষ।

খালাসের পর ২০১৩ সালের ৬ অক্টোবর কাস্টমস কর্তৃপক্ষ ১ কোটি ৯৬ লাখ ৫২ হাজার ১৩৩ টাকা শুল্ক দাবি করে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয় হোলসিমকে। কেন আপিলকারীর বিরুদ্ধে শাস্তি আরোপ করা হবে না তা জানতে চাওয়া হয় নোটিশে। পরে আইন লঙ্ঘনের দায়ে ৫০ লাখ টাকা জরিমানা আরোপ করে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। এর বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালে আপিল করলে সেখানেও তা বহাল থাকে।

আবুল খায়ের স্টিল প্রোডাক্টস লিমিটেড জাপান থেকে প্রাইম কোয়ালিটির ইলেকট্রোলাইট টিন প্লেট আমদানি করে ২০১৬ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি। পণ্য খালাসের জন্য বিল জমা দেওয়ার পর প্রতি টন ২৭০ ডলার মূল্যের পরিবর্তে ৩০০ ডলার মূল্য নির্ধারণ করে চট্টগ্রাম কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। এরপর পণ্য খালাস করে কাস্টমসের রিভিউ কমিটির কাছে আবেদন করে আবুল খায়ের স্টিল। ২০১৬ সালের ৩ আগস্ট রিভিউ কমিটি অতিরিক্ত নেওয়া অর্থ আবুল খায়ের স্টিলকে ফেরত দিতে কাস্টমসকে নির্দেশ দেয়। এর বিরুদ্ধে আপিল করলে ২০১৮ সালের ২৮ নভেম্বর ট্রাইব্যুনালেও তা বহাল থাকে ট্রাইব্যুনালের এ রায়ের বিরুদ্ধে চলতি বছরের ১৮ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্টে আপিল করেন কাস্টমস কমিশনার (আমদানি)।

রাজধানীর পুরানা পল্টনের হোটেল কস্তুরি প্রাইভেট লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কাওসার আহমেদের ভ্যাট ফাঁকির একটি আপিল বিচারাধীন রয়েছে হাইকোর্টে। ৯ লাখ ২৬ হাজার ৫৩৭ টাকার ভ্যাট ফাঁকির অভিযোগে শুল্ক গোয়েন্দা ইউনিটের কর ধার্যের বিরুদ্ধে তিনি আবেদন করলে ২০১৮ সালের ৪ জুন কাস্টমস কমিশনার তা খারিজ করে দেন। এর বিরুদ্ধে তিনি আপিল করলে চলতি বছর ২৫ মে কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট অ্যাপিলেট ট্রাইব্যুনালে কাস্টমস কমিশনারের আদেশ বহাল থাকে। ট্রাইব্যুনালের এ রায়ের বিরুদ্ধে চলতি বছরের ২৪ জুলাই হোটেল কস্তুরির মালিক কাওসার আহমেদ এ আপিল দায়ের করেন।

সেনা কল্যাণ সংস্থার প্রতিষ্ঠান মংলা সিমেন্ট ফ্যাক্টরি লিমিটেডের ক্লিংকার আমদানির বিষয়ে ট্রাইব্যুনালের রায়ের বিরুদ্ধে চলতি বছরের ২৩ এপ্রিল করা হয়েছে হাইকোর্টে। ক্লিংকার আমদানিতে ১ শতাংশের পরিবর্তে কাস্টমস ২ শতাংশ শুল্ক মূল্য নির্ধারণ করলে তাতে অসন্তুষ্ট মংলা সিমেন্ট ফ্যাক্টরি আইনি লড়াইয়ে নামে।

   

হাইকোর্টের রায় প্রকাশ: রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম সংবিধানবিরোধী নয়



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

৩৬ বছর আগে রাষ্ট্রধর্ম ইসলামকে চ্যালেঞ্জ করা রিট আবেদন সরাসরি খারিজের রায় প্রকাশ করেছেন হাইকোর্ট। রায়ের পর্যবেক্ষণে হাইকোর্ট বলেছেন, রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক নয়। রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম সংবিধানের মৌলিক কাঠামোকেও আঘাত করে না।

বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) রায় প্রদানকারী বিচারপতিদের স্বাক্ষরের পর ৫২ পৃষ্ঠার রায়ের অনুলিপি প্রকাশিত হয়।

এর আগে, বিচারপতি নাইমা হায়দারের নেতৃত্বাধীন তিন বিচারপতির বৃহত্তর হাইকোর্ট বেঞ্চ রায়ের অনুলিপিতে স্বাক্ষর করেন। বেঞ্চের অন্য দুই বিচারপতি হলেন— বিচারপতি কাজী রেজা-উল হক ও বিচারপতি মো. আশরাফুল কামাল।

