যেভাবে দাঁত ব্রাশ করা আমাদের প্রতিদিনের কাজ হয়ে উঠল



তানিম কায়সার, কন্ট্রিবিউটিং করেসপন্ডেন্ট
আমাদের প্রতিদিন দাঁত ব্রাশ করার অভ্যাস খুব পুরনো নয়

আমাদের প্রতিদিন দাঁত ব্রাশ করার অভ্যাস খুব পুরনো নয়

  • Font increase
  • Font Decrease

ঘুম থেকে জেগেই আমাদের প্রাথমিক কাজগুলো একটি হলো দাঁত ব্রাশ করা। দিনের পর দিন একই কাজে অভ্যস্ত আমাদের কাছে ব্যাপারটিকে যতই স্বাভাবিক মনে হোক, নানান ধাপ অতিক্রম করেই স্বাভাবিক পর্যায়ে এসে পৌঁছেছে প্রতিদিন দাঁত ব্রাশ করার এই অভ্যাস।

সম্প্রতি প্রায় ২,৫০০ বছর আগের কিছু টুথ পিক, দাঁতের সরঞ্জাম এবং দাঁতের সুরক্ষার কিছু বিবরণ থেকে প্রত্নতাত্ত্বিকরা বেশ কিছু নিদর্শন খুঁজে পান যেগুলো থেকে সেই সময়ের দাঁতের চিকিৎসা এবং যত্নের নিয়ম-কানুন সম্পর্কে বেশ কিছু তথ্য পাওয়া গিয়েছে। হাজার বছর আগেও মানুষ দাঁতের সুরক্ষা এবং এর সুস্থতার ব্যাপারে সচেতন ছিল। গবেষণা থেকে দাঁতের চিকিৎসায় ব্যবহৃত বেশ কিছু উপাদানেরও খোঁজ মিলেছে।

প্রত্নতাত্ত্বিকরা ধারণা করেন বিখ্যাত গ্রিক ডাক্তার হিপ্পোক্রেটিস ছিলেন প্রথম ডাক্তার যিনি দাঁত পরিষ্কার রাখার কথা উল্লেখ করে চিকিৎসা প্রদান করেছিলেন। প্রাপ্ত কিছু নথিপত্র মারফত জানা যায়, তিনি মূলত এক প্রকার শুকনো টুথপেস্ট দিতেন যেটা দাঁত পরিষ্কার রাখতে সহায়তা করত। সেখান থেকেই ক্রমান্বয়ে আজকের এই আধুনিক টুথ পেস্টের আগমন বলে অনেকেরই ধারণা।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Aug/22/1566476478549.jpg
◤ গ্রিক ডাক্তার হিপ্পোক্রেটিস ◢


প্রাচীন চীনা এবং মিশরীয় চিকিৎসা-গ্রন্থগুলো স্বাস্থ্যরক্ষায় দাঁত পরিষ্কারের এবং ক্ষয় অপসারণের পরামর্শ দিয়েছে। এক্ষেত্রে পশুর পশম, মাছের হাড় এবং বিভিন্ন পাখির পাখা ব্যবহারের প্রমাণও পাওয়া যায়। তারা দাঁতের মেরামত করতে বা সাজানোর জন্য রৌপ্য এবং সোনার মতো উপকরণ ব্যবহার করত যেটার ব্যবহার এখনো লক্ষ্য করা যায়।

আরব উপদ্বীপ, উত্তর আফ্রিকা এবং ভারতীয় উপমহাদেশের লোকেরা গাছ থেকে তৈরি চিবানো কাঠি দিয়ে ঐতিহ্যগতভাবে দাঁত পরিষ্কার করতেন। কাঠিগুলো সাধারণত জয়তুন কিংবা নিমের ডালের হতো। গাছের চিকন ডালের সম্মুখ অংশকে চেছে দাঁত পরিষ্কারের কাজে টুথব্রাশ হিসেবে ব্যবহার করা হতো এবং এটি ‘চিউই স্টিক’ বা চিবানোর কাঠি, দাঁতন বা মেসওয়াক নামে পরিচিত। আমাদের দেশেও দাঁতন বা মেসওয়াকের ব্যাপক প্রচলন ছিল একসময়। শহরাঞ্চলে টুথব্রাশের আগমন ও ব্যাপক প্রচলনের ফলে দাঁতনের ব্যবহার কমে গেলেও গ্রামাঞ্চলে এখনো চোখে পড়ে। ইউরোপিয়ানরা দাঁত পরিষ্কার রাখতে ব্যবহার করত লবণ কিংবা কাচের ক্ষুদ্রক্ষুদ্র কণাকে।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Aug/22/1566476520154.jpg
◤ দাঁতন বা মেসওয়াক ◢


