ইজতেমায় লাখো কণ্ঠের ফরিয়াদ, আমিন... আল্লাহুম্মা আমিন



মুফতি এনায়েতুল্লাহ, বিভাগীয় প্রধান, ইসলাম
ইজতেমা মঞ্চে মাওলানা ইবরাহিম দেওলা ও মাওলানা যোবায়ের

ইজতেমা মঞ্চে মাওলানা ইবরাহিম দেওলা ও মাওলানা যোবায়ের

  • Font increase
  • Font Decrease

বিশ্ব ইজতেমা ময়দান (টঙ্গী, গাজীপুর) থেকে: আলমি শুরার তত্ত্বাবধানে অনুষ্ঠিত তাবলিগ জামাতের ৫৪তম বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্ব আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হয়েছে। ইজতেমার ইতিহাসে দ্বিতীয়বারের মতো কোনো বাংলাদেশি শীর্ষ আলেম মোনাজাত পরিচালনা করলেন। এর আগে গত বছরের ইজতেমায় মাওলানা যোবায়ের প্রথমবারের মতো মোনাজাত করেন। ইজতেমার শুরু থেকেই দিল্লি নিজামুদ্দিনের মুরব্বিরা আখেরি মোনাজাত পরিচলানা করে আসছিলেন।

শনিবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) বেলা ১০টা ৪৩ মিনিটে আখেরি মোনাজাত শুরু হয়। মোনাজাত পরিচালনা করেন কাকরাইল মসজিদের খতিব, কাকরাইলের মুরব্বি ও বিশ্ব তাবলিগের শুরা সদস্য হাফেজ মাওলানা যোবায়ের।

আরবি-বাংলায় মোনাজাত

মোনাজাতের আগে বিভিন্ন মেয়াদে তাবলিগের জন্য বের হওয়া সাথীদের উদ্দেশ্যে বিশেষ দিক-নির্দেশনা তথা হেদায়েতি বয়ান করেন ভারতের রায়বেন্ড মারকাজের মুরব্বি মাওলানা খুরশেদ আলম। তার বয়ান বাংলায় অনুবাদ করেন মাওলানা আবদুল মতিন। এরপর ভারতের শীর্ষ তাবলিগি মুরব্বি ও বিশ্ব তাবলিগের শুরা সদস্য মাওলানা ইবরাহিম দেওলা দোয়া ও মোনাজাতের তাৎপর্য নিয়ে সংক্ষেপে বয়ান করেন। এর পর শুরু হয় আখেরি মোনাজাত।

বেলা ১০টা ৪৩ মিনিটে শুরু হওয়া মোনাজাত ১১টা ৬ মিনিটে শেষ হয়। ২৩ মিনিট স্থায়ী আখেরি মোনাজাতের প্রথম ১০ মিনিট আরবিতে আল্লাহতায়ালার প্রশংসা, নবী করিম (সা.)-এর ওপর দরুদ শরিফ, কোরআনে কারিমে বর্ণিত বিভিন্ন দোয়া সম্বলিত আয়াত এবং হাদিসে উল্লেখিত দোয়া ফজিলতপূর্ণ দোয়াগুলো পাঠ করেন মাওলানা যোবায়ের। তিনি আরবি ও বাংলা ভাষায় মোনাজাত পরিচালনা করেন।

 চারদিকে শুধু কান্নার আওয়াজ

আখেরি মোনাজাতে আত্মশুদ্ধি ও নিজ নিজ গোনাহমাফের পাশাপাশি দুনিয়ার সব বালা-মুসিবত থেকে হেফাজতের জন্য দু’হাত তুলে আল্লাহতায়ালার দরবারে রহমত প্রার্থনা করা হয়। এ সময় ‘আমিন, আল্লাহুম্মা আমিন’ ধ্বনিতে আকাশ-বাতাস মুখরিত হয়ে উঠে পুরো টঙ্গী এলাকা। নানা বয়সি মানুষের কান্নার ধ্বনিতে তুরাগ তীরের আকাশ-বাতাস ভারি করে তুলে। বিশাল জনসমুদ্রে নেমে আসে পিনপতন নীরবতা, শুধু শোনা যায় কান্নার আওয়াজ। যে যেখানে ছিলেন সেখানে দাঁড়িয়ে কিংবা বসে হাত তোলেন আল্লাহর দরবারে। কান্নায় বুক ভাসান তারা। মুঠোফোন ও স্যাটেলাইট টেলিভিশনে সরাসরি সম্প্রচারের সুবাধে দেশ-বিদেশের আরও লাখ লাখ মানুষ একসঙ্গে হাত তোলেন আল্লাহর দরবারে। দোয়া কবুলের ফরিয়াদের জন্য লাখ লাখ মানুষ সমস্বরে বুকফাঁটা কান্নার আর্তনাদ করে আল্লাহুম্মা আমিন, আমিন ইয়া রাব্বাল আলামীন বলে কাঁদতে থাকেন। হালকা বৃষ্টির ফোঁটা কান্নার আবেগকে আরও বাড়িয়ে দেয়, পুরো এলাকায় তৈরি হয় এক আবেগঘন পরিবেশ।

