বসন্তের আগাম দোলায় কাপ্তাই



ড. মাহফুজ পারভেজ, কন্ট্রিবিউটিং এডিটর, বার্তা২৪.কম
আগাম বসন্তের ছোঁয়া হ্রদ-অরণ্যের কাপ্তাইয়ে, ছবি: বার্তা২৪.কম

আগাম বসন্তের ছোঁয়া হ্রদ-অরণ্যের কাপ্তাইয়ে, ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

চলে যাওয়ার আগে শীত অতি সন্তর্পণে গুটিয়ে নিচ্ছে নিজেকে। সমতল আর পাহাড়ের সন্ধিস্থল কাপ্তাইয়ে এসে টের পাওয়া গেলো শীত বিদায়ের টান আর বসন্তের আগাম দোলা।

শুক্রবার ( ৮ ফেব্রুয়ারি) ভোরে লেক আর পাহাড় ঘেরা কাপ্তাই স্বাগত জানালো নাতিশীতোষ্ণ মখমল বাতাসের পরশে। 'শেষ রাতে একটু ঠাণ্ডা পড়ে। শীত বলতে এতটুকুই বাকি আছে', বললেন কাপ্তাই প্রকৌশল একাডেমীর উপ-পরিচালক শাহরিয়ার হোসেন মজুমদার।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের খ্যাতনামা অধ্যাপক আবু তাহের মজুমদারের পুত্র শাহরিয়ার পড়েছেন নৃতত্ত্ব। বাংলাদেশের নৃবিজ্ঞান চর্চার প্রথম ব্যাচের ছাত্র তিনি জাহাঙ্গীরনগরের ১৫তম ব্যাচ। বললেন, 'চন্দ্রঘোণা-কাপ্তাই থেকেই পার্বত্য চট্টগ্রামের ছোঁয়া শুরু। হ্রদের অপর পাশের পুরোটাই পার্বত্যাঞ্চল।'

চারপাশে তাকালেই অনুভব করা যায় পার্বত্য প্রকৃতির মহিমা। পুরো জনপদ ধনুকের মতো ঘিরে রেখেছে সুবিশাল লেক। লেকের স্থির জলে বিম্বিত হচ্ছে সুনীল আকাশ ও সবুজ প্রকৃতি।

'শীতের সময়ে লেকে পানি কম থাকে। বর্ষায় জলের ধারায় টইটুম্বুর হয়ে থাকে কাপ্তাই লেক বা কৃত্রিম হ্রদ' বললেন শাহরিয়ার।

মূলত জলবিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য মধ্য ষাট দশকে কাপ্তাই হ্রদ সৃষ্টি করা হয়। জলবিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রটটিও কাপ্তাইয়ে। কর্ণফুলী নদী থেকে সৃষ্ট জলাধারটির সিংহভাগ কাপ্তাই ও রাঙামাটির মাঝে। বাকি অংশ কাপ্তাই থেকে রাঙ্গুনিয়া, রাউজান, হাটহাজারী হয়ে চট্টগ্রাম শহর ছুঁয়ে সাগরে মিশেছে।

জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র ও কয়েকটি সরকারি স্থাপনা পেরিয়ে খালি জায়গা পেয়ে লেকের জল স্পর্শ করতে ইচ্ছে হলো। অনেকটুকু পথ তীক্ষ্ণ ঢাল পেরিয়ে নিচে পাওয়া গেলো পানির সাক্ষাত। লেকের ঢালে বিবর্ণ লতা-গুল্মের শরীরের সবুজ, হলুদ, গোলাপি রঙের হালকা প্রলেপ জানিয়ে দিল, 'বসন্ত আসছে'।

শীত ঋতুর শেষ সপ্তাহটি চলে এসেছে বসন্তের অংশে। পত্র, পল্লব, পুষ্প, বিটপীর শরীরের বাসন্তিক ছোপ ক্রমেই স্পষ্ট হচ্ছে। লেক ঘেরা পাহাড়ি বনানীতেও লেগেছে রঙের আগুন। শুষ্ক ও শীতার্ত বৃক্ষের কাঠামোয় চলছে আমূল পরিবর্তন। ঋতুর পালাবদলে বদলাচ্ছে প্রকৃতি ও উদ্ভিদ। এলোমেলো বইছে তরতাজা বাসন্তী বাতাস।

