বাংলার, বাঙালির ঊর্মি রহমান



ড. মাহফুজ পারভেজ, কন্ট্রিবিউটিং এডিটর, বার্তা২৪.কম
ঊর্মি রহমান

ঊর্মি রহমান

  • Font increase
  • Font Decrease

কলকাতায় ঊর্মি রহমান সরব জীবন কাটাচ্ছেন। বাঙালির সর্বজনীন সাংস্কৃতিক উৎসবের নানা আয়োজনে নিজেকে যুক্ত রেখেছেন তিনি। পহেলা বৈশাখের ব্যাপক অনুষ্ঠানমালার ব্যস্ততার পাশাপাশি সাংবাৎসরিক নানা সামাজিক উদ্যোগে মেতে আছেন এই মানুষটি। নিবিড় ভাবে সংশ্লিষ্ট আছেন ‘মঙ্গল শোভাযাত্রা’ গ্রুপের সঙ্গে।

বাংলাদেশের সত্তর ও আশির দশকের লেখালেখি ও সাংবাদিকতার সঙ্গে জড়িত প্রতিটি মানুষই ঊর্মি রহমানকে চেনেন। তাঁর ব্যক্তিগত বা পেশাগত নৈকট্য পেয়েছেন অনেকেই। সে সময়ের বাংলাদেশে তাঁর উজ্জ্বল তৎপরতার কথা বিস্মৃত হওয়ার মতো নয়।

লেখালেখির কারণে ছিলেন পাঠকের প্রিয়। তৎকালের গুরুত্বপূর্ণ সাপ্তাহিক, অধুনালুপ্ত ‘বিচিত্রা’র নিয়মিত লেখক-সাংবাদিক ছিলেন তিনি। তারপর আচমকাই চলে গেলেন বিলাতে, ‘বিবিসি’তে। লেখার বদলে লন্ডন থেকে ইথারে ভেসে আসা তাঁর কণ্ঠস্বর শুনেছেন সহস্র শ্রোতা। সেখানেও থিতু হলেন না। ইচ্ছে করলেই স্থায়ী বসবাস গড়তে পারতেন। কিন্তু সেটা না করে স্থায়ীভাবে বসবাস করতে চলে এলেন বাঙালির আরেক প্রিয় শহর কলকাতায়। দক্ষিণ কলকাতার সাউথ সিটিতে গগনচুম্বী এক নান্দনিক অ্যাপার্টমেন্টে বসবাস করছেন তিনি।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2018/Sep/30/1538285513140.jpg

মনে হয় বিশ্বায়নের জাতিকা হয়ে দেশ-দেশান্তরে ঘুরছেন ঊর্মি রহমান। তথাপি বাংলা ও বাংলাদেশের সঙ্গে তাঁর সংযোগ অমোচনীয়। ঢাকার শিল্প-সাহিত্য-সাংবাদিকতার সকল খবরই জানতে চেষ্টা করেন। সাইবার যোগাযোগের কারণে তথ্যের আদান-প্রদান আজকাল আরও সহজ। বার্তা২৪.কমের নবযাত্রার কথা জেনে বলেন, ‘এডিটর ইন চিফ আলমগীর হোসেন আমার ঘনিষ্ট। তাঁকে আমার শুভেচ্ছা জানাবেন।’

বহু বছর পর তাঁর সঙ্গে আবার দেখা করার সুযোগ তৈরি হচ্ছে আমার সম্ভাব্য কলকাতা ভ্রমণের কারণে। জানালেন, ‘এখন নাতিদের কাছে লন্ডনে আছি। অক্টোবরের মাঝামাঝি ফিরে আসবো কলকাতায়। তখন যদি থাকেন তো দেখা হবে।’ আমিও অপেক্ষায় থাকি বৃক্ষবহুল দক্ষিণ কলকাতার কোনও এক রেস্তরাঁয় এক পেয়ালা চা কিংবা কফি হাতে তাঁর মুখোমুখো হওয়ার।

