আষাঢ়ের প্রথম দিনে মেঘ-বৃষ্টির লুকোচুরি



শাদরুল আবেদীন, নিউজরুম এডিটর, বার্তা২৪.কম
রাজধানীতে বৃষ্টির পাশাপাশি বিদ্যুৎ চমকানোর দৃশ্য, ছবি: সুমন শেখ

রাজধানীতে বৃষ্টির পাশাপাশি বিদ্যুৎ চমকানোর দৃশ্য, ছবি: সুমন শেখ

  • Font increase
  • Font Decrease

"আবার এসেছে আষাঢ় আকাশ ছেয়ে--
আসে বৃষ্টির সুবাস বাতাস বেয়ে।
এই পুরাতন হৃদয় আমার আজি
পুলকে দুলিয়া উঠিছে আবার।"

আষাঢ় নিয়ে কবিগুরু রবিন্দ্রনাথ ঠাকুর লিখেছেন এমন অসংখ্য কবিতা।

তার কবিতার মতোই মেঘের গর্জন আর বৃষ্টি দিয়ে আজ শনিবার (১৫ জুন) বর্ষাকালের আগমন ঘটল। কারণ, আজ ১৪৩৬ বঙ্গাব্দের বর্ষা ঋতুর প্রথম দিন এবং আষাঢ়ের ১ তারিখ।

বর্ষার এ সময়ে প্রকৃতি নিজেকে নতুন করে সাজিয়ে নেয়। কদম ফুলের ঘ্রাণ যেন মুগ্ধ করে সবাইকে। বাংলাদেশের আবহাওয়াবিদরা বর্ষাকে সেকেন্ড সামার বলে থাকেন। কারণ, বৃষ্টি হলেও ভ্যাপসা গরমে অতিষ্ঠ হয়ে ওঠে জনজীবন। তবে মৌসুমি বায়ু প্রবাহের কারণে যখন বৃষ্টিপাত হয়, তখন প্রকৃতি ভিন্ন সাজে আমাদের সামনে উপস্থিত হয়। তবুও বর্ষাকে ঋতুর রাণী বলা হয়ে থাকে।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Jun/15/1560583782220.jpg

শনিবার ভোর ৬ টা থেকে রাজধানীর আকাশে মেঘ জমতে থাকে। এরপর আকাশে কালো মেঘের সৃষ্টি, এমন সময় নামল বৃষ্টি। ধীরে ধীরে পুরো রাজধানী জুড়ে বৃষ্টি শুরু হয়। তবে এই বৃষ্টি কিছু সময়ের মধ্যে থেমে গেলেও আকাশ এখন কালো। সঙ্গে রয়েছে মেঘের গর্জনও। তবে কিছু জায়গায় থেমে থেমে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি হচ্ছে। এ ছাড়া দেশের বিভিন্ন স্থানে গত শুক্রবার (১৪জুন) থেকে বৃষ্টি হচ্ছে।

আবহাওয়াবিদ আবুল কালাম মল্লিক বার্তা ২৪.কমকে জানান, লঘুচাপের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ থেকে উত্তর-পূর্ববঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। দক্ষিণ-পশ্চিমমৌসুমী বায়ু বরিশাল, চট্টগ্রাম, ঢাকা, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগ অতিক্রম করে বাংলাদেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চল পর্যন্ত অগ্রসর হয়েছে। আজ সকাল থেকে দেশের বিভিন্ন স্থানে বৃষ্টি হচ্ছে। তবে বেশিরভাগ স্থানে হালকা বৃষ্টি হচ্ছে। আকাশের এখনও মেঘ আছে। শুক্রবারও দেশের কয়েকটি স্থানে বৃষ্টি হয়েছে।

 https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Jun/15/1560584411327.jpg

তিনি আরও জানান, মৌসুমি বায়ুর কারণে আগামী পাঁচদিনে বৃষ্টির প্রবণতা আরও বৃদ্ধি পাবে। তাপমাত্রাও কিছুটা কমবে। এছাড়া বর্ষা মৌসুমে কয়েকদিন পর পর টানা বৃষ্টি থাকবে।

আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে- চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় আর রংপুর, ঢাকা, ময়মনসিংহ ও বরিশাল বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় এবং খুলনা ও রাজশাহী বিভাগের দুই-এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। একই সাথে চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের কোথাও কোথাও ভারী থেকে ভারী বর্ষণ হতে পারে। সারাদেশে দিন এবং রাতের তাপমাত্রা সামান্য হ্রাস পেতে পারে।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Jun/15/1560584437251.jpg

অপরদিকে, রাজশাহী, রংপুর ও খুলনা বিভাগের উপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপ প্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং কিছু কিছু এলাকা থেকে তা প্রশমিত হতে পারে।

এদিকে, গ্রীষ্মকে বিদায় জানাতে আষাঢ়ের প্রথম দিনেই প্রাণ জুড়ানো বৃষ্টির ফোঁটায় অনেকে হয়ত নিজেকে ভিজিয়ে নিবেন। কেউবা মনের ভুলে গেয়ে উঠবেন (বর্ষার প্রথম দিনে/ ঘনকালো মেঘ দেখে/ আনন্দে যদি কাঁপে তোমার হৃদয়/ সেদিন তাহার সাথে কর পরিচয়....। কিংবা এসো ঝর ঝর বৃষ্টিতে, জল ভরা দৃষ্টিতে...।)

   

৬ষ্ঠ উপজেলা নির্বাচন: রাজবাড়ীর দুটি উপজেলায় ভোটগ্রহণ আজ



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, রাজবাড়ী
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদের প্রথম ধাপে আজ বুধবার (৮ মে) রাজবাড়ী জেলার পাংশা ও কালুখালী উপজেলা পরিষদের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। ভোট গ্রহণ সুষ্ঠু করতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছে নির্বাচন কমিশন, জেলা প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

বুধবার (৮ মে) সকাল ৮টায় ব্যালট পেপারের মাধ্যমে শুরু হবে ভোটগ্রহণ। একটানা বিরতহীনভাবে চলবে বিকেল ৪টা পর্যন্ত।

পাংশা: পাংশা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে বর্তমান উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ ফরিদ হাসান ওদুদ (আনারস) ও মাছপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও পাংশা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি খন্দকার সাইফুল ইসলাম বুড়ো (মোটর সাইকেল) প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করছেন।

এছাড়াও,ভাইস চেয়ারম্যান (পুরুষ) পদে বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান সহ মোট ৫ জন নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছেন।এদের মধ্যে খান মোঃ ওবায়দুল হক(চশমা), এ কে এম সাইফুল মোর্শেদ (তালা),রফিকুর ইসলাম (টিউবওয়েল), মোঃ হোসেন আলী সরদার (টিয়া পাখি) ও বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান জালাল উদ্দীন বিশ্বাস (উড়োজাহাজ) প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে লড়ছেন।

অপরদিকে মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৩ জন অংশগ্রহণ করছেন। এদের মধ্যে দিলরুবা পারভীন ইতি (ফুটবল),আসমা খাতুন (হাসঁ) ও সাবরিনা পারভিন (কলস) প্রতিকে নির্বাচন করছেন।

পাংশা উপজেলা ১ টি পৌরসভা ও ১০ টি ইউনিয়ন পরিষদ নিয়ে গঠিত। মোট ভোট কেন্দ্রের সংখ্যা ৭৫ টি। মোট ভোট কক্ষের সংখ্যা ৫৪৫ টি।এর মধ্যে স্থায়ী ৫২২ ও অস্থায়ী ২৩টি। মোট ভোটার সংখ্যা ২ লাখ ১৬ হাজার ১০০ জন। এর মধ্যে পুরুষ ১ লাখ ১০ হাজার ১৮৭ ও মহিলা ১ লাখ ৫ হাজার ৯১১ জন।