মোনাজাতে দেশ-বিদেশের ৩০ লক্ষাধিক ধর্মপ্রাণ মুসল্লি অংশ নিয়েছেন বলে মনে করা হচ্ছে।

অতিরিক্ত মাইকে স্বস্তি

বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্বের আখেরি মোনাজাত প্রচারের জন্য গণযোগাযোগ অধিদফতর ও গাজীপুর জেলা তথ্য অফিস বিশেষ ব্যবস্থা নেয়। এর মধ্যে গণযোগাযোগ অধিদফতর ইজতেমা ময়দান থেকে আবদুল্লাহপুর ও বিমানবন্দর রোড পর্যন্ত এবং গাজীপুর জেলা তথ্য অফিস ইজতেমা ময়দান থেকে চেরাগআলী, টঙ্গী রেলস্টেশন, স্টেশন রোড থেকে শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টার উড়াল সেতু ও আশপাশের অলিগলিতে পর্যাপ্ত মাইক সংযোগ দেওয়া হয়। আখেরি মোনাজাত উপলক্ষে টঙ্গী, গাজীপুর, উত্তরাসহ চারপাশের এলাকার সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, কলকারখানা, মার্কেট, বিপণিবিতান ও অফিসসহ সবকিছু বন্ধ ছিল। ফলে এসব এলাকার কর্মজীবিদের মোনাজাতে অংশ নিতে কোনো সমস্যা হয়নি। তাবলিগি কর্তৃপক্ষের নিষেধ সত্ত্বে প্রচুর নারী মোনাজাতে অংশ নেন।

মোনাজাতে যা বলা হয়

আখেরি মোনাজাতে হাফেজ মাওলানা যোবায়ের বলেন, হে আল্লাহ! আমাদের ঈমানকে আরও মজবুত করে দিন। আমাদেরকে আপনার প্রিয় বান্দা হিসেবে কবুল করুন। আমাদের জীবনের সব পাপ মাফ করে দিন। হে আল্লাহ! আপনি ক্ষমাশীল, আপনার কাছেই তো আমরা ক্ষমা চাইব। আমাদের ক্ষমা করুন। দ্বীনের ওপর চলা সহজ করে দিন। দুনিয়ার সব বালা-মুসিবত থেকে আমাদের হেফাজত করুন।

হে আল্লাহ! আমরা পাপীষ্ঠ, আমরা অপরাধী, আমরা ভুলে যাই, আমরা ভুল করি; অনুগ্রহ করে আমাদের সব গোনাহ আপনি ক্ষমা করে দিন। আমাদের মা-বাবা, আত্মীয়-স্বজন থেকে শুরু করে কবরবাসী প্রত্যেক মুসলমানের গোনাহ মাফ করে দিন।

ও দয়াময় মাওলা! যে কাজের জন্য আপনি আমাদের দুনিয়ায় পাঠিয়েছেন, যে দায়িত্ব দিয়েছেন-  আমরা সে সব থেকে অলস, গাফেল। মেহেরবানি করে আমাদের গাফলতির পর্দা উঠিয়ে দিন। আমাদের উদাসীনতা দূর করুন। আমাদের কাজের শক্তি দিন, অলসতা দূর করে দিন।

হে আল্লাহ! উম্মত আজ দাওয়াতের কাজ থেকে দূরে সরে গেছে, জাগতিক মোহ, নফসের পূজা আর প্রবৃত্তির অনুসরণে লিপ্ত হয়ে পড়েছে। আপনি সবাইকে দ্বীনের সঠিক বুঝ দান করুন। জাগতিক মোহ, নফসের পূজা আর প্রবৃত্তির অনুসরণ থেকে দূরে রেখে আমাদের মূল জিম্মাদারির সঙ্গে জুড়ে থাকার তওফিক দিন।

হে আল্লাহ! আমাদেরকে ঈমানে পরিপূর্ণতা দান করুন। আপনার সমুদয় নির্দেশ আপনার হাবিবের সুন্নতমতে পালন করার তওফিক দিন। রাত-দিন, সকাল-বিকাল, দেশে-বিদেশে, জলে-স্থলে যখন যেখানে আপনার যে হুকুম, তা সঠিকভাবে পালন করার তওফিক দিন।

হে আল্লাহ! আমাদের ঈমান বাড়িয়ে দিন। ঈমানের দাওয়াতের কাজে ঘর থেকে বের হওয়ার তওফিক দিন। ঈমানের জন্য সাহাবায়ে কেরামের মতো যে কোনো ত্যাগ, কষ্ট ও ক্লেশ সহ্য করার ক্ষমতা ও সামর্থ্য দান করুন।