কবুল করাই শ্রেয় যে, তাঁর সঙ্গে দেখা-সাক্ষাৎ ও আলাপ অবশ্যই আনন্দের অভিজ্ঞতা। যেমনটি আমার একবারই হয়েছিল নব্বই দশকের সূচনায়। তখন তিনি বাংলাদেশ-পর্ব শেষে লন্ডন প্রবাসী। ‘বিবিসি’র পক্ষ থেকে ঢাকায় এসেছেন ইংরেজি শিক্ষার অনুষ্ঠান ‘টাইগার্স আই’ নিয়ে। পুরো অনুষ্ঠানের একটি ক্যাসেট (তখন সিডি’র জন্ম হয় নি) আর অনুষ্ঠানের পুরোটা নিয়ে একটি বইয়ের ছাপানো ভার্সন উন্মোচন হয়েছিল সে আমলের হোটেল শেরাটনে। মিডিয়ার মাধ্যমে ভাষার শিক্ষা কোনও প্রকল্প সম্ভবত সেটিই ছিল প্রথম। বেতারে ও প্রকাশিত আকারে ‘টাইগার্স আই’ অসম্ভব সাড়া জাগিয়েছিল। দক্ষিণ এশিয়ার বিষয়বস্তু, চরিত্র ও প্রেক্ষাপট ব্যবহার করে ইংরেজি শেখানোর ক্ষেত্রে বিবিসি’র সে উদ্যোগকে বলা যায় পথিকৃৎ। ‘বিবিসি’র পক্ষে সেটি প্রয়োজনা করেছিলেন সাগর চৌধুরী।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2018/Sep/30/1538285599440.jpg

‘টাইগার্স আই’ নিয়ে বেশ কয়েকদিন ঊর্মি রহমান ঢাকায় ছিলেন। সে সময় আনুষ্ঠানিক আয়োজনের বাইরে একটি দীর্ঘ সন্ধ্যা ঊর্মি-সাগরের সান্নিধ্যে কাটে বনানীর এক বাড়িতে। বনানী পোস্ট অফিসের পেছনের দিকে বাড়িটি ছিল ঊর্মি রহমানের এক আত্মীয়ের, সম্ভবত বোনের। অনেক কথা হয়েছিলে এই যুগলের সঙ্গে নানা বিষয়ে ও প্রসঙ্গে।  

তারপর বহু বছর আর দেখা নেই। কিন্তু মাঝে মাঝে ভার্চুয়াল স্পেসে কথা-বার্তা হয়। তথ্যের আদান-প্রদান চলে। বার্তা২৪.কমে লিখতে বললে রাজি হন। বার্তায় প্রকাশিত আমার লেখা পড়ে মুদ্রণ প্রমাদ ধরতে কসুর করেন না বাংলা সাহিত্যের এই তুখোড় ছাত্রীটি। কাছের ঊর্মি রহমান এক ও অনন্য হয়েই থাকেন দূরত্বের সীমানা ডিঙিয়ে।

কাছেরই তো! ফরিদপুর অঞ্চলের যে তরুণী রাজধানী শহরের আজিমপুরে বড় হয়েছেন ঢাকার বিখ্যাত স্কুল-কলেজে পড়ে, তিনি এই শহর, এই জনপদের সবচেয়ে কাছের একজন তো বটেই। তারপর চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে উচ্চশিক্ষা নিয়ে আবার ঢাকায় সাংবাদিকতা করেছেন, শিল্প-সাহিত্যের সঙ্গে মিলেমিশে নিজেকে উপস্থাপন করেছেন লন্ডন থেকে আন্তর্জাতিক বাংলাভাষীর পরিমণ্ডলে। এখন বসবাস করছেন বাংলারই আরেক ভূগোল কলকাতায়। তাঁর চেয়ে বাংলা ও বাঙালির কাছের জন আর কে!