কালুখালী: কালুখালী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে অলিউজ্জামান চৌধুরী টিটু (আনারস), এবিএম রোকনুজ্জামান (কাপ-পিরিচ),মোঃ এনায়েত হোসেন (মোটর সাইকেল) ও মোঃ মাসুদুর রহমান (দোয়াত-কলম) প্রতীক নিয়ে লড়ছেন।

এছাড়াও, ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৪ জন প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছেন।এদের মধ্যে মোঃ রিপন শেখ (টিউবওয়েল), রেজাউল করিম (টিয়া পাখি),মাহমুদ হাসান সুমন (তালা) ও মুহাম্মদ ফজলুল হক (মাইক) প্রতীক নিয়ে লড়ছেন।

অপরদিকে মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৩ জন প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছেন। এদের মধ্যে মোছাঃ শিল্পী আক্তার (কলস),মোছাঃ ডলি পারভীন (ফুটবল) ও মোছাঃ শারমিন আক্তার (হাঁস) প্রতীক নিয়ে।

কালুখালী উপজেলা ৭ টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত। মোট ভোট কেন্দ্রের সংখ্যা ৫০ টি। মোট ভোট কক্ষের সংখ্যা ৩২১টি। এর মধ্যে স্থায়ী ৩০৬ ও অস্থায়ী ১৫ টি। মোট ভোটার সংখ্যা ১ লাখ ৩৭ হাজার ২০০। এর মধ্যে পুরুষ ৭০ হাজার ২৮৪ ও মহিলা ৬৬ হাজার ৯১৫ জন।

ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদের রিটার্নিং অফিসার ও রাজবাড়ী জেলা নির্বাচন অফিসার মো: অলিউল ইসলাম জানিয়েছেন, প্রথম ধাপের নির্বাচনে পাংশা ও কালুখালী দুই উপজেলার মোট ১২৫টি কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। পাংশা উপজেলায় ৫৭টি ও কালুখালী উপজেলায় ৩১টি কেন্দ্রই ঝুঁকিপূর্ণ বা গুরুত্বপূর্ণ। গুরুত্বপূর্ণ প্রত্যেকটি কেন্দ্রে ৪ জন পুলিশ ও ১৪ জন আনসার সদস্য থাকবেন। এছাড়াও পাংশা উপজেলায় ১১ জন ম্যাজিস্ট্রেট ১১টি পুলিশের টহল টিম ও ১ প্লাটুন বিজিবি সদস্য মোতায়েন থাকবে। এছাড়াও কালুখালী উপজেলায় ৭ জন ম্যাজিস্ট্রেট ৭টি পুলিশের টহল টিম সার্বক্ষণিক দায়িত্ব পালন করবে।

এছাড়াও পাংশা ও কালুখালী উপজেলার আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে ২ প্লাটুন বিজিবি সদস্য ও র‍্যাবের ৪টি টহল টিম মোতায়েন থাকবে।

রাজবাড়ী জেলা পুলিশ সুপার জি.এম আবুল কালাম আজাদ পিপিএম (সেবা) বলেন, নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করতে জেলা পুলিশ সবসময় বদ্ধপরিকর।নির্বাচনের দিন জেলা পুলিশের পাশাপাশি প্রতিটি কেন্দ্রে আনসার সদস্য মোতায়েন থাকবে।পাংশা ও কালুখালী উপজেলা পরিষদের নির্বাচন ৬৫০ জন পুলিশ ও ১৮০০ জন আনসার সদস্য কাজ করবে।পোশাকধারী পুলিশের পাশাপাশি সাদা পোশাকে ও গোয়েন্দা পুলিশও মাঠে কাজ করবে।

;

ভোটের আগের রাতে চেয়ারম্যান প্রার্থীর ভাই ও ভাগ্নেকে অপহরণ



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, কুড়িগ্রাম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