বিশ্বাস করুন কিংবা না করুন, হাজার বছরের দাঁত মাজনের ইতিহাসে প্রথম যে ব্যক্তি প্রক্রিয়াটিতে অনাস্থা পোষণ করেন, তিনিই পরবর্তী সময়ে দন্ত্য-চিকিৎসার জনক হিসেবে বিবেচিত হয়েছেন। তার নাম পিয়ের ফ্যাচার্ড। ফরাসি এই চিকিৎসক ১৭০০ দশকের গোড়ার দিকে ব্রাশ করে দাঁত পরিষ্কার করতে নিষেধ করেন। ব্রাশের পরিবর্তে তিনি একটি টুথপিক বা স্পঞ্জ জল বা ব্র্যান্ডিতে ভিজিয়ে দাঁত পরিষ্কার করতে উত্সাহিত করেছিলেন।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Aug/22/1566476567774.jpg
◤ ফরাসি চিকিৎসক পিয়ের ফ্যাচার্ড ◢

প্রাচীনকালে পশুর পশম দিয়ে টুথব্রাশ তৈরি করা হতো। আজকে আমরা যেই ব্রাশ দেখি সেটা ১৭০০ শতকের দিকে উইলিয়াম অ্যাডিস নামের একজন ইংলিশ ব্যক্তির হাত ধরে প্রসার লাভ করে। তিনি এই ব্রাশের ব্যাপক বিপণন কার্যক্রম শুরু করেছিলেন। কারাগারে থাকাকালীন হাড় এবং পশুর মাংস থেকে টুথব্রাশ তৈরির পরে তিনি এই ধারণাটি পেয়েছিলেন। এখনো কিছু কিছু জায়গায় পশুর পশম দিয়ে ব্রাশ তৈরি করা হয়।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Aug/22/1566476648302.jpg
◤ ইংলিশ উদ্যোক্তা উইলিয়াম অ্যাডিস ◢


১৯ শতকের দিকে আমেরিকায় টুথব্রাশের ব্যবহার ব্যাপক জনপ্রিয়তা পায়। বাচ্চাদেরকে ব্রাশ করার নিয়ম শেখানো হয়। ফ্যাক্টরিগুলো শ্রমিকদের নিয়মিত ব্রাশ করার পরামর্শ দেয় যাতে দাঁতের ব্যথার কারণে তারা কাজে অনুপস্থিত না থাকে। এরপর দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় সেনাবাহিনীর জন্য দাঁত ব্রাশ করাকে প্রাত্যহিক রুটিন হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। ১৯৩৮ সালে প্রথম নাইলনের টুথব্রাশ তৈরি করা হয় যা সেনাবাহিনীকে প্রদান করা হয়।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Aug/22/1566476735954.jpg
◤ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে দাঁত ব্রাশ করাকে সৈন্যদের প্রাত্যহিক রুটিন করা হয় ◢


বর্তমানে চিবানো টুথব্রাশ নামে আরেক প্রকার টুথব্রাশ পাওয়া যায় যা দেখতে ক্ষুদ্র আকৃতির প্লাস্টিক বা কৃত্রিম বস্তুর ছাঁচ দিয়ে তৈরি এক ধরনের টুথব্রাশ। এরজন্যে কোনো পানির প্রয়োজন পড়ে না। এটি দেখতে খুবই ছোট প্রকৃতির। ভেজানোরও দরকার নেই। চিবানো টুথব্রাশে বিভিন্ন সুগন্ধি মিশ্রণ হিসেবে মিন্ট বা বাবলগামের মতো উপকরণ ব্যবহৃত হয়। কিন্তু এটা একবারই ব্যবহার করা যায়।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Aug/22/1566476827084.jpg
◤ নেপোলিয়নের ঘোড়ার পশমের টুথব্রাশ ◢