আমাদের ঊর্মি রহমান ভৌগোলিক দূরত্বের আরেক শহরে আছেন, সত্যটি আমাদের জন্য বেদনার ও কষ্টের। কিন্তু ঊর্মি রহমান সর্বাবস্থায় বাংলা ও বাঙালিকে নিয়ে আছেন, এই পরম সত্যটি সকল কষ্ট ও বেদনার উপশম। অনন্য আনন্দের সুশোভন অভিঘাত হয়ে জীবনে ও কর্মে ঊর্মি রহমান রয়েছেন বাংলার ও বাঙালিরই। 

   

৫০ বছর আগে মহাকাশ থেকে তোলা পৃথিবীর ছবি আজও শ্রেষ্ঠ



ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

সালটা ১৯৬৮। বিশ্বব্যাপী মানুষ মেতে উঠেছিল বড়দিনের আনন্দে। তখনো জানতো না, বড়দিন উপলক্ষে তারা একটি বিশেষ উপহার পেতে চলেছে। পৃথিবী থেকে আমরা হরহামেশাই চাঁদ দেখি। অমাবস্যা-পূর্ণিমা, এমনকি পক্ষের মাঝামাঝি সময়ের বদৌলতে নানা দৃষ্টিকোণে নানা আকারের চাঁদ দেখতে পাই। তবে চাঁদ থেকে পৃথিবী দেখতে কেমন? এরকমটা হয়তো অনেকেই ভাবেন।

নাসার মহাকাশচারীরা অ্যাপোলো ৪ এ করে তখন চাঁদের চারপাশে টহল দিচ্ছে। সেখান থেকে তারা চাঁদের বাসকারীদের দৃষ্টিতে পৃথিবী কেমন হবে তার এক নমুনা জোগাড় করেন। ক্রিসমাসের কিছুদিন আগে ক্রুরা চাঁদকে প্রদক্ষিণ করার সময় ব্যারেন লুনার হরিজোন থেকে একটি ছবি তোলে। সেখানে সুদূর মহাকাশ থেকে পৃথিবীর একটি সুন্দর দৃশ্য ধারণ করা হয়। চমৎকার সেই রঙিন ছবিটি সবকিছু পরিবর্তন করতে চলেছিল।

ছবিটি তুলেছিলেন মার্কিন নভোচারী বিল অ্যান্ডার্স এবং জিম লাভেল। ছবিটি ধারণ করার পর মহাকাশ বিজ্ঞানীরা অবাক হয়ে যান। অর্ধ শতাব্দী পার হয়ে যাওয়ার পরও এটিকে প্রকৃতির সবচেয়ে আইকনিক ছবি হিসেবে বিবেচনা করা হয়। কারণ, এটিই মহাকাশ থেকে তোলা প্রথম রঙিন এবং উচ্চ রেজুলেশনের ছবি।

১৯৭০ সালে পরিবেশ সচেতনতা এবং এই ব্যাপারে সক্রিয়তা বাড়ানোর উদ্দেশে একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। সেখানে পৃথিবী দিবস প্রচারিত হওয়ার কারণে ছবিটিকে বিশেষ কৃতিত্ব দেওয়া হয়।

যুক্তরাজ্যের রয়্যাল ফটোগ্রাফিক সোসাইটির প্রোগ্রাম ডিরেক্টর মাইকেল প্রিচার্ড ছবিটিকে নিখুঁত দাবি করেন। তিনি বলেন, এই ছবিটি পৃথিবীর এমন একটি দৃষ্টিভঙ্গি প্রদান করেছিল, যা আগে কোনো ছবি করতে পারেনি। প্রকাণ্ড মহাবিশ্বে পৃথিবীর অস্তিত্ব কতটা ক্ষুদ্র গ্রহ, তা যেন চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেয় ছবিটি।

১৯৬০ সালের পরই পৃথিবী নিয়ে দৃষ্টিভঙ্গি বদলাতে শুরু করে। ষাটের দশকের শেষভাগে যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপের মানুষ অনুধাবন করে পৃথিবীকে আজীবন একইভাবে ব্যবহার করা যাবে না। গ্রহের প্রতি আমাদের আরও অনুরাগী হতে হবে। সেই উদ্দেশে ১৯৬৯, ‘৭০ ও ‘৭১ সালে ‘ফ্রেন্ডস অব দ্য আর্থ’, মার্কিন প্রতিষ্ঠান ‘এনভায়রনমেন্টাল প্রোটেকশন এজেন্সি’ এবং ‘গ্রিনপিস’ প্রতিষ্ঠা করা হয়। এই ছবিটি প্রকাশের ১৮ মাস পর ২০ মিলিয়ন মার্কিন নাগরিক পৃথিবী রক্ষার আন্দোলনে রাস্তায় নামে।