কুড়িগ্রামের চর রাজিবপুর উপজেলার এক চেয়ারম্যান প্রার্থীর চাচাতো ভাই ও ভাগ্নেকে অপহরণের অভিযোগ উঠেছে। তারা হলেন, ঘোড়া মার্কার চেয়ারম্যান প্রার্থী মো. আরিফুল কবির তালুকদার রানা এর চাচাতো ভাই রিফাত তালুকদার (১৮) ও ভাগ্নে নাজমুল হাসান(২৫)। অপহরণের প্রায় দুই ঘন্টা পর মুক্তিপণ আদায় করে ছেড়ে দেয় অপহরণকারীরা।

বুধবার (৮ মে) রাতে এই ঘটনা ঘটে। অপহরণের শিকার দুজন হলেন মোহনগঞ্জ ইউনিয়নের গোয়ালপাড়া গ্রামের আবুল কালাম তালুকদার এর ছেলে রিফাত তালুকদার এবং একই গ্রামের আবু বক্কর সিদ্দিক এর ছেলে নাজমুল হাসান।

চর রাজিবপুর থানার অফিসার ইনচার্জ আশিকুর রহমান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। অপহরণের খবর পেয়ে ঐ দুজনকে খুঁজতে বের হলে রাস্তা থেকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে পুলিশ।

অপহরণের শিকার নাজমুল হাসান বলেন, আমরা ৩ জন রাত সাড়ে ১২ টার দিকে রাজিবপুরে এসেছিলাম পোস্টার ও লিফলেট নিতে। একজনকে পোস্টার সহ ভ্যানে পাঠিয়ে দেয়ার পর আমি ও রিফাত হাতে কিছু লিফলেট নিয়ে থানার সামনের রোড দিয়ে বাইকে বাড়ি ফিরছিলাম। কিছুদুর এগিয়ে যাওয়ার পর কাচারি পাড়া এলাকায় আমাদের বাইক থামায় ৪ জন যুবক। তারপর বাইকের চাবি কেড়ে নিয়ে আমাদের বাইক ছিনিয়ে নেয়৷ তারপর রাস্তার পাশের ক্ষেতে নামিয়ে বলে, 'আমরা আলম চেয়ারম্যান (আনারস মার্কার চেয়ারম্যান প্রার্থী) এর লোক। বেশি কথা বললে চেয়ারম্যানের কাছে নিয়ে যাবো। সেখানে গিয়ে তোদের পেটাবো। রাতে পোস্টার নিয়ে কই যাস। পরে তাদের একজন আমার বাইক নিয়ে যায় এবং অপর ৩ জন আমাদের টেনে নিয়ে একটি অপরিচিত যায়গায় যায়। তাদের (অপহরণকারী) একজন বলে যে, 'কিছু টাকা পয়সা ম্যানেজ কর, তোদের ছেড়ে দেয়া হবে।' টাকা না পেয়ে তারা আমাদের বিভিন্ন হুমকি দিচ্ছিলো। তারপর রিফাতের ফোন দিয়ে বাড়িতে যোগাযোগ করে ২০ হাজার টাকা বিকাশে নেয়ার পর তারা নিজেদের একটি নম্বরে ১৯ হাজার ৯ শত টাকা সেন্ড মানি করে নেয়। তারপর রাত ৩ টার দিকে আমাদের অপরিচিত একটি রাস্তায় ছেড়ে দেয়া হয়। এরপর একটি পুলিশের ভ্যান দেখে মোবাইলের আলো জ্বলালে পুলিশ আমাদের বাইকে তুলে থানায় নিয়ে আসে।