পার্বত্য জনগোষ্ঠীর কিছু সদস্যকে দেখা গেলো লেকের তীর ঘেঁষা কাঁচা বসতিতে। আদিবাসী পোশাকে অবাক তাকিয়ে আছে লোকগুলো। আর আছে লাউড স্পিকারে অতি উচ্চশব্দে হিন্দি গান বাজিয়ে চলাচলকারী পিকনিক পার্টির বাস, মিনিবাস।

এখন চলছে পিকনিকের পিক সিজন। বিভিন্ন স্কুল, কলেজ, ক্লাবের ব্যানার ঝুলিয়ে শহরের অনেক পিকনিক পার্টি এসেছে কাপ্তাইয়ে। খাওয়া-দাওয়া আর জোরে চটুল হিন্দি গান বাজানো হয়ে গেছে পিকনিকের ট্রেডমার্ক। ভ্রমণের সঙ্গে সংস্কৃতির সম্পর্ক আড়াল করছে প্রচণ্ড শব্দ দূষণ।

'শনিবার এখানে সাপ্তাহিক হাট বসে। পাহাড়িরা নানা সামগ্রী নিয়ে উপস্থিত হয়।' জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র ও প্রকৌশল প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের মুখোমুখি কমপ্লেক্সের মাঝ দিয়ে চলে যাওয়া রাস্তাটির দিকে ইঙ্গিত করে বললেন সাইফুল ইসলাম।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Feb/08/1549627522306.jpg
ট্রাকে ট্রাকে উজাড় হচ্ছে বনজ সম্পদ, কাঠ ও বাঁশ, ছবি: বার্তা২৪.কম

 

'এটিই এখানকার প্রধান সড়ক। চট্টগ্রাম থেকে হাটহাজারী ও রাউজানের দক্ষিণাংশ ছুঁয়ে রাঙ্গুনিয়া চন্দ্রঘোনা হয়ে কাপ্তাই লেক পর্যন্ত গিয়ে শেষ হয়েছে রাস্তাটি’, জানান সাইফুল। তিনি একটি প্রাইমারি স্কুলের শিক্ষক।

জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রের পাশেই কাপ্তাইয়ের মূল অংশ। রাস্তার দুই পাশে অসংখ্য ট্রাক। লেকের অপর তীরের পার্বত্য রাঙ্গামাটি থেকে বাঁশ ও গাছের সরবরাহ নিয়ে ট্রাকগুলো চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে চলাচল করছে।

'অবাধে বনজ সম্পদ উজাড় হচ্ছে অসাধুচক্রের পৃষ্ঠপোষকতায়', সাইফুলের কণ্ঠে ক্ষোভ। সবাই প্রকৃতির নিধন দেখেও কিছু করছে না বলে ক্ষুব্ধ তিনি।

ট্রাক স্ট্যান্ডের পাশেই বাস স্টপেজ। বিভিন্ন বাস কোম্পানির অফিস রয়েছে চারপাশে। অস্থায়ী দোকান, চা স্টল, ভাতের হোটেল দেখা গেলো। রাস্তার শেষে সামনেই লেকের সীমানা। সেখানে জেটি। জলপদে রাঙ্গামাটি যাওয়ার পথের শুরু এখানেই।

জল, জঙ্গল, বৃক্ষ শোভিত কাপ্তাই জনপদটি বিশ্বের অন্যতম শ্রেষ্ঠ পর্যটন কেন্দ্র হওয়ার যোগ্যতা রাখে। পরিকল্পনা ও পদক্ষেপের অভাবে সেটা আর হলো না। হতশ্রী অবয়বে কাপ্তাই যেন না-শহর, না-গ্রাম। উন্নয়নের দেশময় তোড়ে কাপ্তাই পড়ে আছে প্রাগৈতিহাসিক ক্রান্তিকালে।