পৃথিবী রক্ষা করার জন্য মানুষদের উৎসাহিত করার বেলায় ছবিটি অনেক বেশি প্রভাব ফেলে। এখনো অবদি মহাকাশ থেকে পৃথিবীর পাঠানো ছবিগুলোর মধ্যে ১৯৬৮ সালে বড়দিনের আগে তোলা সেই ছবিটিকে শ্রেষ্ঠ বিবেচনা করা হয়।

;

মাঝরাতে আইসক্রিম, পিৎজা খাওয়া নিষিদ্ধ করল মিলান!



ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: স্কাই নিউজ

ছবি: স্কাই নিউজ

  • Font increase
  • Font Decrease

আইসক্রিম, পিৎজা অনেকের কাছেই ভীষণ পছন্দের খাবার। তবে ইউরোপসহ পশ্চিমা দেশগুলোতে মাঝরাতে এসব মুখরোচক খাবার ও পানীয় খাওয়ার প্রবণতা বেশি দেখা যায়। ইতালিতে জেলাটিনের তৈরি আইসক্রিম খুব বিখ্যাত। এজন্য ইতালিতে 'জেলাটো সংস্কৃতি' নামে একটা কালচার গড়ে উঠেছে। সম্প্রতি ইতালির মিলানের বাসিন্দাদের জন্য একটি নতুন আইন প্রস্তাব করা হয়েছে। প্রতিবেদন- স্কাই নিউজ।

মিলানে বসবাসকারীদের অধিকাংশই মাঝরাতে রাস্তায় ঘোরাঘুরি করে আইসক্রিম, পিৎজা, ফাষ্টফুড জাতীয় খাবার ও পানীয় পান করে থাকে। এতে করে সেখানকার এলাকাবাসীদের রাতের ঘুম বিঘ্নিত হয়। নতুন প্রস্তাবিত আইনে শহরবাসীর রাতের ঘুম নির্বিঘ্ন করতে মধ্যরাতের পর পিৎজা ও পানীয়সহ সব ধরনের টেকওয়ে খাবার নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

তবে মধ্যরাতের পর আইসক্রিম নিষিদ্ধ করার চেষ্টা এবারই প্রথম নয়। ২০১৩ সালে, তৎকালীন মেয়র গিউলিয়ানো পিসাপিয়া অনুরূপ ব্যবস্থা বাস্তবায়নের চেষ্টা করেছিলেন কিন্তু 'অকুপাই জেলাটো' আন্দোলনসহ তীব্র প্রতিক্রিয়ার পরে তিনি এ সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসেন।

এরপর আবারও মিলানে এ আইনটি প্রস্তাব করেছেন ডেপুটি মেয়র মার্কো গ্রানেল্লি। দেশটির ১২টি জেলা এই প্রস্তাবের আওতাভুক্ত হবে বলে জানিয়েছে মিলান কর্তৃপক্ষ। এ বিষয়ে মিলানের মেয়র গ্রানেল্লি বলেন, 'আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে সামাজিকতা ও বিনোদন এবং বাসিন্দাদের শান্তি ও প্রশান্তির মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখা।

প্রস্তাবটি নিম্নলিখিত এলাকাগুলোতে প্রযোজ্য হবে বলে জানিয়েছে মিলান কর্তৃপক্ষ: নোলো, লাজারেটো, মেলজো, ইসোলা, সারপি, ভায়া সিজারিয়ানো, আরকো ডেলা পেস, কোমো-গাইআউলেন্টি, পোর্টা গ্যারিবল্ডি, ব্রেরা, টিসিনিজ এবং দারসেনা-নাভিগলি।

জানা যায়, প্রস্তাবটি মে মাসের মাঝামাঝি থেকে কার্যকর থাকবে এবং নভেম্বর পর্যন্ত চলবে। এটি প্রতিদিন রাত ১২.৩০ টায় এবং সাপ্তাহিক ছুটির দিন এবং সরকারী ছুটির দিনে রাত ১.৩০ টা থেকে প্রয়োগ করা হবে। তবে এ প্রস্তাবের বিরুদ্ধে নাগরিকদের মে মাসের শুরু পর্যন্ত আপিল করার এবং আইন পরিবর্তনের পরামর্শ দেওয়ার সময় রয়েছে।