হে আল্লাহ! আমাদের দূর্বল ঈমানকে আপনি শক্তিশালী করে দিন। দাওয়াতে তাবলিগের ওপর আপনি ঈমানের মজবুতি রেখেছেন- এ কথা সবাইকে বুঝার ও মানার তওফিক দিন। সুন্নতমতে জীবন গড়ার তওফিক দিন। সুন্নতের দাওয়াত বিশ্বময় ছড়িয়ে দেওয়ার তওফিক দান করুন। বিদয়াত থেকে আমাদেরকে দূরে রাখুন। সুন্নত ও বিদয়াতকে চেনার ও পার্থক্য করার বিবেচনাবোধ দান করুন।

হে আল্লাহ! আমাদেরকে দ্বীনের ওপর অটল, অনড় ও অবিচল থাকার যোগ্যতা দিন। হে আল্লাহ! আমরা মুহতাজ, আপনি বে নায়াজ। আমরা পাপী, আপনি ক্ষমাকারী। আমরা উদাসীন, আপনি আমাদের সতর্ক থাকার তওফিক দিন। নামাজের পাবন্দি করার তওফিক দান করুন। জিন্দা নামাজ আদায় করার তওফিক দান করুন। নামাজে খুশ-খুজু দান করুন। জামাতের সঙ্গে তাকবিরে উলার সঙ্গে নামাজ পড়ার তওফিক দিন। আমাদের সব আমল কবুল করুন। ইখলাস দান করুন। অলসতা, বিলাসিতা ও লৌকিকতা থেকে বেঁচে থাকার তওফিক দান করুন।

হে আল্লাহ! সকল বাঁধা ও সমস্যা দূর করে দিন। সবার ভেতর দ্বীনের ফিকির দান করুন। ঐক্যবদ্ধ থাকার তওফিক দিন। আমাদের বিভেদকে মিটিয়ে দিন। আমাদেরকে মনে হিংসা-বিদ্বেষ থেকে হেফাজতে রাখুন।

হে আল্লাহ! পৃথিবীর সব ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানকে আপনি কবুল করুন। সব মসজিদ, মাদরাসা, খানকা ও জামাতকে আপনি কবুল করুন। আলেমদের নেক হায়াত দান করুন। সবাইকে ইখলাসের সঙ্গে দ্বীনের কাজে লেগে থাকার তওফিক দান করুন।

হে আল্লাহ! যে সব জামাত আপনার রাস্তায় বেরিয়ে যাচ্ছে, তাদের আপনি জিম্মাদার হয়ে যান। সকল প্রকার বাধা দূর করে আপনি তাদের সাহায্য করুন। আর যারা আপনার রাস্তায় এখনও বের হতে পারেনি তাদেরকে দ্রুত আপনার রাস্তায় বের হওয়ার তওফিক দান করুন।

হে আল্লাহ! যারা অসুস্থ তাদেরকে সুস্থতা দান করুন। যারা বিভিন্ন সমস্যায় তাদের সমস্যাগুলো দ্রুত সমাধান করে দিন। যারা ঋণগ্রস্ত তাদের ঋণ আদায়ের ব্যবস্থা করে দিন। যারা নিযার্তিত তাদের সহায়তা করুন। বেকারদের হালাল রুজির ব্যবস্থা করে দিন। বিবাহযোগ্যদের বিয়ের ব্যবস্থা করে দিন। যারা বিভিন্ন বৈধ বাসনা নিয়ে মোনাজাতে শরিক হয়েছে তাদের সেসব বাসনাগুলোকে আপনি কবুল করুন।

ইয়া আল্লাহ! মেহেরবানি করে আমাদের মোনাজাতকে কবুল করুন। যেভাবে আপনার কাছে চাওয়া দরকার- আমরা সেভাবে চাইতে পারিনি। কিন্তু আপনি অন্তযার্মী, আপনি সবার মনের কথা জানেন- সেটাকেই আপনি কবুল করে নেন।

হে আল্লাহ! এই ইজতেমাকে কবুল করুন। যারা ইজতেমার জন্য মেহনত করেছে তাদেরকে কবুল করুন। আমিন, ইয়া রাব্বাল আলামিন।

মাওলানা সাদ অনুসারীরা মাঠে আসবেন রোববার থেকে

আখেরি মোনাজাত শেষে শনিবার মধ্যরাতের আগে আলমি শুরার অনুসারী তাবলিগের সাথীরা ইজতেমার ময়দান মাঠ ত্যাগ করবেন, মাঠ বুঝিয়ে দেওয়া হবে প্রশাসনের কাছে। পরে প্রশাসন মাওলানা সাদের অনুসারী অনুসারীদে ইঞ্জিনিয়ার ওয়াসিফুল ইসরামের অনুসারীদের কাছে ইজতেমার ময়দান বুঝিয়ে দেবেন। তারা রোববার (১৭) বাদ ফজর থেকে ইজতেমার দ্বিতীয় পর্বের কাজ শুরু করবেন। সোমবার আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হবে এবারের ৫৪তম বিশ্ব ইজতেমা।

   

রিজিক বৃদ্ধির ৪ আমল



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
কোরআন-হাদিসে রিজিক বৃদ্ধির বিভিন্ন আমলের কথা বর্ণিত হয়েছে, ছবি : সংগৃহীত