আধুনিক সভ্য সমাজে টুথব্রাশ প্রচলনের অনেক আগে থেকেই বহুবিধ উপায়ে মুখের স্বাস্থ্য রক্ষা তথা দাঁতের পরিচর্যা করা হতো। সমগ্র বিশ্বের বিভিন্ন গবেষকদের কাছে টুথব্রাশের পূর্ব-পুরুষ হিসেবে বিভিন্ন উপকরণের বিষয়ে যথেষ্ট প্রমাণ রয়েছে। এরমধ্যে লাঠি চিবানো, গাছের চিকন ডাল, পাখির পালক, পশুর হাড় এমনকি প্রাণীদেহের আত্মরক্ষামূলক ধারালো কাঁটা অন্যতম। নেপোলিয়ন বোনাপার্ট ঘোড়ার চুল দিয়ে তৈরি টুথব্রাশের সাহায্যে দাঁত পরিষ্কার রাখতেন বলে জানা যায়।

   

৫০ বছর আগে মহাকাশ থেকে তোলা পৃথিবীর ছবি আজও শ্রেষ্ঠ



ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

সালটা ১৯৬৮। বিশ্বব্যাপী মানুষ মেতে উঠেছিল বড়দিনের আনন্দে। তখনো জানতো না, বড়দিন উপলক্ষে তারা একটি বিশেষ উপহার পেতে চলেছে। পৃথিবী থেকে আমরা হরহামেশাই চাঁদ দেখি। অমাবস্যা-পূর্ণিমা, এমনকি পক্ষের মাঝামাঝি সময়ের বদৌলতে নানা দৃষ্টিকোণে নানা আকারের চাঁদ দেখতে পাই। তবে চাঁদ থেকে পৃথিবী দেখতে কেমন? এরকমটা হয়তো অনেকেই ভাবেন।

নাসার মহাকাশচারীরা অ্যাপোলো ৪ এ করে তখন চাঁদের চারপাশে টহল দিচ্ছে। সেখান থেকে তারা চাঁদের বাসকারীদের দৃষ্টিতে পৃথিবী কেমন হবে তার এক নমুনা জোগাড় করেন। ক্রিসমাসের কিছুদিন আগে ক্রুরা চাঁদকে প্রদক্ষিণ করার সময় ব্যারেন লুনার হরিজোন থেকে একটি ছবি তোলে। সেখানে সুদূর মহাকাশ থেকে পৃথিবীর একটি সুন্দর দৃশ্য ধারণ করা হয়। চমৎকার সেই রঙিন ছবিটি সবকিছু পরিবর্তন করতে চলেছিল।

ছবিটি তুলেছিলেন মার্কিন নভোচারী বিল অ্যান্ডার্স এবং জিম লাভেল। ছবিটি ধারণ করার পর মহাকাশ বিজ্ঞানীরা অবাক হয়ে যান। অর্ধ শতাব্দী পার হয়ে যাওয়ার পরও এটিকে প্রকৃতির সবচেয়ে আইকনিক ছবি হিসেবে বিবেচনা করা হয়। কারণ, এটিই মহাকাশ থেকে তোলা প্রথম রঙিন এবং উচ্চ রেজুলেশনের ছবি।

১৯৭০ সালে পরিবেশ সচেতনতা এবং এই ব্যাপারে সক্রিয়তা বাড়ানোর উদ্দেশে একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। সেখানে পৃথিবী দিবস প্রচারিত হওয়ার কারণে ছবিটিকে বিশেষ কৃতিত্ব দেওয়া হয়।

যুক্তরাজ্যের রয়্যাল ফটোগ্রাফিক সোসাইটির প্রোগ্রাম ডিরেক্টর মাইকেল প্রিচার্ড ছবিটিকে নিখুঁত দাবি করেন। তিনি বলেন, এই ছবিটি পৃথিবীর এমন একটি দৃষ্টিভঙ্গি প্রদান করেছিল, যা আগে কোনো ছবি করতে পারেনি। প্রকাণ্ড মহাবিশ্বে পৃথিবীর অস্তিত্ব কতটা ক্ষুদ্র গ্রহ, তা যেন চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেয় ছবিটি।