তবে অপহরণকারীদের চিনতে পারেনি অপহরণের শিকার ঐ দুই যুবক।

পুলিশ জানায়, অপহরণের শিকার ঐ দুই যুবকের ব্যবহৃত বাইকটি রাজিবপুর সদর ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের কাচারি পাড়ায় ঘটনাস্থল থেকে কিছু দূরে রাস্তার পাশে থেকে উদ্ধার করা হয়েছে।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, অপহরণের শিকার রিফাতের বিকাশ নম্বর থেকে যে নম্বরে রাত ২টা ৫৭ মিনিটে টাকা পাঠানো হয়েছে সেই নম্বরটি কাচারি পাড়া এলাকার রঙ মিস্ত্রী এমদাদুল হক নামে এক ব্যক্তির। তিনি চেয়ারম্যান প্রার্থী শফিউল আলমের সমর্থক।

ঘোড়া মার্কার চেয়ারম্যান প্রার্থী মো. আরিফুল কবির তালুকদার রানা বলেন, ঘটনাটি দুঃখজনক। ভোটের আগের রাতে এমন কিছু হবে সেটা আমি ধারণা করতে পারিনি। প্রশাসনের কাছে সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচারের আশা করছি। আর যেন এই ধরনের ঘটনা না ঘটে সেব্যাপারে প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।

উল্লেখ্য, বুধবার (৮ মে) ৬ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রথম ধাপে রৌমারী, রাজিবপুর ও চিলমারী উপজেলায় ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে।

চর রাজিবপুর থানার অফিসার ইনচার্জ আশিকুর রহমান বলেন, রাত দেড়টার দিকে ঘোড়া মার্কার চেয়ারম্যান প্রার্থী মো. আরিফুল কবির তালুকদার রানা আমাকে অপহরণের ঘটনাটি জানান। সাথে সাথে আমি নিজেও বের হই টহল দলের সাথে। এমন ঘটনা যেন আর না ঘটনা এজন্য টহল দলের সংখ্যা বৃদ্ধি করি। উদ্ধার হওয়ার পর আমি তাদের কাছে ঘটনা শুনেছি। অভিযোগ দিলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ভুক্তভোগীদের পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় মামলা দায়ের করার প্রস্তুতি চলছে।

;

চাঁদাবাজির ‘আঁতুড়ঘর’: ১০০ গজের সড়কে রিকশায় চাঁদাবাজি ২১ লাখের বেশি



অভিজিত রায় (কৌশিক) স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

রাজধানীর ফার্মগেট থেকে কিছুটা এগিয়ে গেলেই পান্থপথ সিগন্যাল। ফার্মগেট থেকে পান্থপথ সিগন্যাল পর্যন্ত সড়কটির দূরত্ব মাত্র ৭০০ মিটার। তবে ৭০০ মিটার সড়কের মধ্যে পান্থপথ সিগন্যাল থেকে কাজীপাড়ার মোড় পর্যন্ত আনুমানিক মাত্র ১০০ গজ সড়ক থেকেই বছরে ২১ লাখের বেশি অবৈধ চাঁদা আদায় হয় বলে জানা গেছে। জনবহুল সড়কটি এখন পরিণত হয়েছে অবৈধ চাঁদাবাজির ‘আঁতুড়ঘর’ হিসেবে।

রাজধানীর ফার্মগেটে অবস্থিত আনন্দ সিনেমা হলের সামনের সড়ক ধরে কিছুদূর এগিয়ে গেলেই চোখে পড়বে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় এশিয়া প্যাসিফিক। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি পার হয়ে সামনে এগোলেই পানি ভবনের পুরাতন গেট সংলগ্ন দেখা মিলবে রাস্তা দখল করে শত শত রিকশা পার্কিং করে রাখা হয়েছে। ফলে নিত্যদিন দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন এই সড়কে চলাচলকারী সাধারণ মানুষ।

সড়কটি দখল করে গড়ে ওঠা অবৈধ রিকশা গ্যারেজের কারণে সাধারণ মানুষ দুর্ভোগের শিকার হলেও লাভবান হচ্ছেন হাতেগোনা কিছু মানুষ। যার মধ্যে রয়েছেন সরকারদলীয় স্থানীয় কিছু নেতাকর্মীর নামও।