রিটটি খারিজের সিদ্ধান্তের সঙ্গে তিন বিচারপতি একমত পোষণ করেছেন। তবে, রায়ে পৃথক পর্যবেক্ষণ দিয়েছেন বেঞ্চের কনিষ্ঠ বিচারপতি মো. আশরাফুল কামাল।

বেঞ্চের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি নাইমা হায়দারের লেখা পর্যবেক্ষণে বলা হয়েছে, সংবিধানের ২(ক) অনুচ্ছেদে সন্নিবেশিত রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম শুধু সংবিধানের প্রস্তাবনায় উল্লিখিত শুধু মৌলিক নীতিগুলো অন্য কোনও বিধানের সঙ্গেও অসঙ্গতিপূর্ণ নয়। সংবিধানে ইসলামকে ‘রাষ্ট্রধর্ম মর্যাদা’ প্রদান করা হলেও রাষ্ট্রীয়ভাবে রাজনৈতিক মর্যাদা প্রদানের বাধ্যবাধকতা নেই। অনুচ্ছেদ ২(ক) অবশ্যই সামগ্রিকভাবে পড়তে হবে এবং পড়লে এটা সুস্পষ্ট হয় যে, ইসলামকে রাষ্ট্রধর্ম করার ধারণার সন্নিবেশ কোনোভাবেই ভিন্ন ধর্মাবলম্বীদের সাংবিধানিক অধিকারকে খর্ব করে না। এটি সংবিধানের মৌলিক কাঠামোকেও প্রভাবিত করে না এবং সংবিধানে বাহুল্যও সৃষ্টি করে না।

রায়ে বলা হয়েছে, তর্কিত সংশোধনী সংবিধানে সন্নিবেশিত রাষ্ট্রধর্ম ধর্মনিরপেক্ষতার ধারণাকেও প্রভাবিত করে না। অতএব, আমরা মনে করি যে, তর্কিত সংশোধনীর মাধ্যমে অনুচ্ছেদ ২(ক) সন্নিবেশ করে ইসলামকে রাষ্ট্রধর্ম হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া সংবিধানবিরোধী নয়। বিষয়টিকে সহজ করার প্রয়াস হিসেবে, উপস্থাপিত যুক্তিতর্ক আমরা আমাদের রায়ে আলোচনা করেছি।

প্রসঙ্গত, ১৯৮৮ সালে অষ্টম সংশোধনীর মাধ্যমে সংবিধানে রাষ্ট্রধর্ম হিসেবে ইসলামকে সংযুক্ত করেন তৎকালীন রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। সংবিধানে ২(ক) অনুচ্ছেদ যুক্ত করে বলা হয়, প্রজাতন্ত্রের রাষ্ট্রধর্ম হবে ইসলাম, তবে অন্যান্য ধর্মও প্রজাতন্ত্রে শান্তিতে পালন করা যাবে।

তখন স্বৈরাচার ও সাম্প্রদায়িকতা প্রতিরোধ কমিটির পক্ষে ওই বিধানের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট আবেদন করেছিলেন ১৫ জন ব্যক্তি। তাদের মধ্যে অনেকেই মারা গেছেন। তারা হলেন- সাবেক প্রধান বিচারপতি কামালউদ্দিন হোসেন, বিচারপতি দেবেশ চন্দ্র ভট্টাচার্য, বিচারপতি কে এম সোবহান, কবি সুফিয়া কামাল, অধ্যাপক খান সারওয়ার মুরশিদ, জ্যেষ্ঠ আইনজীবী সৈয়দ ইশতিয়াক আহমেদ, অধ্যাপক কবীর চৌধুরী, শিল্পী কলিম শরাফী, অধ্যাপক মোশাররফ হোসেন, সাংবাদিক ফয়েজ আহমদ, অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী, সেক্টর কমান্ডার সি আর দত্ত, লেখক বদরুদ্দীন উমর, অধ্যাপক বোরহানউদ্দিন খান জাহাঙ্গীর ও অধ্যাপক আনিসুজ্জামান।

;

গয়েশ্বর-কায়সার কামালের জামিন



স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

রাজধানীর পল্টন ও রমনা থানার নাশকতার ছয় মামলায় জামিন পেয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়।

বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করেন তিনি। শুনানি শেষে সংশ্লিষ্ট আদালতের বিচারক মোহাম্মদ আস্ সামছ জগলুল হোসেন তার এ জামিন মঞ্জুর করেন।

মামলাগুলোর মধ্যে পল্‌টন থানার চার ও রমনা থানার দুই মামলা রয়েছে।

সংশ্লিষ্ট আদালতের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর তাপস কুমার পাল জানান, গয়েশ্বরের হাইকোর্টের দেওয়া জামিনের মেয়াদ শেষ হওয়ায় বৃহস্পতিবার আদালতে এসে আত্মসমর্পন করে জামিনের আবেদন করলে আদালত তার জামিন মঞ্জুর করেন।