 

 

 

;

অস্ট্রেলিয়ায় নিখোঁজ কুকুর ফিরলো যুক্তরাজ্যের মালিকের কাছে



ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

অস্ট্রেলিয়ায় ঘুরতে এসে নিখোঁজ হয় যুক্তরাজ্যের এক দম্পতির পালিত কুকুর। যুক্তরাজ্যে আসার ১৭ দিন পর মিলো নামের কুকুরটিকে ফিরে পেয়েছেন জেসন হোয়াটনাল নিক রোল্যান্ডস দম্পতি।

হোয়াটনাল এবং তার সঙ্গী নিক সম্প্রতি তাদের কুকুর মিলোকে নিয়ে অস্ট্রেলিয়ার ভিক্টোরিয়া পরিদর্শনে যান। তারা যখন সোয়ানসিতে বাড়িতে যাচ্ছিলেন তখন মেলবোর্ন বিমানবন্দরে তার হ্যান্ডলার থেকে কুকুরটি পালিয়ে যায়।

সাড়ে পাঁচ বছর বয়সী কুকুরটিকে অবশেষে মেলবোর্নের শহরতলিতে ১৭ দিন পর খুঁজে পাওয়া যায়।


হোয়াটনাল স্কাই নিউজকে বলেন, ‘মিলোকে ফিরে পাওয়াটা খুবই আশ্চর্যজনক ছিল আমার জন্য। যখন আমি আমার প্রিয় মিলোর (কুকুর) সাথে পুনরায় মিলিত হয়েছিলাম, তখন আমি কান্নায় ভেঙে পড়েছিলাম। আমার কান্না দেখে অন্যরাও কেঁদেছিল। এটি সত্যিই আবেগপ্রবণ ছিল।

তিনি আরও বলেন, বিশ্বের অন্য প্রান্তে থেকে মিলোর কথা চিন্তা করে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছিলাম। আমরা জানতাম না মিলো কোথায় আছে। এটি বেশ হতাশাজনক ছিল আমাদের জন্য, কিছুটা আশা হারিয়ে ফেলেছিলাম। তাকে ফিরে পাবো ভাবিনি।

মিলোকে পাওয়ার জন্য সামাজিক মাধ্যমে জানিয়েছিলাম, তখন স্বেচ্ছাসেবকদের কাছ থেকে সাহায্য আসে, তারা মিলোর সন্ধান দেয়। মিলোকে আমাদের কাছে ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য তাদের ধন্যবাদ।

;

আমার হাতের পাখা যেন তাদের আরাম দিচ্ছে!



মৃত্যুঞ্জয় রায়, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, সাতক্ষীরা
ছবি: বার্তা২৪, তালপাতার পাখা বিক্রি করছে পাঁচ বছরের শিশু মাহমুদুল্লাহ

ছবি: বার্তা২৪, তালপাতার পাখা বিক্রি করছে পাঁচ বছরের শিশু মাহমুদুল্লাহ

  • Font increase
  • Font Decrease

আবু বক্কর (৬২)। বয়সের ভারে অসুস্থ হয়ে তিনি এখন পাকা বিক্রেতা। প্রচণ্ড তাপদাহে মানুষ যখন ঠান্ডা বাতাসের প্রশান্তি খুঁজছে, তখন তিনি গ্রামে গ্রামে গিয়ে তালপাতার পাখা বিক্রি করছেন।

আবু বক্কর বার্তা২৪.কমকে বলেন, স্ত্রীসহ ছয় মেয়ে নিয়ে আমার সংসার। তবে মেয়েদের বিয়ে দিতে পেরেছি। কিন্তু বয়সের ভারে ঠিকই আমরা একা থেকে গেলাম। শেষ বয়সে গ্রামে গ্রামে তালপাতা পাখা বিক্রি করে সংসার চালাচ্ছি। শুধু সংসার না, এই টাকায় আমার পায়ের শিরার ব্যথার ওষুধও কিনতে হয়। একবেলা ওষুধ না খেলে চলতে পারি না।