সড়ক দখল করে গড়ে ওঠা অবৈধ রিকশা গ্যারেজের কারণে সাধারণ মানুষেড় দুর্ভোগ।

সরেজমিনে সড়কটি ঘুরে দেখা গেছে, সন্ধ্যার ৭টার পর থেকে রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে চলাচলকারী রিকশা এসে জমা হয় এই স্থানটিতে। দিনের বেলা ৫০ থেকে ৫০টি রিকশা সব সময় এখানে পার্কিং করে রাখা হলেও রাত যত গভীর হয় ততই লম্বা হতে থাকে রিকশার লাইন। মূলত রিকশাচালকেরা সারাদিনের রোজগার শেষে রিকশাগুলো সারা রাত পার্কিং করে রাখেন এই সড়কটিতে। প্রধান সড়কে রিকশা পার্কিংয়ের ফলে সন্ধ্যার পর থেকে অধিকাংশ সময়ে যানজটও দেখা যায় এই সড়কে।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, সড়ক দখল করে গড়ে তোলা এই গ্যারেজে প্রতিদিন আনুমানিক ৩০০ এর বেশি রিকশা পার্কিং করে রাখা হয়। এই পার্কিং বাবদ রিকশা থেকে প্রতিদিন ২০ টাকা করে চাঁদা নেওয়া হয়।

সর্বনিম্ন ৩০০ রিকশার ধরলে হিসাব অনুযায়ী প্রতিদিন এই স্বল্প দূরত্বের জায়গাটিতে গড়ে তোলা রিকশা গ্যারেজ থেকেই চাঁদা আদায় হয় ৬ হাজার টাকা। এই হিসেবে মাসে চাঁদার পরিমাণ দাঁড়ায় ১ লাখ ৮০ হাজার টাকা। আর বছর শেষে এই হিসেব দাঁড়ায় ২১ লাখ ৬০ হাজার টাকায়।

এই রিকশা গ্যারেজ থেকেই চাঁদা আদায় হয় মাসে ১ লাখ ৮০ হাজার টাকা। 

সড়কে চলাচলকারী সাধারণ মানুষের অভিযোগ, লাইনম্যানের মাধ্যমে নিয়মিত চাঁদা নিয়ে এই সড়কের উপরে রিকশা রাখা হয়। আর এই চাঁদার ভাগ পান ক্ষমতাসীন দলের স্থানীয় নেতাকর্মীরা। মূলত তারাই লাইনম্যানের মাধ্যমে টাকা তোলেন।

অভিযোগের সূত্র ধরে অনুসন্ধান চালায় বার্তা২৪.কম। অনুসন্ধানে বেরিয়ে আসে লাইনম্যানের কথিত দায়িত্বে থাকা সোহেল নামের একজনের নাম। তিনিই নিয়মিত চাঁদা তুলেন ও প্রধান সড়ক দখল করে গড়ে তুলেছেন রিকশার গ্যারেজ। এছাড়াও এই রিকশা গ্যারেজ সংলগ্নই ফুটপাতের পাশেই তিনি গড়ে তুলেছেন একটি ভাতের হোটেলও।

এদিকে, গ্যারেজ রাখা বেশ কয়েকজন রিকশাচালকের সঙ্গে কথা বললে তারাও স্বীকার করেন রিকশা-প্রতি ২০ টাকা করে চাঁদা দিতে হয়। তবে অধিকাংশ ক্ষেত্রে রিকশার মালিকেরা তাদের রিকশার সংখ্যা হিসেব করে সোহেলকে চাঁদা দেন বলেও জানান তারা।

এসব বিষয়ে জানতে চাইলে লাইনম্যান সোহেল বার্তা২৪.কমকে বলেন, এগুলো চাঁদাবাজি না। যারা গরিব মানুষ তারা এখানে রিকশা রেখে যায়। রাতে রেখে যায়, আবার সকালে নিয়ে যায়। আপনারা অন্য সবকিছু দেখেন না কেন? এই রাস্তা নিয়ে আপনাদের এত প্যারা কেন ভাই, অন্য কাজ করেন না? আমি আপনার সঙ্গে পরে কথা বলব।