ফিরে আসার পথে আমাদের রাস্তার সমান্তরালে চলা নদী, অদূরের প্রকৃতি, নিঝুম নিসর্গ আর কয়েকটি অনামা পাখি যেন করুণ সুরে বলছিল নান্দনিক জনপদের অন্তর্গত বেদনার কথা। পশ্চিমের দিগন্তে ঢলে পড়া সূর্যের মায়াবী আলো আদিম আরণ্যক জনপদের সুবিশাল শরীরে রঙের ঢেউ ছড়িয়ে মহীয়ান করে তুলেছিল কাপ্তাইকে। শত কষ্ট আর অবহেলার পরেও কাপ্তাই তবুও বার বার জানিয়ে দিচ্ছিল বসন্তের বাহার। শুনাচ্ছিল ঋতুরাজ বসন্তের আগাম আগমনী।

   

৫০ বছর আগে মহাকাশ থেকে তোলা পৃথিবীর ছবি আজও শ্রেষ্ঠ



ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

সালটা ১৯৬৮। বিশ্বব্যাপী মানুষ মেতে উঠেছিল বড়দিনের আনন্দে। তখনো জানতো না, বড়দিন উপলক্ষে তারা একটি বিশেষ উপহার পেতে চলেছে। পৃথিবী থেকে আমরা হরহামেশাই চাঁদ দেখি। অমাবস্যা-পূর্ণিমা, এমনকি পক্ষের মাঝামাঝি সময়ের বদৌলতে নানা দৃষ্টিকোণে নানা আকারের চাঁদ দেখতে পাই। তবে চাঁদ থেকে পৃথিবী দেখতে কেমন? এরকমটা হয়তো অনেকেই ভাবেন।

নাসার মহাকাশচারীরা অ্যাপোলো ৪ এ করে তখন চাঁদের চারপাশে টহল দিচ্ছে। সেখান থেকে তারা চাঁদের বাসকারীদের দৃষ্টিতে পৃথিবী কেমন হবে তার এক নমুনা জোগাড় করেন। ক্রিসমাসের কিছুদিন আগে ক্রুরা চাঁদকে প্রদক্ষিণ করার সময় ব্যারেন লুনার হরিজোন থেকে একটি ছবি তোলে। সেখানে সুদূর মহাকাশ থেকে পৃথিবীর একটি সুন্দর দৃশ্য ধারণ করা হয়। চমৎকার সেই রঙিন ছবিটি সবকিছু পরিবর্তন করতে চলেছিল।

ছবিটি তুলেছিলেন মার্কিন নভোচারী বিল অ্যান্ডার্স এবং জিম লাভেল। ছবিটি ধারণ করার পর মহাকাশ বিজ্ঞানীরা অবাক হয়ে যান। অর্ধ শতাব্দী পার হয়ে যাওয়ার পরও এটিকে প্রকৃতির সবচেয়ে আইকনিক ছবি হিসেবে বিবেচনা করা হয়। কারণ, এটিই মহাকাশ থেকে তোলা প্রথম রঙিন এবং উচ্চ রেজুলেশনের ছবি।

১৯৭০ সালে পরিবেশ সচেতনতা এবং এই ব্যাপারে সক্রিয়তা বাড়ানোর উদ্দেশে একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। সেখানে পৃথিবী দিবস প্রচারিত হওয়ার কারণে ছবিটিকে বিশেষ কৃতিত্ব দেওয়া হয়।

যুক্তরাজ্যের রয়্যাল ফটোগ্রাফিক সোসাইটির প্রোগ্রাম ডিরেক্টর মাইকেল প্রিচার্ড ছবিটিকে নিখুঁত দাবি করেন। তিনি বলেন, এই ছবিটি পৃথিবীর এমন একটি দৃষ্টিভঙ্গি প্রদান করেছিল, যা আগে কোনো ছবি করতে পারেনি। প্রকাণ্ড মহাবিশ্বে পৃথিবীর অস্তিত্ব কতটা ক্ষুদ্র গ্রহ, তা যেন চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেয় ছবিটি।

১৯৬০ সালের পরই পৃথিবী নিয়ে দৃষ্টিভঙ্গি বদলাতে শুরু করে। ষাটের দশকের শেষভাগে যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপের মানুষ অনুধাবন করে পৃথিবীকে আজীবন একইভাবে ব্যবহার করা যাবে না। গ্রহের প্রতি আমাদের আরও অনুরাগী হতে হবে। সেই উদ্দেশে ১৯৬৯, ‘৭০ ও ‘৭১ সালে ‘ফ্রেন্ডস অব দ্য আর্থ’, মার্কিন প্রতিষ্ঠান ‘এনভায়রনমেন্টাল প্রোটেকশন এজেন্সি’ এবং ‘গ্রিনপিস’ প্রতিষ্ঠা করা হয়। এই ছবিটি প্রকাশের ১৮ মাস পর ২০ মিলিয়ন মার্কিন নাগরিক পৃথিবী রক্ষার আন্দোলনে রাস্তায় নামে।