কোরআন-হাদিসে রিজিক বৃদ্ধির বিভিন্ন আমলের কথা বর্ণিত হয়েছে, ছবি : সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

মুমিন মাত্রই বিশ্বাস করেন যে, তার আয়-উপার্জন, জীবন-মৃত্যু এবং সৌভাগ্য-দুর্ভাগ্য ইত্যাদি র্নিধারণ হয়ে যায়; যখন তিনি মায়ের উদরে থাকেন। আর এসব তিনি লাভ করেন তার জন্য বরাদ্দ উপায়-উপকরণগুলোর মাধ্যমে। তাই আমাদের কর্তব্য হলো- হাত গুটিয়ে বসে না থেকে এর জন্য র্নিধারিত উপায়-উপকরণ সংগ্রহে চেষ্টা করা। যেমন চাষাবাদ, ব্যবসায়-বাণিজ্য, শিল্প-চারু, চাকরি-বাকরি বা অন্য কিছু।

আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘তিনিই তো তোমাদের জন্য জমিনকে সুগম করে দিয়েছেন, কাজেই তোমরা এর পথে প্রান্তরে বিচরণ করো এবং তার রিজিক থেকে তোমরা আহার করো। আর তার নিকটই পুনরুত্থান।’ -সুরা আল মুলক : ১৫

কোরআন-হাদিসে রিজিক বৃদ্ধির বিভিন্ন আমল ও উপায়ের কথা বর্ণিত হয়েছে। সেখান থেকে ৪টি আমলের কথা উল্লেখ করা হলো-

তওবা-ইস্তেগফার : তওবা-ইস্তিগফার করার মাধ্যমে বান্দার রিজিক বাড়ে। আল্লাহতায়ালা পবিত্র কোরআনে ইরশাদ করেছেন, ‘আমি তাদের বলেছি, নিজ প্রতিপালকের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করো। নিশ্চয়ই তিনি অতিশয় ক্ষমাশীল। তিনি আকাশ থেকে তোমাদের ওপর প্রচুর বৃষ্টি বর্ষণ করবেন এবং তোমাদের ধনসম্পদ ও সন্তানসন্ততিতে উন্নতি দান করবেন এবং তোমাদের বাগবাগিচা এবং নদীনালা দান করবেন।’ -সুরা নুহ : ১০-১২

হাদিসে হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি লাগাতার তওবা-ইস্তেগফার করবে; আল্লাহতায়ালা সংকট থেকে উত্তরণের পথ বের করে দেবেন; সব দুশ্চিন্তা মিটিয়ে দেবেন এবং অকল্পনীয় উৎস থেকে রিজিকের ব্যবস্থা করে দেবেন।’ -সুনানে আবু দাউদ : ১৫১৮

পরহেজগারি অবলম্বন এবং আল্লার ওপর ভরসা : যেসব আমলে রিজিকে প্রবৃদ্ধি ঘটে, তার মধ্যে তাকওয়া-পরহেজগারি অবলম্বন এবং তাওয়াক্কুল বা আল্লাহর প্রতি ভরসা রাখা অন্যতম। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘আর যে আল্লাহর তাকওয়া অর্জন করবে, আল্লাহ তার জন্য উত্তরণের পথ বের করে দেবেন এবং তিনি তাকে এমন উৎস থেকে রিজিক দান করবেন, যার কল্পনাও সে করতে পারবে না।’ -সুরা সাদ : ৩৫

হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যদি তোমরা আল্লাহর প্রতি যথার্থভাবে ভরসা রাখো। তিনি তোমাদের সেভাবে রিজিক দান করবেন, যেভাবে তিনি পাখিদের দান করে থাকেন। পাখিরা সকালে ক্ষুধার্ত অবস্থায় (খালি পেটে) বাসা থেকে বের হয় এবং সন্ধ্যায় উদর পূর্ণ করে বাসায় ফেরে।’ -জামে তিরমিজি : ২৩৪৪

সময়মতো নামাজ আদায় এবং ইবাদতের জন্য নিজেকে মুক্ত করা : সময়মতো দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করলে রিজিক বাড়ে। নামাজ আদায় করার ফাঁকে ফাঁকে কাজ ও ব্যবসা–বাণিজ্য করতে হবে; কাজ ও ব্যবসা–বাণিজ্য করার ফাঁকে ফাঁকে নামাজ নয়। একই সঙ্গে আল্লাহর ইবাদত পালনে নিজেকে ঝামেলামুক্ত করতে হবে। ইরশাদ হয়েছে, ‘আর আপনি পরিবার-পরিজনকে নামাজ আদায়ের আদেশ দিন এবং নিজেও তার ওপর অটল থাকুন। আমি আপনার কাছে কোনো রিজিক চাই না। আমিই আপনাকে রিজিক দিই। আর মুত্তাকিদের জন্যই শুভ পরিণাম।’ -সুরা ত্বহা : ১৩২