সড়কের উপরে রাখা রিকশার চাঁদার ভাগ পান ক্ষমতাসীন দলের স্থানীয় নেতাকর্মীরাও। 

এ বিষয়ে জানতে চাইলে তেজগাঁও ট্রাফিক বিভাগের ডিসি উপ-পুলিশ কমিশনার মোস্তাক আহম্মেদ বার্তা২৪.কমকে বলেন, যখন দায়িত্বে থাকি তখন মূল রাস্তা (প্রধান সড়ক) আমরা খালি রাখি। আর ফুটপাতগুলো সাধারণত থানা পুলিশ দেখেন।

তিনি বলেন, আমার ট্রাফিক পুলিশ যখন দিনের বেলা ডিউটিতে থাকে, তখন আমরা সব রাস্তাগুলো ফাঁকা রাখার চেষ্টা করি। মেইন সড়ক দখল করে রাখার সুযোগ নেই। আর যদি এমন বিষয় থেকে থাকে, তাহলে আমরা থানা পুলিশকেও ব্যবস্থা নিতে বলব।

তেজগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মহসীন বার্তা২৪.কমকে বলেন, বেশ কয়েকবার এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। নিয়মিত উচ্ছেদও করা হয়। আমরা প্রতিনিয়তই এদের বিরুদ্ধে কাজ করি। এর মাঝেও পুলিশ এনে তাদের সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। আমরা আমাদের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।

মাঝেমধ্যে উচ্ছেদ করা হলেও তারা আবার কীভাবে জায়গা দখল করে আবার কার্যক্রম শুরু করে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, অভিযান চালালে সবাই ভালো হয়ে যায়, কিন্তু উচ্ছেদ শেষ হলে আবার আগের অবস্থানে ফিরে যায়; কী করার বলেন। যতক্ষণ মানুষ ভালো না হবে, ততক্ষণ এসব কাজ সম্পূর্ণভাবে সম্পন্ন করা কঠিন।

তবে তেজগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মহসীন মাঝে মধ্যে উচ্ছেদের তথ্য জানালেও আশপাশে ব্যবসায়ীদের ভাষ্য বলছে, এই এলাকায় অবস্থানরত ব্যবসায়ীদের উচ্ছেদ করা হলেও রিকশার গ্যারেজটি উচ্ছেদ করা হয়নি।

নাম না প্রকাশের শর্তে স্থানীয় এক ব্যবসায়ী বলেন, এখানে ফুটপাত বা রাস্তার আশেপাশে বিভিন্ন সময়ে অভিযান চালিয়ে সব দোকান ভেঙে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু রিকশার এই গ্যারেজে কোন দিন অভিযান চালাতে দেখিনি। আজ প্রায় ৪ থেকে ৫ বছর এখানে ব্যবসা করছি, কিন্তু এতদিনের মধ্যে একবারের জন্যও এই গ্যারেজের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নিতে দেখিনি।

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) বার্তা২৪.কমকে বলেন, আপনি হোয়াটসঅ্যাপে ঠিকানাসহ ডিটেইলস তথ্য দেন, আমরা বিষয়টা দেখে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেবো।

;

সমুদ্রে গ্যাস অনুসন্ধানের কাজ চলছে: বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ জানিয়েছেন, সমুদ্রে গ্যাস অনুসন্ধানের কাজ চলছে ৷ গ্যাস পাওয়া গেলে তা সাত থেকে আট বছর পর উত্তোলন করা যাবে।

মঙ্গলবার (৭ মে) জাতীয় সংসদ অধিবেশনে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য (এমপি) আহম্মেদ হোসেনের এক সম্পূরক প্রশ্নের উত্তরে প্রতিমন্ত্রী এ সব কথা জানান।

বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী বলেন, ২০১৬-২০১৭ সালে আমরা গভীর সমুদ্রে খনিজ সম্পদ বা গ্যাস আহরণের মাল্টিপ্লান সার্ভে করার জন্য প্রস্তুতি শুরু করি। তার মধ্যে বিশেষ করে গ্যাস অনুসন্ধানের জন্য আমরা মাল্টিপ্লান সার্ভে করার জন্য প্রস্তুতি নেই। তার আগে আমরা মিয়ানমারের বর্ডারের সঙ্গে তিনটি ব্লক দুটি কোম্পানিকে দিয়েছিলাম। তারা এখানে সার্ভে করার যে পরিমাণ গ্যাস তারা পাবে বলে মনে করেছিল তা ভিজিবল হয়নি, তারা দেখতে পায় কম গ্যাস আছে সেখানে, তারা সরে যায়। ইতোমধ্যে মাল্টিপ্লান সার্ভে শেষ হয়েছে, আমরা টু ডি সার্ভের রেজাল্ট পেয়ে গেছি। ইতোমধ্যে আমরা গভীর সমুদ্রবন্দরে চলে গেছি। প্রায় ১৭টি কোম্পানি ইচ্ছে প্রকাশ করেছে এতে বৃহৎ কোম্পানি শেভরনসহ আরও বেশ কয়েকটি বড় কোম্পানি রয়েছে। তারা বিট করার জন্য টুডি সার্ভের রেজাল্ট নিয়েছে। বুধবার থেকে তাদের সঙ্গে আমাদের মিটিং আছে। বিডিং শেষ হবে সেপ্টেম্বরে।

তিনি বলেন, আগামী বছরের মাঝামাঝি সময়ে আমরা কোম্পানিগুলোকে থ্রিডি সার্ভের জন্য বিভিন্ন ব্লকে নিয়োগ দেবো। প্রায় ২০ থেকে ৩০ মিলিয়ন ডলার ইনভেস্টমেন্ট করার পর যদি গ্যাস বা তেল থাকে ৭-৮ বছর পর তাহলে সে গ্যাস বা তেল উত্তোলন করতে পারবো।

বর্তমানে দেশে বিদ্যুতের চাহিদার চেয়েও উৎপাদন ক্ষমতা বেশি জানিয়ে তিনি বলেন, বর্তমানে দেশে বিদ্যুতের চাহিদার চেয়েও উৎপাদন ক্ষমতা বেশি। সরকার ২০০৯ সালে দায়িত্ব গ্রহণের পর বিদ্যুৎ খাতের উন্নয়নে তাৎক্ষণিক, স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘ মেয়াদী পরিকল্পনা গ্রহণ করে নিবিড় তদারকির মাধ্যমে বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে। জানুয়ারি ২০০৯ থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত ২৬ হাজার ২৪০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হয়েছে। ফলে বিদ্যুতের স্থাপিত ক্ষমতা ক্যাপটিভসহ ৩০ হাজার ২৭৭ মেগাওয়াটে উন্নীত হয়েছে।

নসরুল হামিদ বলেন, চাহিদা অনুযায়ী বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতায় ঘাটতি না থাকলেও কভিড-১৯ মহামারি পরবর্তীতে ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ ও বৈশ্বিক জ্বালানি সংকটের কারণে পরিপূর্ণ সক্ষমতায় বিদ্যুৎ উৎপাদন সম্ভব হচ্ছে না। এর ফলে কিছু কিছু স্থানে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহে সাময়িক অসুবিধা হচ্ছে। এ ছাড়া অত্যধিক গরম ও দেশের কোথাও কোথাও দাবদাহ থাকার কারণে বিদ্যুতের চাহিদা ব্যাপক বৃদ্ধি পেয়েছে। চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ায় উৎপাদন বৃদ্ধির ওপরও জোর দেওয়া হচ্ছে। আমরা আশা করছি, অচিরেই সবাইকে নিরবচ্ছিন্ন ও মানসম্মত বিদ্যুৎ সুবিধা পৌঁছে দিতে সক্ষম হব।

;