পৃথিবী রক্ষা করার জন্য মানুষদের উৎসাহিত করার বেলায় ছবিটি অনেক বেশি প্রভাব ফেলে। এখনো অবদি মহাকাশ থেকে পৃথিবীর পাঠানো ছবিগুলোর মধ্যে ১৯৬৮ সালে বড়দিনের আগে তোলা সেই ছবিটিকে শ্রেষ্ঠ বিবেচনা করা হয়।

;

মাঝরাতে আইসক্রিম, পিৎজা খাওয়া নিষিদ্ধ করল মিলান!



ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: স্কাই নিউজ

ছবি: স্কাই নিউজ

  • Font increase
  • Font Decrease

আইসক্রিম, পিৎজা অনেকের কাছেই ভীষণ পছন্দের খাবার। তবে ইউরোপসহ পশ্চিমা দেশগুলোতে মাঝরাতে এসব মুখরোচক খাবার ও পানীয় খাওয়ার প্রবণতা বেশি দেখা যায়। ইতালিতে জেলাটিনের তৈরি আইসক্রিম খুব বিখ্যাত। এজন্য ইতালিতে 'জেলাটো সংস্কৃতি' নামে একটা কালচার গড়ে উঠেছে। সম্প্রতি ইতালির মিলানের বাসিন্দাদের জন্য একটি নতুন আইন প্রস্তাব করা হয়েছে। প্রতিবেদন- স্কাই নিউজ।

মিলানে বসবাসকারীদের অধিকাংশই মাঝরাতে রাস্তায় ঘোরাঘুরি করে আইসক্রিম, পিৎজা, ফাষ্টফুড জাতীয় খাবার ও পানীয় পান করে থাকে। এতে করে সেখানকার এলাকাবাসীদের রাতের ঘুম বিঘ্নিত হয়। নতুন প্রস্তাবিত আইনে শহরবাসীর রাতের ঘুম নির্বিঘ্ন করতে মধ্যরাতের পর পিৎজা ও পানীয়সহ সব ধরনের টেকওয়ে খাবার নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

তবে মধ্যরাতের পর আইসক্রিম নিষিদ্ধ করার চেষ্টা এবারই প্রথম নয়। ২০১৩ সালে, তৎকালীন মেয়র গিউলিয়ানো পিসাপিয়া অনুরূপ ব্যবস্থা বাস্তবায়নের চেষ্টা করেছিলেন কিন্তু 'অকুপাই জেলাটো' আন্দোলনসহ তীব্র প্রতিক্রিয়ার পরে তিনি এ সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসেন।

এরপর আবারও মিলানে এ আইনটি প্রস্তাব করেছেন ডেপুটি মেয়র মার্কো গ্রানেল্লি। দেশটির ১২টি জেলা এই প্রস্তাবের আওতাভুক্ত হবে বলে জানিয়েছে মিলান কর্তৃপক্ষ। এ বিষয়ে মিলানের মেয়র গ্রানেল্লি বলেন, 'আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে সামাজিকতা ও বিনোদন এবং বাসিন্দাদের শান্তি ও প্রশান্তির মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখা।

প্রস্তাবটি নিম্নলিখিত এলাকাগুলোতে প্রযোজ্য হবে বলে জানিয়েছে মিলান কর্তৃপক্ষ: নোলো, লাজারেটো, মেলজো, ইসোলা, সারপি, ভায়া সিজারিয়ানো, আরকো ডেলা পেস, কোমো-গাইআউলেন্টি, পোর্টা গ্যারিবল্ডি, ব্রেরা, টিসিনিজ এবং দারসেনা-নাভিগলি।