হজরত আবু হুরায়রা (রা.) বর্ণনা করেন, হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘হে আদম সন্তান! আমার ইবাদতের জন্য তুমি তোমার অন্তরকে খালি করো। আমি তোমার অন্তরকে অভাবমুক্ত হিসেবে পরিপূর্ণ করে দেব এবং তোমার দরিদ্র্যের পথ দূর করে দেব। আর যদি তা না করো, আমি তোমার হাত (দুনিয়ার) ব্যস্ততায় পূর্ণ করে দেবো এবং তোমার অভাব মেটাব না।’ -জামে তিরমিজি : ২৪৬৬

রিজিক অর্জনের চেষ্টায় থাকা : পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘অতঃপর নামাজ সমাপ্ত হলে তোমরা পৃথিবীতে (জমিনে) ছড়িয়ে পড়ো আর আল্লাহর অনুগ্রহ (রিজিক) সন্ধান করো এবং আল্লাহকে অধিক পরিমাণে স্মরণ করো; যাতে তোমরা সফলকাম হও।’ -সুরা জুমা : ১০

হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘তোমাদের কেউ যদি রশি নিয়ে সকালবেলা পাহাড়ের দিকে বের হয়। এরপর লাকড়ি সংগ্রহ করে তা বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করে এবং দানও করে। মানুষের কাছে হাত পাতার চেয়ে তার জন্য এটা উত্তম।’ -সহিহ বোখারি : ১৪৮০

;

গরমে মুমিনের আমল



মুফতি উমর ফারুক আশিকী
গরমে পশুপাখির প্রতি সদয় আচরণ কাম্য, ছবি : সংগৃহীত

গরমে পশুপাখির প্রতি সদয় আচরণ কাম্য, ছবি : সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

সাহাবি হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আল্লাহর রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘জাহান্নাম তার রবের কাছে অভিযোগ করে বলে, হে রব! আমার এক অংশ অন্য অংশকে খেয়ে ফেলছে। আল্লাহতায়ালা তখন তাকে দুইটি নিশ্বাস ফেলার অনুমতি দেন। একটি নিশ্বাস শীতকালে আরেকটি গ্রীষ্মকালে। কাজেই তোমরা গরমের তীব্রতা এবং শীতের তীব্রতা পেয়ে থাকো।’ -সহিহ বোখারি : ৩২৬০

মুমিন বান্দারা দয়াময় আল্লাহর রহমতের প্রত্যাশী হয়ে গ্রীষ্মের এই গরম সময়ে অফুরন্ত সওয়াব লাভের জন্য বেশ কিছু আমল করতে পারেন। আশা করা যায়, মহান আল্লাহর দয়ায় পরিস্থিতি অনুকূলে আসবে- ইনশাআল্লাহ।

তওবা করা : মানুষের পাপের কারণে মানুষের ওপর নানা ধরনের বিপদাপদ আসে, তাই প্রতিকূল অবস্থাকে অনুকূলে আনতে মহান আল্লাহর কাছে তওবা করার কোনো বিকল্প নেই।

পবিত্র কোরআনে আল্লাহ নিজেই বলেছেন, ‘আর বলেছি, তোমাদের রবের কাছে ক্ষমা চাও; নিশ্চয়ই তিনি পরম ক্ষমাশীল। তিনি তোমাদের ওপর মুষলধারে বৃষ্টি বর্ষণ করবেন, আর তোমাদেরকে ধন-সম্পদ ও সন্তান-সন্ততি দিয়ে সাহায্য করবেন এবং তোমাদের জন্য বাগ-বাগিচা দেবেন আর দেবেন নদী-নালা।’ -সুরা নুহ : ১০-১২

ইবাদতে গাফিলতি না করা : গরমের কারণে ইবাদত-বন্দেগিতে গাফিলতি না করা। কারণ জাহান্নামের আগুন দুনিয়ার গরমের চেয়ে বহুগুণে উত্তপ্ত। পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ বলেন, ‘পেছনে থাকা লোকগুলো আল্লাহর রাসুলের বিপক্ষে বসে থাকতে পেরে খুশি হলো। আর তারা অপছন্দ করল তাদের মাল ও জান নিয়ে আল্লাহর রাস্তায় জেহাদ করতে এবং তারা বলল, ‘তোমরা গরমের মধ্যে বের হয়ো না।’ বলো, জাহান্নামের আগুন অধিকতর গরম, যদি তারা বুঝত।’ -সুরা তওবা : ৮১

পিপাসার্তকে পানি পান করানো : হাদিসে ইরশাদ হয়েছে, হজরত সাদ ইবনে উবাদা (রা.) বলেন, (এক দিন) আমি (নবীজিকে) বললাম, ইয়া রাসুলাল্লাহ! কোন সদকা উত্তম? তিনি বলেন, পানি পান করানো। -সুনানে নাসায়ি : ৩৬৬৫

চলমান গরমের সময় শহরেরে বিভিন্ন স্থানে পথচারীদের জন্য ঠাণ্ডা পানির ব্যবস্থা রাখা হয় বিভিন্ন অফিস, দাতব্য সংগঠন কিংবা ব্যক্তি উদ্যোগে। এটা অত্যন্ত ভালো কাজ, সওয়াবের কাজ।

কেউ পানি চাইলে তা দিতে অস্বীকৃতি জানাতে নিষেধ করেছেন নবী কারিম (সা.)। ইরশাদ হয়েছে, হজরত আয়েশা (রা.) বলেন, ইয়া রাসুলাল্লাহ! এমন কী জিনিস আছে, যা কেউ চাইলে না দিয়ে তাকে বিদায় দেওয়াটা ঠিক নয়?