এদিকে, পুরনো ব্যবসার ঋণের বোঝা আর অন্যদিকে অসুস্থ হয়ে ওষুধসহ সংসারের খরচ। শেষ বয়সে তালপাতার পাখাই আমার একমাত্র জীবনসঙ্গী বলেন আবু বক্কর।

তালপাতার পাখা বিক্রি করছেন আবু বক্কর, ছবি- বার্তা২৪.কম

বুধবার (২৪ এপ্রিল) সাতক্ষীরা জেলার তালা উপজেলার কলাগাছি গ্রামের কবিগানের অনুষ্ঠানে সরেজমিন দেখা যায়, একপাশে তালপাতার পাখা বিক্রি করতে ব্যস্ত ছোট্ট পাঁচ বছরের শিশু মাহমুদুল্লাহ। এই গরমে যখন তার ঘরে থাকার কথা, তখন সে নানা-নানীর সঙ্গে এসে তালপাতার পাখা বিক্রি করছে। কবিগানে বসে থাকা সব শ্রোতার কাছে গিয়ে বলছে, পাখা লাগবে, পাখা! কথা বলতে চাইলেও এ পাশ ওপাশ দিয়ে চলে যাচ্ছে, ক্রেতার কাছে।

এক ফাঁকে তাকে কাছে পেয়ে জিজ্ঞাসা করা হয়, এই বয়সে পাখা বিক্রি করছো কেন! এ প্রশ্নের উত্তরে বার্তা২৪.কমকে মাহমুদুল্লাহ বলে, প্রচণ্ড গরমে স্কুল ছুটি। তাই, নানা-নানীর সঙ্গে চলে এসেছি মেলায় পাখা বিক্রি করতে। মানুষজন আমার কাছ থেকে যেন বেশি পাখা কেনে (ক্রয়), তাই আমি মেলায় তাদের সঙ্গে এসেছি।

অনেক উৎসাহের সঙ্গে সে বলে, গরমে আমার হাতের পাখায় যেন তাদের আরাম দিচ্ছে! মেলা হলে আমি সেখানে চলে যাই পাখা বিক্রি করতে। ঘোরাঘুরিও হয় আর টাকা ইনকামও হয়। টাকার জন্য বের হয়ে পড়েছি। আমরা পাখা বিক্রি করে পেট চালাই। নানা-নানী বুড়ো হয়ে গেছে। তাই, আমি সঙ্গে এসে তাদের কষ্টটাকে একটু ভাগাভাগি করে নিচ্ছি।

যেখানে প্রচণ্ড তাপে মানুষজন নাজেহাল, সেখানে ছোট্ট মাহমুদুল্লাহ ছুটে চলেছে এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে পাখা বিক্রি করতে। ছোট্ট শিশু হলেও গরম যেন তার কাছে কিছু না, পেটের তাগিদে!

আরেক পাখা বিক্রেতা তালা উপজেলার হরিণখোলা গ্রামের বাসিন্দা ভদ্রকান্ত সরকার (৭০)। ১২-১৪ বছর ধরে এই পেশায় আছেন তিনি।

চলছে তালপাতার পাখার বিকিকিনি, ছবি- বার্তা২৪.কম

শেষ বয়সে পাখা কেন বিক্রি করছেন এমন প্রশ্নের উত্তরে বার্তা২৪.কমকে ভদ্রকান্ত বলেন, চাল কিনে খেতে হয়। খুব কষ্টের সংসার! ছেলে-মেয়ে আছে। তারা তাদের মতো কাজ করে খায়। মা বাবার বয়স হয়ে গেলে ছেলে আর আমাদের থাকে না। আমরা বৃদ্ধ বয়সে কেমন আছি, সেটা জানার সুযোগ তাদের থাকে না। শেষজীবনটা এভাবে পাখা বিক্রি করে কাটিয়ে দেবো। কী আর করবো! কপালে যা আছে, শেষপর্যন্ত তাই হবে। কপালে ছিল, এমন বৃদ্ধ বয়সে গ্রামে গ্রামে পাখা বিক্রি করতে হবে!

;