২০২৩ সালের ২৮ অক্টোবর বিএনপির মহাসমাবেশে সংঘর্ষের ঘটনায় এ ছয়টি মামলা দায়ের করা হয়।

গত ২২ জানুয়ারি বিচারপতি হাবিবুল গণি ও বিচারপতি আহমেদ সোহেলের হাইকোর্ট বেঞ্চ গয়েশ্বর চন্দ্র রায়কে ২৫ মার্চ পর্যন্ত আগাম জামিন দেন।

এদিকে সুপ্রিম কোর্ট বারের নির্বাচনে সংঘর্ষের ঘটনায় করা মামলায় জামিন নিতে এদিন একই আদালতে আত্মসমর্পণ করেন বিএনপির আইন বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার কায়সার কামাল। শুনানি শেষে আদালত তারও জামিন মঞ্জুর করেন।

;

শপথ নিলেন আপিল বিভাগের তিন বিচারপতি



স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের নবনিযুক্ত তিন বিচারপতি শপথ নিয়েছেন।

বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ১০টায় সুপ্রিম কোর্ট জাজেস লাউঞ্জে এই তিন বিচারপতিকে শপথবাক্য পাঠ করান প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান।

সদ্য নিয়োগ পাওয়া তিন বিচারপতি হলেন- বিচারপতি মুহাম্মদ আব্দুল হাফিজ, বিচারপতি মো. শাহিনুর ইসলাম ও বিচারপতি কাশেফা হোসেন।

এর আগে, বুধবার (২৪ এপ্রিল) সংবিধানের ৯৫(১) অনুচ্ছেদের ক্ষমতাবলে এই তিনজনকে বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ দেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। পরে একই দিন দুপুরে এ বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করে আইন মন্ত্রণালয়।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, আপিল বিভাগে সদ্য নিয়োগ পাওয়া এই তিন বিচারপতির শপথ বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টায় অনুষ্ঠিত হবে। প্রধান বিচারপতি তাদের শপথ পড়াবেন। শপথ গ্রহণের পর থেকে এই নিয়োগ কার্যকর হবে বলেও প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ রয়েছে।

প্রসঙ্গত, বর্তমানে প্রধান বিচারপতিসহ আপিল বিভাগে পাঁচজন বিচারপতি রয়েছেন। নতুন এই তিনজনের নিয়োগ হওয়ায় আপিল বিভাগের বিচারপতির সংখ্যা আটজনে দাঁড়াল।

;

বীর মুক্তিযোদ্ধা হত্যায় ভাতিজার যাবজ্জীবন



স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

তিন বছর আগে ঢাকা জেলার কেরানীগঞ্জের পশ্চিম রোহিতপুর এলাকায় বীর মুক্তিযোদ্ধা মোজাফফর আলীকে হত্যার দায়ে ভাতিজা ঠাণ্ডুকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের পাশাপাশি ঠাণ্ডুকে ১০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে আরও এক মাস বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

এছাড়া নিহতের মেয়ে জেলিনা আক্তার মৌকে গুরুতর আঘাতের দায়ে তাকে আরও ১০ বছরের কারাদণ্ড, পাঁচ হাজার টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে তাকে আরও এক মাস কারাভোগ করতে হবে।

বুধবার (২৪ এপ্রিল) ঢাকার ৮ম অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ মিনহাজুল মনিরার আদালত এ রায় প্রদান করেন। মামলার বিচার চলাকালে আদালত ১৬ জন সাক্ষীর মধ্যে ১১ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করেন।

রায় ঘোষণার আগে ঠাণ্ডুকে কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয়। রায় শেষে সাজা পরোয়ানা দিয়ে তাকে ফের কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়।

ঠাণ্ডুর বাবা মারা যাওয়ার পর সে তার সম্পত্তি চাচা মোজাফফর আলীর কাছে বিক্রি করে অন্যত্র চলে যায়। মাঝে মধ্যে ঠাণ্ডু তার চাচার কাছে এসে খরচের টাকা দাবি করে নিয়ে যেত।

২০২১ সালের ১৫ জুলাই সে তার চাচার কাছে ৫০০ টাকা চাইলে মোজাফফর আলী তাকে ২০০ টাকা দিয়ে বলেন আর নাই। এরপর তিনি বাড়ির সামনে টিউবওয়েলে গোসল করতে যান। এসময় ঠাণ্ডু অতর্কিতভাবে চাচার পেটে চাকু ঢুকিয়ে দেয়। তার বড় মেয়ে জেলিনা আক্তার বাবাকে বাঁচাতে গেলে তাকেও আহত করে। দুই জনকে স্যার সলিমুল্লাহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল চিকিৎসার জন্য নেওয়া হয়। পরে কর্তব্যরত চিকিৎসক মোজাফফর আলীকে মৃত ঘোষণা করেন।

এ ঘটনায় পরদিন মোজাফফর আলীর স্ত্রী নার্গিস বেগম মামলা দায়ের করেন।

;