তিনি বলেন, পানি, লবণ ও আগুন। হজরত আয়েশা (রা.) বলেন, আমি বললাম, ইয়া রাসুলাল্লাহ! এই পানি সম্পর্কে তো আমরা জানি, কিন্তু লবণ ও আগুনের ব্যাপারে কেন বাধা দেওয়া যাবে না? তিনি বলেন, হে হুমায়রা! যে ব্যক্তি আগুন দান করল, সে যেন ওই আগুন দিয়ে রান্না করা যাবতীয় খাদ্যই দান করল।
যে ব্যক্তি লবণ দান করল, ওই লবণে খাদ্য যতটা সুস্বাদু হলো তা সবই যেন সে দান করল। যে ব্যক্তি কোনো মুসলমানকে এমন স্থানে পানি পান করালো, যেখানে তা সহজলভ্য, সে যেন একটি গোলামকে দাসত্বমুক্ত করল এবং যে ব্যক্তি কোনো মুসলমানকে এমন স্থানে পানি পান করালো, যেখানে তা দুষ্প্রাপ্য, সে যেন তাকে জীবন দান করল। -সুনানে ইবনে মাজাহ : ২৪৭৪

অন্যের দিকে সাহায্যের হাত বাড়ানো : তীব্র গরমে অনেক সময় মানুষ দুর্বল হয়ে পড়ে। বয়োবৃদ্ধরা তাদের প্রয়োজনীয় কাজের জন্য বাইরে যেতে পারেন না, তখন তাদের সাহায্য করার মাধ্যমে সদকার সওয়াব মেলে।

হজরত আবু জার (রা.) বলেন, হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, তোমার হাস্যোজ্জ্বল মুখ নিয়ে তোমার ভাইয়ের সামনে উপস্থিত হওয়া তোমার জন্য সদকাস্বরূপ। তোমার সৎকাজের আদেশ এবং তোমার অসৎ কাজ থেকে বিরত থাকার নির্দেশ তোমার জন্য সদকাস্বরূপ। পথহারা লোককে পথের সন্ধান দেওয়া তোমার জন্য সদকাস্বরূপ, স্বল্প দৃষ্টিসম্পন্ন লোককে সঠিক দৃষ্টি দেওয়া তোমার জন্য সদকাস্বরূপ। পথ থেকে পাথর, কাঁটা ও হাড় সরানো তোমার জন্য সদকাস্বরূপ। তোমার বালতি দিয়ে পানি তুলে তোমার ভাইয়ের বালতিতে ঢেলে দেওয়া তোমার জন্য সদকাস্বরূপ। -জামে তিরমিজি : ১৯৫৬

পশুপাখির প্রতি সদয় হওয়া : গরমে মানুষের পাশাপাশি পশুপাখিও কষ্টে পড়ে। তাই মানুষের উচিত তাদের পশুপাখির প্রতি সদয় হওয়া।

হাদিসে ইরশাদ হয়েছে, এক ব্যভিচারিণীকে ক্ষমা করে দেওয়া হয়; সে একটি কুকুরের কাছ দিয়ে যাচ্ছিল। তখন সে দেখতে পেল, কুকুরটি একটি কূপের পাশে বসে হাঁপাচ্ছে। বর্ণনাকারী বলেন, পানির পিপাসা কুকুরটাকে মুমূর্ষ করে দিয়েছিল। তখন সেই নারী তার মোজা খুলে ওড়নার সঙ্গে বাঁধল। অতঃপর সে কূপ হতে পানি তুলল (এবং কুকুরটিকে পানি পান করালো), এ কারণে তাকে ক্ষমা করে দেওয়া হলো। -সহিহ বোখারি : ৩৩২১

গরমের কারণে দুনিয়ার এই হাহাকার পরিস্থিতি অনুকূলে আনতে, মহান রবের সন্তুষ্টি পেতে বর্ণিত আমলগুলো বেশি বেশি করা জরুরি।

 

;

আগামীতে হজ ব্যবস্থাপনা হবে বিশ্বের মধ্যে অন্যতম স্মার্ট: ধর্মমন্ত্রী



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

ধর্মমন্ত্রী মো. ফরিদুল হক খান বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষিত রূপকল্প-২০২১ ও ২০৪১ অনুসারে উন্নত-সমৃদ্ধ স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার অংশ হিসেবে হজ ব্যবস্থাপনায় আধুনিক তথ্য-প্রযুক্তির সন্নিবেশ ঘটানো হয়েছে।

