নাইকো মামলার শুনানি ২১ জানুয়ারি
পূর্ব ছাতক গ্যাসক্ষেত্র অনিয়মের মাধ্যমে কানাডার কোম্পানি নাইকোর হাতে তুলে দেয়া সংক্রান্ত দুর্নীতি মামলার পরবর্তী চার্জ শুনানির জন্য আগামী ২১ জানুয়ারি দিন ধার্য করেছেন আদালত।
এছাড়া মামলার কিছু কাগজপত্রের সত্যায়িত অনুলিপির জন্য মওদুদ আহমেদের করা আবেদনের ওপর শুনানির জন্য ১৫ জানুয়ারি দিন ধার্য করা হয়েছে।
রোববার (১৩ জানুয়ারি) ঢাকার বিশেষ জজ-৯ এর বিচারক শেখ হাফিজুর রহমান এসব আদেশ দেন।
এদিন আসামি সেলিম ভুইয়া, সিএম ইউসুফ ও গিয়াস উদ্দিন আল মামুনের পক্ষে চার্জ শুনানি শেষ হয়। মওদুদ আহমেদের পক্ষে আংশিক চার্জ শুনানি অনুষ্ঠিত হয়।
খালেদা জিয়ার পক্ষে তার আইনজীবী এজে মোহাম্মদ আলী ও মাসুদ আহমেদ তালুকদারসহ কয়েক আইনজীবী আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
দুপুর পৌনে ১২টায় খালেদা জিয়া আদালতে আসেন। এরপর আদালতের কার্যক্রম শুরু হয়।
মওদুদ আহমেদ চার্জ শুনানির এক পর্যায়ে বলেন, 'নাইকোকে কাজ দেওয়ার সব বন্দোবস্ত আওয়ামী লীগ সরকার করে গেছে। তাদের নামেও এ মামলা হয়েছিল। তারা সরকারে বলে তাদের নামে মামলা নেই। আমরা বিরোধীদলে বলেই বিপদে পড়ে গেছি।'
মামলার প্রধান আসামিরা হলেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া, সাবেক আইনমন্ত্রী ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ ও সাবেক জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী এ কে এম মোশাররফ হোসেন, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সচিব খন্দকার শহীদুল ইসলাম, ঢাকা ক্লাবের সাবেক সভাপতি সেলিম ভূঁইয়া ও ব্যবসায়ী গিয়াস উদ্দিন আল মামুন, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সাবেক সিনিয়র সহকারী সচিব সি এম ইউছুফ হোসাইন।
পলাতক অন্য ৩ আসামি হলেন, সাবেক মুখ্য সচিব কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী, বাপেক্সের সাবেক মহা-ব্যবস্থাপক মীর ময়নুল হক ও নাইকোর দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক ভাইস প্রেসিডেন্ট কাশেম শরীফ।
চলতি বছরের ৫ মে এই মামলায় অভিযুক্ত আরেক আসামি সাবেক সচিব শফিউর রহমান মারা যান।
গত বছরের ২০ নভেম্বর দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) স্পেশাল পাবলিক প্রসিকিউটর মোশাররফ হোসেন কাজল বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াসহ মামলার ১১ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের আবেদন জানান।
কানাডার কোম্পানি নাইকোর সঙ্গে অস্বচ্ছ চুক্তির মাধ্যমে রাষ্ট্রের বিপুল পরিমাণ আর্থিক ক্ষতিসাধন ও দুর্নীতির অভিযোগে খালেদা জিয়াসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে দুদকের সহকারী পরিচালক মুহাম্মদ মাহবুবুল আলম ২০০৭ সালের ৯ ডিসেম্বর তেজগাঁও থানায় মামলাটি করেন।
২০০৮ সালের ৫ মে এ মামলায় খালেদা জিয়াসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র (চার্জশিট) জমা দেন দুদকের সহকারী পরিচালক এস এম সাহেদুর রহমান।
অভিযোগপত্রে প্রায় ১৩ হাজার ৭৭৭ কোটি টাকার রাষ্ট্রীয় ক্ষতির অভিযোগ আনা হয়।
নাইকো ছাড়াও গ্যাটকো ও বড়পুকুরিয়া কয়লাখনি দুর্নীতি মামলার বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে তা বাতিলের আবেদন জানিয়ে পৃথক রিট করেছিলেন খালেদা জিয়া। এসব রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে দুর্নীতি মামলাগুলোর কার্যক্রম স্থগিত ও রুল জারি করেন হাইকোর্ট।
কয়েক বছর ধরে স্থগিত থাকার পর মামলাগুলো সচলের উদ্যোগ নিয়ে রুল নিষ্পত্তির আবেদন জানায় দুদক। পরে গতবছর পৃথক পৃথক শুনানি শেষে মামলা তিনটি সচলের রায় দেন হাইকোর্ট।