১৯৬০ সালের পরই পৃথিবী নিয়ে দৃষ্টিভঙ্গি বদলাতে শুরু করে। ষাটের দশকের শেষভাগে যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপের মানুষ অনুধাবন করে পৃথিবীকে আজীবন একইভাবে ব্যবহার করা যাবে না। গ্রহের প্রতি আমাদের আরও অনুরাগী হতে হবে। সেই উদ্দেশে ১৯৬৯, ‘৭০ ও ‘৭১ সালে ‘ফ্রেন্ডস অব দ্য আর্থ’, মার্কিন প্রতিষ্ঠান ‘এনভায়রনমেন্টাল প্রোটেকশন এজেন্সি’ এবং ‘গ্রিনপিস’ প্রতিষ্ঠা করা হয়। এই ছবিটি প্রকাশের ১৮ মাস পর ২০ মিলিয়ন মার্কিন নাগরিক পৃথিবী রক্ষার আন্দোলনে রাস্তায় নামে।

পৃথিবী রক্ষা করার জন্য মানুষদের উৎসাহিত করার বেলায় ছবিটি অনেক বেশি প্রভাব ফেলে। এখনো অবদি মহাকাশ থেকে পৃথিবীর পাঠানো ছবিগুলোর মধ্যে ১৯৬৮ সালে বড়দিনের আগে তোলা সেই ছবিটিকে শ্রেষ্ঠ বিবেচনা করা হয়।

;

মাঝরাতে আইসক্রিম, পিৎজা খাওয়া নিষিদ্ধ করল মিলান!



ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: স্কাই নিউজ

ছবি: স্কাই নিউজ

  • Font increase
  • Font Decrease

আইসক্রিম, পিৎজা অনেকের কাছেই ভীষণ পছন্দের খাবার। তবে ইউরোপসহ পশ্চিমা দেশগুলোতে মাঝরাতে এসব মুখরোচক খাবার ও পানীয় খাওয়ার প্রবণতা বেশি দেখা যায়। ইতালিতে জেলাটিনের তৈরি আইসক্রিম খুব বিখ্যাত। এজন্য ইতালিতে 'জেলাটো সংস্কৃতি' নামে একটা কালচার গড়ে উঠেছে। সম্প্রতি ইতালির মিলানের বাসিন্দাদের জন্য একটি নতুন আইন প্রস্তাব করা হয়েছে। প্রতিবেদন- স্কাই নিউজ।

মিলানে বসবাসকারীদের অধিকাংশই মাঝরাতে রাস্তায় ঘোরাঘুরি করে আইসক্রিম, পিৎজা, ফাষ্টফুড জাতীয় খাবার ও পানীয় পান করে থাকে। এতে করে সেখানকার এলাকাবাসীদের রাতের ঘুম বিঘ্নিত হয়। নতুন প্রস্তাবিত আইনে শহরবাসীর রাতের ঘুম নির্বিঘ্ন করতে মধ্যরাতের পর পিৎজা ও পানীয়সহ সব ধরনের টেকওয়ে খাবার নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

তবে মধ্যরাতের পর আইসক্রিম নিষিদ্ধ করার চেষ্টা এবারই প্রথম নয়। ২০১৩ সালে, তৎকালীন মেয়র গিউলিয়ানো পিসাপিয়া অনুরূপ ব্যবস্থা বাস্তবায়নের চেষ্টা করেছিলেন কিন্তু 'অকুপাই জেলাটো' আন্দোলনসহ তীব্র প্রতিক্রিয়ার পরে তিনি এ সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসেন।

এরপর আবারও মিলানে এ আইনটি প্রস্তাব করেছেন ডেপুটি মেয়র মার্কো গ্রানেল্লি। দেশটির ১২টি জেলা এই প্রস্তাবের আওতাভুক্ত হবে বলে জানিয়েছে মিলান কর্তৃপক্ষ। এ বিষয়ে মিলানের মেয়র গ্রানেল্লি বলেন, 'আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে সামাজিকতা ও বিনোদন এবং বাসিন্দাদের শান্তি ও প্রশান্তির মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখা।

প্রস্তাবটি নিম্নলিখিত এলাকাগুলোতে প্রযোজ্য হবে বলে জানিয়েছে মিলান কর্তৃপক্ষ: নোলো, লাজারেটো, মেলজো, ইসোলা, সারপি, ভায়া সিজারিয়ানো, আরকো ডেলা পেস, কোমো-গাইআউলেন্টি, পোর্টা গ্যারিবল্ডি, ব্রেরা, টিসিনিজ এবং দারসেনা-নাভিগলি।