তিনি বলেন, হজ ব্যবস্থাপনাকে ডিজিটালাইজড করা হয়েছে। এ সংক্রান্ত যে পোর্টালটি রয়েছে সেখানে আমরা নতুন নতুন ফিচার যুক্ত করছি। আগামী দিনে বাংলাদেশের হজ ব্যবস্থাপনা হবে বিশ্বের মধ্যে অন্যতম স্মার্ট হজ ব্যবস্থাপনা।

বুধবার (২৪ এপ্রিল) সকালে ঢাকা হজ অফিসের সম্মেলন কক্ষে হজযাত্রী প্রশিক্ষণ ২০২৪ ’র উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ধর্মমন্ত্রী এ কথা বলেন।

ফরিদুল হক খান বলেন, আপনারা সকলেই যাতে সহী-শুদ্ধভাবে হজব্রত পালন করতে পারেন সেজন্যই মূলত আজকের এই প্রশিক্ষণ। আমরা প্রশিক্ষণের জন্য অত্যন্ত দক্ষ প্রশিক্ষক নির্বাচন করেছি। আপনারা যদি প্রশিক্ষণের প্রতি মনযোগী হতে পারেন তাহলে আপনারা হজের নিয়ম-কানুন, হুকুম-আহকাম, ধারাবাহিক আনুষ্ঠানিকতা- সবকিছু আয়ত্তে আনতে পারবেন।

তিনি বলেন, আমাদের দেশের বেশিরভাগ মানুষেরই প্রবণতা হলো জীবনের শেষ প্রান্তে এসে হজ পালন করা। হজ অনেক পরিশ্রমসাধ্য ইবাদত, এর জন্য শারীরিক সামর্থ্য থাকা বাঞ্চনীয়। অনেকেরই সেই শারীরিক সামর্থ্য থাকে না। যার কারণে তাদের পক্ষে হজের আনুষ্ঠানিকতা সম্পাদন করা অনেক কষ্টকর হয়ে যায়।

তিনি বলেন, অনেকেই দীর্ঘদিন ধরে জমানো সঞ্চয় দিয়েই হজব্রত পালন করতে যান। এদেশের অধিকাংশ মানুষেরই দ্বিতীয় বার হজ করার মতো আর্থিক সঙ্গতি থাকে না। সে কারণে আপনার পরিশ্রম ও অর্থ যেন বিফলে না যায় সেজন্য অবশ্য মহানবী হযরত মুহাম্মদ (স.)’র নির্দেশিত পথ অনুসরণ করে হজ সম্পাদন করতে হবে। সহী ও শুদ্ধভাবে হজব্রত পালন করতে হবে।

ফরিদুল হক খান বলেন, সৌদি আরবে আপনার পরিচয় শুধু একজন হজযাত্রী নয়, আপনার পরিচয়-আপনি একজন বাংলাদেশি। আপনার আচার-আচরণ, কথাবার্তা ও চালচলনের মাধ্যমেই বিদেশের মাটিতে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি প্রকাশ পাবে।

তিনি সৌদি আরবের আইন-কানুন, নিয়ম-শৃঙ্খলা প্রতিপালনে কোনরূপ বিচ্যুতি না ঘটে সেদিকে যত্নবান থাকার আহ্বান জানান।

এছাড়া, কারো জন্য দেশের ভাবমূর্তি ও সম্মান যেন ক্ষুন্ন না হয় সেদিকে বিশেষভাবে সর্তক থাকার জন্য হজযাত্রীদেরকে অনুরোধ জানান তিনি।

ধর্মসচিব মু. আ. হামিদ জমাদ্দারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় অন্যদের মধ্যে হজ অনুবিভাগের অতিরিক্ত সচিব মো. মতিউল ইসলাম, যুগ্মসচিব ড. মো. মঞ্জরুল হক ও ঢাকা হজ অফিসের পরিচালক মুহম্মদ কামরুজ্জামান বক্তব্য রাখেন।

প্রশিক্ষণে সরকারি মাধ্যমে নিবন্ধিত ঢাকার হজযাত্রীরা অংশগ্রহণ করছেন।

;

সুষ্ঠু হজ ব্যবস্থাপনা নিয়ে আশঙ্কা এজেন্সি মালিকদের



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

এবারের হজ ব্যবস্থাপনায় বিশৃঙ্খলার আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন হজ এজেন্সির মালিকেরা। তাই সুষ্ঠু হজ ব্যবস্থাপনার লক্ষ্যে দ্রুত সকল প্রতিবন্ধকতা নিরসনে প্রধানমন্ত্রীর সরাসরি হস্তক্ষেপ কামনা করেন এজেন্সি মালিকেরা।

বুধবার (২৪ এপ্রিল) সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানান অপারেটিং হজ এজেন্সির মালিকরা।