জানা যায়, প্রস্তাবটি মে মাসের মাঝামাঝি থেকে কার্যকর থাকবে এবং নভেম্বর পর্যন্ত চলবে। এটি প্রতিদিন রাত ১২.৩০ টায় এবং সাপ্তাহিক ছুটির দিন এবং সরকারী ছুটির দিনে রাত ১.৩০ টা থেকে প্রয়োগ করা হবে। তবে এ প্রস্তাবের বিরুদ্ধে নাগরিকদের মে মাসের শুরু পর্যন্ত আপিল করার এবং আইন পরিবর্তনের পরামর্শ দেওয়ার সময় রয়েছে।

 

 

 

;

অস্ট্রেলিয়ায় নিখোঁজ কুকুর ফিরলো যুক্তরাজ্যের মালিকের কাছে



ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

অস্ট্রেলিয়ায় ঘুরতে এসে নিখোঁজ হয় যুক্তরাজ্যের এক দম্পতির পালিত কুকুর। যুক্তরাজ্যে আসার ১৭ দিন পর মিলো নামের কুকুরটিকে ফিরে পেয়েছেন জেসন হোয়াটনাল নিক রোল্যান্ডস দম্পতি।

হোয়াটনাল এবং তার সঙ্গী নিক সম্প্রতি তাদের কুকুর মিলোকে নিয়ে অস্ট্রেলিয়ার ভিক্টোরিয়া পরিদর্শনে যান। তারা যখন সোয়ানসিতে বাড়িতে যাচ্ছিলেন তখন মেলবোর্ন বিমানবন্দরে তার হ্যান্ডলার থেকে কুকুরটি পালিয়ে যায়।

সাড়ে পাঁচ বছর বয়সী কুকুরটিকে অবশেষে মেলবোর্নের শহরতলিতে ১৭ দিন পর খুঁজে পাওয়া যায়।


হোয়াটনাল স্কাই নিউজকে বলেন, ‘মিলোকে ফিরে পাওয়াটা খুবই আশ্চর্যজনক ছিল আমার জন্য। যখন আমি আমার প্রিয় মিলোর (কুকুর) সাথে পুনরায় মিলিত হয়েছিলাম, তখন আমি কান্নায় ভেঙে পড়েছিলাম। আমার কান্না দেখে অন্যরাও কেঁদেছিল। এটি সত্যিই আবেগপ্রবণ ছিল।

তিনি আরও বলেন, বিশ্বের অন্য প্রান্তে থেকে মিলোর কথা চিন্তা করে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছিলাম। আমরা জানতাম না মিলো কোথায় আছে। এটি বেশ হতাশাজনক ছিল আমাদের জন্য, কিছুটা আশা হারিয়ে ফেলেছিলাম। তাকে ফিরে পাবো ভাবিনি।

মিলোকে পাওয়ার জন্য সামাজিক মাধ্যমে জানিয়েছিলাম, তখন স্বেচ্ছাসেবকদের কাছ থেকে সাহায্য আসে, তারা মিলোর সন্ধান দেয়। মিলোকে আমাদের কাছে ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য তাদের ধন্যবাদ।

;

আমার হাতের পাখা যেন তাদের আরাম দিচ্ছে!



মৃত্যুঞ্জয় রায়, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, সাতক্ষীরা
ছবি: বার্তা২৪, তালপাতার পাখা বিক্রি করছে পাঁচ বছরের শিশু মাহমুদুল্লাহ

ছবি: বার্তা২৪, তালপাতার পাখা বিক্রি করছে পাঁচ বছরের শিশু মাহমুদুল্লাহ

  • Font increase
  • Font Decrease

আবু বক্কর (৬২)। বয়সের ভারে অসুস্থ হয়ে তিনি এখন পাকা বিক্রেতা। প্রচণ্ড তাপদাহে মানুষ যখন ঠান্ডা বাতাসের প্রশান্তি খুঁজছে, তখন তিনি গ্রামে গ্রামে গিয়ে তালপাতার পাখা বিক্রি করছেন।

আবু বক্কর বার্তা২৪.কমকে বলেন, স্ত্রীসহ ছয় মেয়ে নিয়ে আমার সংসার। তবে মেয়েদের বিয়ে দিতে পেরেছি। কিন্তু বয়সের ভারে ঠিকই আমরা একা থেকে গেলাম। শেষ বয়সে গ্রামে গ্রামে তালপাতা পাখা বিক্রি করে সংসার চালাচ্ছি। শুধু সংসার না, এই টাকায় আমার পায়ের শিরার ব্যথার ওষুধও কিনতে হয়। একবেলা ওষুধ না খেলে চলতে পারি না।

