মানসিক চাপ কমাতে এসেনশিয়াল অয়েল

  • ফাওজিয়া ফারহাত অনীকা, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, লাইফস্টাইল
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

বিভিন্ন ধরনের এসেনশিয়াল অয়েল

বিভিন্ন ধরনের এসেনশিয়াল অয়েল

প্রেজেন্টেশন দেওয়ার আগ মুহূর্তে অনেকেই খুব নার্ভাস হয়ে পড়েন।

মানসিক চাপ ও দুশ্চিন্তার ফলে গড়মিল দেখা দেয় কাজেও। অনেকে আবার অফিস মিটিং এর মতো সাধারণ বিষয় নিয়েও খুব বেশি মানসিক চাপের মুখে থাকেন। পড়ালেখা কিংবা কর্মক্ষেত্রজনিত কারণেই কিন্তু মানসিক চাপ বা দুশ্চিন্তা তৈরি হয় না। এর পেছনে হাজারো কারণ থাকতে পারে। কিন্তু কখনো কি মনে হয়েছে, এসেনশিয়াল অয়েল মানসিক দুশ্চিন্তা কমাতে কার্যকর একটি উপাদান হতে পারে! একদম ভিন্ন এই বিষয়টি আপনার জীবনকে সহজ করে তুলতে সাহায্য করবে বিধায়, চোখ বুলিয়ে নিন পুরো লেখাটিতে।

কী এই এসেনশিয়াল অয়েল?

বিভিন্ন ধরনের ভেষজ উদ্ভিদের নানান অংশ থেকে কনসেন্ট্রেটেড এক্সট্র্যাক্ট বা নির্যাস নিয়ে তৈরি করা হয় এসেনশিয়াল অয়েল। এই সকল এসেনশিয়াল অয়েলে থাকে বায়োএকটিভ উপাদান, যাকে বলা হয়ে থাকে উপশমকারী উপাদান।

বিজ্ঞাপন

প্রশান্তির জন্য এসেনশিয়াল অয়েলের ঘ্রাণ নেওয়া যায় বা ত্বকের উপরে তার প্রলেপ ব্যবহার করা যায়। এতে করে আরামদায়ক ও প্রশান্তিদায়ক অনুভূতি কাজ করে। গবেষণা জানাচ্ছে, ছোট একটি ক্যাপস্যুলের পরিমাণ এসেনশিয়াল অয়েলের ব্যবহারও কার্যকারিতার জন্য যথেষ্ট।

কীভাবে কাজ করে এসেনশিয়াল অয়েল?

ত্বকের উপর প্রলেপ দেওয়া হলে বা ঘ্রাণের সাথে গ্রহণ করা হলে এসেনশিয়াল অয়েলের সুঘ্রাণ আমাদের অনুভূতিকে ত্বরান্বিত করে। নাকের সাহায্যে এসেনশিয়াল অয়েলের আরামদায়ক ঘ্রাণ গ্রহণের মাধ্যমে অলফ্যাক্টরি রিসেপ্টর (Olfactory Receptors) কার্যকরি হয়ে ওঠে। ঘ্রাণের মাধ্যমে আমাদের মস্তিষ্ক ভালো ও খারাপবোধের মধ্যে খুব দ্রুত পার্থক্য করতে পারে এবং এক একটি ভিন্ন ভিন্ন ঘ্রাণের জন্য এক এক ধরনের অনুভূতি কাজ করে।

বিজ্ঞাপন

এ কারণেই ল্যাভেন্ডার অয়েলের ঘ্রাণে অলসতাভাব কেটে যায় এবং রোজমেরি অয়েলের ঘ্রাণে বৃদ্ধি পায় সতর্কতাবোধ। অন্যদিকে জেসমিন অয়েলে দেখা দেয় ফ্রেশনেস। বিভিন্ন এসেনশিয়াল অয়েলের এই সুবিধা গ্রহণের মাধ্যমেই মূলত মানসিক চাপ ও দুশ্চিন্তাকে কমানো ও দূর করা সম্ভব হয়।

কোন এসেনশিয়াল অয়েল ব্যবহার করতে হবে?

প্রায় প্রতিটি এসেনশিয়াল অয়েলেরই রয়েছে নিজস্ব কিছু উপকারিতা ও ব্যবহার। তবে মানসিক চাপ কমানোর ক্ষেত্রে যে তিনটি এসেনশিয়াল অয়েলের ব্যবহারে সবচেয়ে ভালো ফলাফল দেখা দেবে তার নাম জানানো হলো।

ক্যামোমিল অয়েল

ক্যামোমিল অয়েল

ক্যামোমিল ফুল ও এই গাছের বিভিন্ন অংশ থেকে তৈরি হয় ক্যামোমিল এসেনশিয়াল অয়েল। এই এসেনশিয়াল অয়েলে রয়েছে টারপিনোয়েডস, আলফা-বাইসাবোলল, বাইসাবোলল অক্সাইড, ২-মিথাইলবাইটল অ্যাঞ্জেল্যাট ও অন্যান্য। এই সকল উপাদান একত্রে দারুণ সুগন্ধ তৈরি করে। যা তাৎক্ষণিকভাবে মনকে শান্ত করে।

রোজ এসেনশিয়াল অয়েল

রোজ অয়েল

বিভিন্ন প্রজাতির গোলাপ ফুলের পাপড়ির নির্যাস থেকে তৈরি করা হয় রোজ এসেনশিয়াল অয়েল। এই এসেনশিয়াল অয়েলের ফাইটোকেমিক্যাল কম্পোজিশনের জন্য, এই এসেনশিয়াল অয়েল ব্যবহারে শরীর ও মনে প্রশান্তি চলে আসে। রোজ এসেনশিয়াল অয়েল দ্রুত হৃদস্পন্দন, রক্তচাপ, দ্রুত নিঃশ্বাস-প্রশ্বাসের হার কমিয়ে মনকে শান্ত করে। বিশেষত রোজ এসেনশিয়াল অয়েলের ম্যাসাজ সবচেয়ে ভালো কাজ করে প্রশান্তি তৈরিতে।

ল্যাভেন্ডার এসেনশিয়াল অয়েল

ল্যাভেন্ডার অয়েল

ল্যাভেন্ডার থেকে তৈরি ল্যাভেন্ডার অয়েলে রয়েছে অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল, অ্যান্টি-ফাংগাল, অ্যানক্সিওলাইটিক, অ্যান্টি-ডিপ্রেসেন্ট, অ্যানালজেস্টিক ও কারমিনেটিভ প্রভাব। যা সামগ্রিকভাবে স্বাস্থ্যে জন্য যতটা উপকারী, ততটাই মানসিক সুস্বাস্থ্যের জন্যেও! বেশ কিছু ক্লিনিক্যাল তথ্য থেকে দেখা গেছে, বিভিন্ন দেশের ঐতিহ্যবাহী ওষুধ তৈরিতে ব্যবহার করা হয় ল্যাভেন্ডার অয়েল।

আরও পড়ুন: যোগব্যায়ামের সাথে শারীরিক ও মানসিক সুস্থতা

আরও পড়ুন: ব্যস্ততার মাঝে একটু প্রশান্তি