মেয়াদোত্তীর্ণ ইঞ্জিনে চলছে রেল

  • তৌফিকুল ইসলাম, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম, ঢাকা
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ট্রেন, ছবি: বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম

ট্রেন, ছবি: বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম

বাংলাদেশের প্রাচীন যোগাযোগ মাধ্যম হলো রেল। রেলগাড়ি অর্থাৎ ট্রেন চালানোর জন্য ইঞ্জিন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ইঞ্জিনের ওপর নির্ভর করে ট্রেনের গতি।

সাধারণত একটি ইঞ্জিনের লাইফ টাইম থাকে ২০ বছর। কিন্তু ব্রিটিশ আমলে কেনা ইঞ্জিনগুলোর বেশিরভাগই হয়ে গেছে মেয়াদোত্তীর্ণ। ইঞ্জিন সংকটের কারণে বাংলাদেশ রেলওয়ে মেয়াদোত্তীর্ণ ইঞ্জিন দিয়েই ট্রেন সেবা দিয়ে যাচ্ছে।

বিজ্ঞাপন

রেল সূত্রে জানা যায়, বাংলাদেশ রেলওয়েতে ১৭৮টি মিটারগেজ এবং ৯০টি ব্রডগেজ মিলে মোট ২৬৮টি ইঞ্জিন বা লোকোমোটিভ রয়েছে। এসব ইঞ্জিন দিয়েই বিভিন্ন রুটের ট্রেন পরিচালনা করা হচ্ছে। ১৬২১টি কোচ বর্তমানে রেলের সংগ্রহে রয়েছে। এর মধ্যে মিটারগেজ যাত্রীবাহী কোচ আছে ১১৪৫টি এবং ব্রডগেজ যাত্রীবাহী কোচ আছে ৪৭৬টি।

a

রেলের লোকোমোটিভ মিটারগেজ সংগ্রহ শাখা সূত্রে জানা যায়, রেলের কেনা পুরনো ১৭৮টি মিটারগেজ ইঞ্জিন আছে। কিন্তু এর মধ্যে ১৩৯টিরই মেয়াদউত্তীর্ণ হয়ে গেছে। এসব ইঞ্জিনের লাইফটাইম ছিল ২০ বছর করে। অর্থাৎ ৩৯টি ইঞ্জিন সচল অবস্থায় আছে। বাকিগুলো মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়ায় চলাচলের অনুপযোগী।

বিজ্ঞাপন

এদিকে রেলওয়ে লোকোমোটিভ ব্রডগেজ সংগ্রহ শাখা থেকে জানা যায়, রেলের পশ্চিমাঞ্চলে চলাচলকারী ৯০টি ব্রডগেজ ইঞ্জিনের মধ্যে ৫১টি ইঞ্জিনের মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে। আর ৩৯টি ব্রডগেজ ইঞ্জিনের মেয়াদ এখনো শেষ হয়নি।

রেলের প্রকল্প সূত্রে জানা যায়, দীর্ঘদিন আগে কেনা ইঞ্জিনের বেশিরভাগেরই লাইফটাইম শেষ। মেয়াদোত্তীর্ণ ইঞ্জিন রেলের বহর থেকে বাদ দিতে নতুন ইঞ্জিন কেনার প্রকল্পের কাজ চলছে। তিনটি প্রকল্পের আওতায় ১০০টি মিটারগেজ ইঞ্জিন বা লোকোমোটিভ আসবে। এছাড়া আলাদা আরেকটি প্রকল্পে ৪০টি ব্রডগেজ ইঞ্জিন বা লোকোমোটিভ আনা হবে। বিভিন্ন ধাপে ২০২০-২২ সাল নাগাদ এসব নতুন ইঞ্জিন দেশে আসার কথা রয়েছে।

a

কমলাপুর রেলস্টেশনের স্টেশন ম্যানেজার মোহাম্মদ আমিনুল হক বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে বলেন, 'মেয়াদোত্তীর্ণ ইঞ্জিনের কারণে ট্রেন কিছুটা ধীরে চলে। ফলে স্টেশনগুলোতে আধা ঘণ্টা থেকে এক ঘণ্টা দেরিতে পৌঁছায়। আগের থেকে এখন রেল সেবার মান বেড়েছে। সেবার মান আরো বাড়াতে হলে নতুন ইঞ্জিন এনে মেয়াদোত্তীর্ণ ইঞ্জিনগুলো দ্রুত বাদ দিতে হবে।'

বাংলাদেশ রেলওয়ের যুগ্ম-মহাপরিচালক (অপারেশন) মোছা. রশিদা সুলতানা গনি বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে বলেন, 'বর্তমানে রেল সেবাকে উন্নত করতে নতুন নতুন আধুনিক ট্রেন আনা হয়েছে। বিভিন্ন রুটে পরিচালনা করা হচ্ছে আধুনিক এসব ট্রেন। তবে রেল ইঞ্জিনের কিছুটা সংকট রয়েছে। এ সংকট থাকবে না। ভারত থেকে চুক্তির ভিত্তিতে ১০টি মিটারগেজ এবং ১০টি ব্রডগেজ ইঞ্জিন ভাড়া আনতে কথাবার্তা চলছে। এসব ইঞ্জিন আনা হলে সংকট কিছুটা কাটবে। এছাড়া আমাদের ইঞ্জিন কেনার প্রকল্প চলমান রয়েছে।’