জানা যায়, প্রস্তাবটি মে মাসের মাঝামাঝি থেকে কার্যকর থাকবে এবং নভেম্বর পর্যন্ত চলবে। এটি প্রতিদিন রাত ১২.৩০ টায় এবং সাপ্তাহিক ছুটির দিন এবং সরকারী ছুটির দিনে রাত ১.৩০ টা থেকে প্রয়োগ করা হবে। তবে এ প্রস্তাবের বিরুদ্ধে নাগরিকদের মে মাসের শুরু পর্যন্ত আপিল করার এবং আইন পরিবর্তনের পরামর্শ দেওয়ার সময় রয়েছে।

 

 

 

;

অস্ট্রেলিয়ায় নিখোঁজ কুকুর ফিরলো যুক্তরাজ্যের মালিকের কাছে



ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

অস্ট্রেলিয়ায় ঘুরতে এসে নিখোঁজ হয় যুক্তরাজ্যের এক দম্পতির পালিত কুকুর। যুক্তরাজ্যে আসার ১৭ দিন পর মিলো নামের কুকুরটিকে ফিরে পেয়েছেন জেসন হোয়াটনাল নিক রোল্যান্ডস দম্পতি।

হোয়াটনাল এবং তার সঙ্গী নিক সম্প্রতি তাদের কুকুর মিলোকে নিয়ে অস্ট্রেলিয়ার ভিক্টোরিয়া পরিদর্শনে যান। তারা যখন সোয়ানসিতে বাড়িতে যাচ্ছিলেন তখন মেলবোর্ন বিমানবন্দরে তার হ্যান্ডলার থেকে কুকুরটি পালিয়ে যায়।

সাড়ে পাঁচ বছর বয়সী কুকুরটিকে অবশেষে মেলবোর্নের শহরতলিতে ১৭ দিন পর খুঁজে পাওয়া যায়।


হোয়াটনাল স্কাই নিউজকে বলেন, ‘মিলোকে ফিরে পাওয়াটা খুবই আশ্চর্যজনক ছিল আমার জন্য। যখন আমি আমার প্রিয় মিলোর (কুকুর) সাথে পুনরায় মিলিত হয়েছিলাম, তখন আমি কান্নায় ভেঙে পড়েছিলাম। আমার কান্না দেখে অন্যরাও কেঁদেছিল। এটি সত্যিই আবেগপ্রবণ ছিল।

তিনি আরও বলেন, বিশ্বের অন্য প্রান্তে থেকে মিলোর কথা চিন্তা করে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছিলাম। আমরা জানতাম না মিলো কোথায় আছে। এটি বেশ হতাশাজনক ছিল আমাদের জন্য, কিছুটা আশা হারিয়ে ফেলেছিলাম। তাকে ফিরে পাবো ভাবিনি।

মিলোকে পাওয়ার জন্য সামাজিক মাধ্যমে জানিয়েছিলাম, তখন স্বেচ্ছাসেবকদের কাছ থেকে সাহায্য আসে, তারা মিলোর সন্ধান দেয়। মিলোকে আমাদের কাছে ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য তাদের ধন্যবাদ।

;

আমার হাতের পাখা যেন তাদের আরাম দিচ্ছে!



মৃত্যুঞ্জয় রায়, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, সাতক্ষীরা
ছবি: বার্তা২৪, তালপাতার পাখা বিক্রি করছে পাঁচ বছরের শিশু মাহমুদুল্লাহ

ছবি: বার্তা২৪, তালপাতার পাখা বিক্রি করছে পাঁচ বছরের শিশু মাহমুদুল্লাহ

  • Font increase
  • Font Decrease

আবু বক্কর (৬২)। বয়সের ভারে অসুস্থ হয়ে তিনি এখন পাকা বিক্রেতা। প্রচণ্ড তাপদাহে মানুষ যখন ঠান্ডা বাতাসের প্রশান্তি খুঁজছে, তখন তিনি গ্রামে গ্রামে গিয়ে তালপাতার পাখা বিক্রি করছেন।

আবু বক্কর বার্তা২৪.কমকে বলেন, স্ত্রীসহ ছয় মেয়ে নিয়ে আমার সংসার। তবে মেয়েদের বিয়ে দিতে পেরেছি। কিন্তু বয়সের ভারে ঠিকই আমরা একা থেকে গেলাম। শেষ বয়সে গ্রামে গ্রামে তালপাতা পাখা বিক্রি করে সংসার চালাচ্ছি। শুধু সংসার না, এই টাকায় আমার পায়ের শিরার ব্যথার ওষুধও কিনতে হয়। একবেলা ওষুধ না খেলে চলতে পারি না।