সুষ্ঠু হজ ব্যবস্থাপনায় জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে বলে হাবিবুল্লাহ মুহাম্মদ কুতুবুদ্দীন লিখিত বক্তব্যে বলেন, ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের কিছু ঊর্ধতন কর্মকর্তা এবং মক্কা হজ মিশনের কিছু কর্মকর্তাদের অবহেলা ও দায়িত্বহীনতার কারণে হজ ব্যবস্থাপনায় জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে। এতে করে এবারের হজ ব্যবস্থাপনায় বিশৃঙ্খলার আশঙ্কা করছেন তারা।

তিনি আরও বলেন, গত ১৮ এপ্রিল ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের হজ ১ শাখা থেকে সৌদি সরকারের একটি চিঠির বরাতে জানানো হয়- আগামী ২৯ এপ্রিল হজ যাত্রীদের ভিসা ইস্যু বন্ধ হয়ে যাবে।

চিঠিতে আরও জানানো হয়, ২৯ এপ্রিলের মধ্যে আবশ্যিকভাবে হজযাত্রীদের ভিসা সম্পন্ন করতে হবে। এজেন্সীর অবহেলার কারণে হজযাত্রীদের হজে গমন অনিশ্চিত হলে সে এজেন্সীর বিরুদ্ধে হজ ও উমরাহ ব্যবস্থাপনা আইন ২০২১ অনুসারে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এর আগে, গত ১০ ফ্রেব্রুয়ারি ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের এক চিঠিতে জানানো হয়, সৌদি সরকারের হজ ও উমরা মন্ত্রণালয়ের আবাসন, ক্যাটারিং সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ২৫ ফেব্রুয়ারির মধ্যে সকল প্রকার অনলাইন চুক্তি (সার্ভিস কোম্পানি, পরিবহান, ইত্যাদি) সম্পন্ন করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। অথচ এখনো অনেক এজেন্সির ৮০ শতাংশ কার্যক্রম বাকি।

এমন অবস্থায় সুষ্ঠু হজ ব্যবস্থাপনার লক্ষ্যে এবং সকল প্রতিবন্ধকতা নিরসনের জন্য প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ চেয়ে হজ এজেন্সি মালিকেরা অনুরোধ করেন।

এছাড়াও কিছু সুনির্দিষ্ট সুপারিশ করেন তারা। সেগুলো হলো- দ্রুত সময়ের মধ্যে সকল হাজির মিনার জোন নির্ধারণ করে ই হজ সিস্টেম আপডেট করতে হবে। ফাইনাল ফ্লাইট শিডিউল ঘোষণা ও সকল এজেন্সির হজযাত্রী অনুপাতে টিকেট নিশ্চিত করতে হবে। মোয়াজ্জেমদের জন্য বারকোড ভিসার বিষয়টি নিশ্চিত করা। যাদের সৌদি একাউন্টে এখনো রিয়াল জমা হয়নি তাদের একাউন্টে দ্রুত রিয়াল জমার ব্যবস্থা করা।

তারা বলেন, বর্তমানে সৌদি একাউন্টে টাকা ঢুকতে দেড় মাস সময় লাগে। যদি কারো একাউন্টে ১ পয়সাও কম থাকে তাহলে তার হজে যাওয়া সম্ভব হবে না। এবং বর্তমানে সরকারের বিভিন্ন চার্জ একবারে হিসাব করে পাঠানো অনেকটা অসম্ভব। এছাড়া যাদের এখনো মেননজাইটিস ও ইনফ্লুয়েঞ্জা টিকা হয়নি তাদের জন্য দ্রুত টিকার ব্যবস্থা করতে হবে।

এছাড়াও ভিসা ইস্যু কার্যক্রম অন্যান্য বছরের মতো সর্বশেষ ফ্লাইটের এক সপ্তাহ পূর্ব পর্যন্ত চালু রাখার দাবি জানান তারা। আরও বলেন, অতীতে দেখা গেছে অনেকে হজ করতে যাওয়ার ইচ্ছে করলেও সকল প্রস্তুতির পর মারা গেছেন। আবার কেউ মারাত্মক রোগাক্রান্ত হয়েছেন। এছাড়াও দুর্ঘটনা ইত্যাদি কারণে যেতে পারেন না। তাই সেই হজযাত্রীর পরিবর্তে তার পরিবারের অন্য কোন সদস্যদের যাওয়ার ব্যবস্থা করা যেতো তাহলে জমাকৃত টাকা গচ্চা যেতো না। বর্তমানে যে অবস্থা আছে তাতে ভিসা ইস্যু এতো আগে বন্ধ হয়ে গেলে অহেতুক প্রচুর টাকা সৌদি আরবে চলে যাবে। এতে দেশের ক্ষতি হবে। যদি বিষয়টি সৌদি সরকারকে বুঝাতে আমরা সক্ষম হই তাহলে আমাদের বিশ্বাস সৌদি সরকার বাস্তবতা বুঝে অবশ্যই বিবেচনা করবেন।

;