এদিকে, পুরনো ব্যবসার ঋণের বোঝা আর অন্যদিকে অসুস্থ হয়ে ওষুধসহ সংসারের খরচ। শেষ বয়সে তালপাতার পাখাই আমার একমাত্র জীবনসঙ্গী বলেন আবু বক্কর।

তালপাতার পাখা বিক্রি করছেন আবু বক্কর, ছবি- বার্তা২৪.কম

বুধবার (২৪ এপ্রিল) সাতক্ষীরা জেলার তালা উপজেলার কলাগাছি গ্রামের কবিগানের অনুষ্ঠানে সরেজমিন দেখা যায়, একপাশে তালপাতার পাখা বিক্রি করতে ব্যস্ত ছোট্ট পাঁচ বছরের শিশু মাহমুদুল্লাহ। এই গরমে যখন তার ঘরে থাকার কথা, তখন সে নানা-নানীর সঙ্গে এসে তালপাতার পাখা বিক্রি করছে। কবিগানে বসে থাকা সব শ্রোতার কাছে গিয়ে বলছে, পাখা লাগবে, পাখা! কথা বলতে চাইলেও এ পাশ ওপাশ দিয়ে চলে যাচ্ছে, ক্রেতার কাছে।

এক ফাঁকে তাকে কাছে পেয়ে জিজ্ঞাসা করা হয়, এই বয়সে পাখা বিক্রি করছো কেন! এ প্রশ্নের উত্তরে বার্তা২৪.কমকে মাহমুদুল্লাহ বলে, প্রচণ্ড গরমে স্কুল ছুটি। তাই, নানা-নানীর সঙ্গে চলে এসেছি মেলায় পাখা বিক্রি করতে। মানুষজন আমার কাছ থেকে যেন বেশি পাখা কেনে (ক্রয়), তাই আমি মেলায় তাদের সঙ্গে এসেছি।

অনেক উৎসাহের সঙ্গে সে বলে, গরমে আমার হাতের পাখায় যেন তাদের আরাম দিচ্ছে! মেলা হলে আমি সেখানে চলে যাই পাখা বিক্রি করতে। ঘোরাঘুরিও হয় আর টাকা ইনকামও হয়। টাকার জন্য বের হয়ে পড়েছি। আমরা পাখা বিক্রি করে পেট চালাই। নানা-নানী বুড়ো হয়ে গেছে। তাই, আমি সঙ্গে এসে তাদের কষ্টটাকে একটু ভাগাভাগি করে নিচ্ছি।

যেখানে প্রচণ্ড তাপে মানুষজন নাজেহাল, সেখানে ছোট্ট মাহমুদুল্লাহ ছুটে চলেছে এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে পাখা বিক্রি করতে। ছোট্ট শিশু হলেও গরম যেন তার কাছে কিছু না, পেটের তাগিদে!

আরেক পাখা বিক্রেতা তালা উপজেলার হরিণখোলা গ্রামের বাসিন্দা ভদ্রকান্ত সরকার (৭০)। ১২-১৪ বছর ধরে এই পেশায় আছেন তিনি।

চলছে তালপাতার পাখার বিকিকিনি, ছবি- বার্তা২৪.কম

শেষ বয়সে পাখা কেন বিক্রি করছেন এমন প্রশ্নের উত্তরে বার্তা২৪.কমকে ভদ্রকান্ত বলেন, চাল কিনে খেতে হয়। খুব কষ্টের সংসার! ছেলে-মেয়ে আছে। তারা তাদের মতো কাজ করে খায়। মা বাবার বয়স হয়ে গেলে ছেলে আর আমাদের থাকে না। আমরা বৃদ্ধ বয়সে কেমন আছি, সেটা জানার সুযোগ তাদের থাকে না। শেষজীবনটা এভাবে পাখা বিক্রি করে কাটিয়ে দেবো। কী আর করবো! কপালে যা আছে, শেষপর্যন্ত তাই হবে। কপালে ছিল, এমন বৃদ্ধ বয়সে গ্রামে গ্রামে পাখা বিক্রি করতে হবে!

;