এদিকে, পুরনো ব্যবসার ঋণের বোঝা আর অন্যদিকে অসুস্থ হয়ে ওষুধসহ সংসারের খরচ। শেষ বয়সে তালপাতার পাখাই আমার একমাত্র জীবনসঙ্গী বলেন আবু বক্কর।

তালপাতার পাখা বিক্রি করছেন আবু বক্কর, ছবি- বার্তা২৪.কম

বুধবার (২৪ এপ্রিল) সাতক্ষীরা জেলার তালা উপজেলার কলাগাছি গ্রামের কবিগানের অনুষ্ঠানে সরেজমিন দেখা যায়, একপাশে তালপাতার পাখা বিক্রি করতে ব্যস্ত ছোট্ট পাঁচ বছরের শিশু মাহমুদুল্লাহ। এই গরমে যখন তার ঘরে থাকার কথা, তখন সে নানা-নানীর সঙ্গে এসে তালপাতার পাখা বিক্রি করছে। কবিগানে বসে থাকা সব শ্রোতার কাছে গিয়ে বলছে, পাখা লাগবে, পাখা! কথা বলতে চাইলেও এ পাশ ওপাশ দিয়ে চলে যাচ্ছে, ক্রেতার কাছে।

এক ফাঁকে তাকে কাছে পেয়ে জিজ্ঞাসা করা হয়, এই বয়সে পাখা বিক্রি করছো কেন! এ প্রশ্নের উত্তরে বার্তা২৪.কমকে মাহমুদুল্লাহ বলে, প্রচণ্ড গরমে স্কুল ছুটি। তাই, নানা-নানীর সঙ্গে চলে এসেছি মেলায় পাখা বিক্রি করতে। মানুষজন আমার কাছ থেকে যেন বেশি পাখা কেনে (ক্রয়), তাই আমি মেলায় তাদের সঙ্গে এসেছি।

অনেক উৎসাহের সঙ্গে সে বলে, গরমে আমার হাতের পাখায় যেন তাদের আরাম দিচ্ছে! মেলা হলে আমি সেখানে চলে যাই পাখা বিক্রি করতে। ঘোরাঘুরিও হয় আর টাকা ইনকামও হয়। টাকার জন্য বের হয়ে পড়েছি। আমরা পাখা বিক্রি করে পেট চালাই। নানা-নানী বুড়ো হয়ে গেছে। তাই, আমি সঙ্গে এসে তাদের কষ্টটাকে একটু ভাগাভাগি করে নিচ্ছি।

যেখানে প্রচণ্ড তাপে মানুষজন নাজেহাল, সেখানে ছোট্ট মাহমুদুল্লাহ ছুটে চলেছে এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে পাখা বিক্রি করতে। ছোট্ট শিশু হলেও গরম যেন তার কাছে কিছু না, পেটের তাগিদে!

আরেক পাখা বিক্রেতা তালা উপজেলার হরিণখোলা গ্রামের বাসিন্দা ভদ্রকান্ত সরকার (৭০)। ১২-১৪ বছর ধরে এই পেশায় আছেন তিনি।

চলছে তালপাতার পাখার বিকিকিনি, ছবি- বার্তা২৪.কম

শেষ বয়সে পাখা কেন বিক্রি করছেন এমন প্রশ্নের উত্তরে বার্তা২৪.কমকে ভদ্রকান্ত বলেন, চাল কিনে খেতে হয়। খুব কষ্টের সংসার! ছেলে-মেয়ে আছে। তারা তাদের মতো কাজ করে খায়। মা বাবার বয়স হয়ে গেলে ছেলে আর আমাদের থাকে না। আমরা বৃদ্ধ বয়সে কেমন আছি, সেটা জানার সুযোগ তাদের থাকে না। শেষজীবনটা এভাবে পাখা বিক্রি করে কাটিয়ে দেবো। কী আর করবো! কপালে যা আছে, শেষপর্যন্ত তাই হবে। কপালে ছিল, এমন বৃদ্ধ বয়সে গ্রামে গ্রামে পাখা বিক্রি করতে হবে!

;